পশ্চিমবঙ্গে অস্ত্র বানিয়ে বাংলাদেশে মজুদ গড়ার পরিকল্পনা জেএমবির

 

স্টাফ রিপোর্টার: সন্ত্রাসী বোমারু মিজানের খোঁজ পেতে কলকাতায় গ্রেফতার হওয়া ফারুখ ওরফে আনওয়ার হোসেনকে জেরা করেছেন বাংলাদেশের ৱ্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (ৱ্যাব)-৪-এর কর্মকর্তারা। দফায় দফায় তাকে শনি ও রোববার জেরা করে আরো জানার চেষ্টা চলে বাংলাদেশে নতুন করে কোনো হামলার পরিকল্পনা করেছে কি-না এবং জেএমবি কোথায় অস্ত্রভাণ্ডার গড়ছে। পাশাপাশি ৱ্যাব কর্মকর্তারা ফারুখকে যাতে বাংলাদেশে ফেরত নেয়া যায় সেই চেষ্টা চালাচ্ছেন।

গত শনিবার কলকাতায় আসার পর ভারতের সর্বোচ্চ গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ’র দফতরে ফারুখকে টানা দু ঘণ্টা জেরা করে ৱ্যাব। তারপর দুপুর এবং বিকেলে আরও দুইবার। রোববারও বেশ কয়েক দফা তাকে জেরা করা হয়। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, কলকাতার মেটিয়াবুরুজে নতুন ঘাঁটি গেড়ে অস্ত্র কারখানা গড়ার পরিকল্পনা করেছিলো জেএমবি। এই কাজে তাদের সঙ্গী হয়েছে স্থানীয় কিছু যুবক। আরও জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গে অস্ত্র তৈরি করে বাংলাদেশে পাচার করে হামলার জন্য মজুদের পরিকল্পনা করেছে জেএমবি। ২ বছর আগে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে খাগড়াগড় বিস্ফোরণকাণ্ডের আগে পর্যন্ত জেএমবির পরিকল্পনা ছিলো পশ্চিমবঙ্গে অস্ত্র, গ্রেনেড তৈরি করে বাংলাদেশে গিয়ে হামলা চালানো। কিন্তু বাংলাদেশ এবং ভারত দু দেশেই একের পর এক এই জঙ্গি ও তাদের নেতারা ধরা পড়তে থাকায় কৌশল বদলাচ্ছে তারা। আপাতত নতুন কৌশল হলো সময় ও সুযোগ বুঝে অল্প অল্প করে অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় জড়ো করে মজুদ গড়ে তোলা। তারপর পরিস্থিতি বুঝে হামলা চালানো। যেমনটা হয়েছিলো গুলশানের হলি আর্টিজানে। কিন্তু বাংলাদেশের কোথায় অস্ত্রভাণ্ডার গড়ছে এ ব্যাপারে মুখ খুলছে না জঙ্গি ফারুখ।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা থেকে ধরা হয় আনওয়ারসহ ৬ জেএমবি জঙ্গিকে। তারপর থেকে তাদের দফায় দফায় জেরা করেছে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স এবং ভারতের এনআইএ। জেরায় জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গের খাগড়াগড়কাণ্ডে মোস্ট ওয়ান্টেডরা গুলশান হামলাতেও যুক্ত ছিল। আসামের বরাক উপত্যকার করিমগঞ্জ, কাছাড় ও হাইলাকান্দি, পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের জেলা কোচবিহার, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনায় নতুন ঘাঁটি গেড়েছিল জঙ্গিরা। ওইসব ডেরায় নতুন করে জঙ্গি প্রশিক্ষণ এবং ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) তৈরির কাজও শুরু হয়েছিল।

জানা গেছে, কলকাতার মেটিয়াবুরুজ ও নাদিয়ালে জেএমবি ট্রানজিট ক্যাম্প করেছিলো। এই দুই জায়গায় নিয়মিত যাতায়াত ছিলো বোমারু মিজানেরও। এই এলাকার বেশকিছু যুবক নব্য জেএমবির হয়ে কাজ করছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, এখনো অধরা রয়েছে বিপজ্জনক জঙ্গি বোমারু মিজানসহ আরও ৬ জন। তাদেরকে ধরা গেলেই খাগড়াগড় থেকে গুলশানের জঙ্গি হামলা কোন সূত্রে বাঁধা রয়েছে তা অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে যাবে।