চুয়াডাঙ্গায় তরণ ফেস্টুনসহ রাতের টুনি বাল্প দিচ্ছে বাড়তি আমেজ

 

 

প্রস্তুতি সম্পন্ন : আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিল আগামীকাল

স্টাফ রিপোর্টার: প্রস্তুতি চূড়ান্ত। আগামীকাল শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে আওয়ামী লীগের দুইদিনব্যাপী ২০তম কাউন্সিল। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সম্মেলনে যোগদিতে আজ  রাত ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা থেকে কমপক্ষে ৮টি বাস ডাকার উদ্দেশে ছাড়বে। ৮টি বাসের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে কবরী রোড থেকে ছাড়বে ৪টি বাস। দলীয় সূত্র এরকমই তথ্য দিয়েছে।অপরদিকে আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিল উপলক্ষে পক্ষকাল ধরেই চুয়াডাঙ্গায় রয়েছে সাজ সাজ রব।

চুয়াডাঙ্গার শহীদ আবুল কাশেম সড়কসহ প্রধান প্রধান সড়কে নির্মাণ করা হয়েছে তোরণ। সম্মেলন উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে একশরও বেশী ফেস্টুন ঝোলানো হয়ছে জেলা শহরের দর্শনীয় স্থানে। সড়কের ডিভাইডারে সন্ধার পর আলোকসজ্জ্বা চুয়াডাঙ্গা শহরবাসীর মধ্যে ছড়িয়েছে উৎসবের আমেজ। জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খুস্তার জামিল বলেছেন, আওয়ামী লীগের সম্মেলন উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গার সাজসজ্জা কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ যুগিয়েছে। তিনি ২০তম সম্মেলন সফল করার লক্ষে সকলকে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছেন।

অপরদিকে ঢাকা অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার  সারাদেশের তৃণমূল থেকে কাউন্সিলর, ডেলিগেটসহ নেতাকর্মী ও সমর্থকরা রাজধানীর উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন। আজকালের মধ্যে চলে আসবেন বিশ্বের ১১টি দেশের ৫৫ জন আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারা বলছেন একটি জাঁকজমকপূর্ণ ও সফল সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত দলটির কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে দেখা গেছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার আদলে তৈরি বিশাল মঞ্চের নির্মাণ কাজ গতকালই সম্পন্ন হয়েছে। একই সাথে প্রায় ২৫ হাজার নেতাকর্মী ধারণক্ষমতা সম্পন্ন বিশাল প্যান্ডেল নির্মাণের কাজও সম্পন্ন।
আজ দিনভর সম্মেলনস্থল পরিদর্শন করতে আসেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়, মহানগরসহ সারা দেশের জেলা, উপজেলার নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সম্মেলনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা। দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় সাংবাদিকদের তিনি জানান, সম্মেলনের প্রস্তুতি শতভাগ চূড়ান্ত হয়েছে। একটি সফল সম্মেলনের আশা করছেন তারা। এদিকে দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন সংলগ্ন (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ভবনের দ্বিতীয় তলার সম্মেলন কক্ষে বৈঠকে বসেন আওয়ামী লীগের সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত খাদ্য উপ-কমিটির নেতৃবৃন্দ। কমিটির সভাপতি ও ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এ সময় জানান, ২২শে অক্টোবর (আগামীকাল) সম্মেলনের প্রথমদিনে সম্মেলনে আগত ৩৫ হাজার নেতাকর্মী ও অতিথিদের জন্য বেলা ১টায় খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। একই দিন রাতে সাড়ে সাত হাজার এবং সম্মেলনের শেষদিন ২৩ অক্টোবর আরও ৮ হাজার লোকের খাবারের আয়োজন থাকবে। এ সময় সাংবাদিকদের জানানো হয়, সম্মেলনের প্রথমদিনে  ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের জন্য ৩ হাজার, যুবলীগের নেতাকর্মীদের জন্য ৩ হাজার একইভাবে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২ হাজার, যুব মহিলা লীগের ১ হাজার, শ্রমিক লীগের জন্য ৫শ’ এবং কৃষক লীগের ৩শ’ নেতাকর্মীদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা থাকবে। ২৩শে অক্টোবর শেষদিনে শুধু কাউন্সিলরদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা থাকবে বলে জানান খাদ্য উপ-কমিটির নেতৃবৃন্দ। মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনকে কেন্দ্র করে শুধু রাজধানীতেই নয়, সারাদেশে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। এটি একটি ঐতিহাসিক মিলনমেলায় পরিণত হবে। সম্মেলনে নেতাকর্মীদের খাবারের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে এ বিষয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। খাদ্য উপ-কমিটির সদস্য সচিব ও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, যারা রাজধানীর বাইরের অতিথি তাদের অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে আপ্যায়ন করতে হবে। এটি আমাদের গুরু দায়িত্ব। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের (উত্তর) সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।
এদিকে আওয়ামী লীগের সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত অভ্যর্থনা উপকমিটির নেতৃবৃন্দ জানান, ভারত, নেপাল, চীন, শ্রীলঙ্কা, রাশিয়া, যুক্তরাজ্যসহ ১১টি দেশের ৫৫  বিদেশি আমন্ত্রিত অতিথি আওয়ামী লীগের এবারের সম্মেলনে আসছেন। আমন্ত্রিতদের অনেকেই ইতোমধ্যে রাজধানীতে চলে এসেছেন বলে জানান কমিটির সদস্য সচিব ও আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ডা. দিপু মনি। আজ বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ১১টি দেশের ৫৫ জন অতিথি আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আমন্ত্রিত হয়ে আসছেন। তাদের বেশকজন ইতোমধ্যে চলেও এসেছেন। একই সংবাদ ব্রিফিংয়ে অভ্যর্থনা উপকমিটির আহ্বায়ক ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আওয়ামী লীগের এবারের সম্মেলনে আমরা বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তারা এসে বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ দেখবেন। এতে আমরা গৌরবান্বিতবোধ করছি। তিনি বলেন, এই সম্মেলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন কমিটি গঠিত হবে। এই কমিটি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিবে এবং সেই নির্বাচনে আমরা অবশ্যই অশুভ শক্তিকে পরাজিত করবো। দলের ২০তম সম্মেলন সফল করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।