আলমডাঙ্গার জামজামি এলাকার দুই বাড়িতে ডাকাতি ও সড়কে ছিনতাই

jhenaidah-clash-photo-20-10-2016-2

অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দীর্ঘ সময় ধরে ডাকাতদলের তাণ্ডব : সড়কে ছিনতাইয়ে শেষে বোমা বিস্ফোরণ

জামজামি প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গার ঘোষবিলা ও জামজামির জিকে খালপাড়ের বাড়িসহ সড়কের যমুনায় একই রাতে ডাকাতচক্র তাণ্ডব চালিয়েছে। মধ্যরাতে ডাকাতরা বাড়িতে ঢুকে গৃহকর্তাদের ঘুম থেকে ডেকে বাইরে বের করে। পানি চেয়ে এক গৃহকর্তাকে অস্ত্রেরমুখে একই ঘরে আটকে ও অপর গৃহকর্তাকে পিঠমোড়া করে বেঁধে অস্ত্রাঘাতে জখম করে। পরে রুপো-সোনার গয়নাগাটিসহ নগদ টাকা, মোবাইলফোনসহ অন্যান্য মালামাল লুট করে। পরে যমুনা সড়কে বাইসাইকেল আরোহী ঘোষবিলার দিনমজুরকে আটকে স্বর্বস্ব হাতিয়ে নিয়ে তাকে বেদম মারপিট শেষে গাছে বেঁধে রেখে সটকে পড়ে। যাওয়ার সময় একটি ফাঁকা বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে যায় তারা। এলাকা জুড়ে ছড়িয়েছে ব্যাপক আতঙ্ক।। আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গার ঘোষবিলা গ্রামের মৃত সবেদ মণ্ডলের ছেলে খবির উদ্দিন (৫৫) জিকে খালপাড়ের বাড়িতে বসবাস করেন। গতপরশু বুধবার দিনগত রাত আনুমানিক পোনে ১টার দিকে ৮/১০ জনের একদল ডাকাত হানা দেয়। গৃহকর্তা জানান মধ্যরাতে বাড়িতে ঢুকে পানি পান করার কথাবলে পরিবার স্বজনদের ঘুমথেকে ডেকে তোলে ডাকাতরা। এ সময় তিনি সস্ত্রীক বের হলে ডাকাতচক্রের সদস্যরা ধারালো রামদা গলায় ধরে যা কিছু আছে তাদের হাতে তুলে দিতে বলে। গড়িমশি করলে ডাকাতদলের সদস্যরা  ধারালো অস্ত্র উচিয়ে ভয়ভীতি দেখায়। অস্ত্রের মুখে সবাইকে এক কামরায় নিয়ে বন্দি করে। অপর কামরায় ঢুকে বাক্সের হ্যাজবোল্ড দুমড়ে তালা ভেঙে সোনার দুটি চেন ২টি আঙটি, ৫টি নাকফুল, রুপার ৩ জোড়া পায়ের তোড়া, কনের বিয়ে বাবদ জমিয়ে রাখা নগদ ৮৩ হাজার টাকা ও কাপড়চোপড় ডাকাতি করে। ডাকাতদল নির্বেগ্নে প্রস্থানের সময় তাদের হাতে থাকা ব্যাগ দেখিয়ে বলে চুপ করে থাকবি কোনো চিৎকার করলে বোমা মেরে উড়িয়ে দেবো! যদিও হুমকিতে থেমে থাকেননি ডাকাতির শিকার পরিবারের সদস্যরা। ডাকাতদল বাড়ি থেকে বের হতেই চিৎকার করে। প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। একই রাতে আনুমানিক ২টার দিকে জামজামির খালপাড়ের বাড়িতে ঢুকে মৃত খেদ আলী মণ্ডলের ছেলে মৎস্যজীবী ডাবলুকে একই কায়দায় ঘুম থেকে জাগিয়ে পানি খেতে চায়।

গৃহকর্তা ডাকাতচক্রের বর্ণনা দিতে গিয়ে জানান, কালো কাপড়ে মুখঢাকা- হাফপ্যান্ট ও কালো সান্ডোগেঞ্জি পরা দেখে তিনি কৌতুহলবশত তাদারে পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে তারা বলে খালের পানিতে তারা আলোকাঁটায় মাছ ধরছে। তিনি স্ত্রী নারগীসকে পানি দিতে বলেন। তাৎক্ষণিক ধারালো অস্ত্র গলায় ধরে পাশের ঘরে টেনেহেঁচড়ে নিয়ে যায়। ছেড়ে পালাবার চেষ্টা করলে বাম পায়ের হাঁটুর ওপরে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। ৪ হাত-পা একত্রে বেঁধে ফেলে রাখে। নারগিসের গলা থেকে রুপার চেন ও বাক্সে রাখা নগদ ৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায় ডাকাতদল। পরে পরিবারের চিৎকারে ছুটে আসে গ্রামবাসী।

অপরদিকে, একই রাতে আলমডাঙ্গা জামজামি বাজার সড়কে মধ্যবর্তী যমুনায় আলমডাঙ্গা অভিমুখী বাইসাইকেল আরোহী ঘোষবিলা গ্রামের বিশারত আলীর ছেলে চুয়াডাঙ্গা পিটিআই এলাকার দিনমজুর ওল্টু আলীর ( ৩৬) গতিরোধ করে। বাইসাইকেল থেকে টেনে নামিয়ে কাছে থাকা মোবাইলফোন ও চার্জার টর্চ লাইট ছিনতাই করে। পকেটে টাকা না পেয়ে বেদম মারপিট শেষে যমুনায় জিকে সেচখালের ব্রিজ পার করে অপর পাড়ের নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখে। কোনো রকমে মুক্ত হয়ে পালালে পেছন থেকে বোমা নিক্ষেপ করে ডাকাতদল সরে পড়ে। বোমাটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) মেহেদি রাসেল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ওসি (তদন্ত) মেহেদি রাসেল জানান, ডাকাতদল রাতে হানা দিয়েছে এটা নিশ্চিত। তবে গৃহকর্তা খবির উদ্দিন যে দাবি করেছেন বড় বাক্সের হ্যাজবোল্ড তালা ভেঙে লুট ঘটনা রহস্যবৃত। ছোট্র তালা রহস্য! খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

 

Leave a comment