মেহেরপুরের চাষিদের বেগুনে গুন দিচ্ছে

 

মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুরের বেগুনে গুন প্রকাশ পেয়েছে। বেগুন চাষির মুখের হাসি বেগুনের গুনের বর্হিপ্রকাশ ঘটে চলেছে। এবছর মেহেরপুরের মাঠে বেগুনের আবাদ ভালো হয়েছে। এছাড়া জেলার বাইরে চাহিদা থাকায় ও ভালো দাম পাওয়ায় বেগুন চাষির মুখে হাসি ফুটেছে। বেগুন বিক্রির টাকায় এবার হবে চাষিদের গাড়ি-বাড়ি।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের হিসেব মতে এবছর জেলায় প্রায় সাড়ে ৩০০ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়েছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের ভাষ্য মতে অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এবছর মেহেরপুর সদর উপজেলার রাজাপুর, রাধাকান্তপুর, বারাকপুর, শালিকা, উজুলপুর, উত্তর শালিকা, শ্যামপুর, বন্দর ও চকশ্যামনগর, মুজিবনগর উপজেলার মোনাখানা, শিবপুর ও বিশ্বনাথপুর এবং গাংনী উপজেলার ধলা, সাহারবাটি ও কাথুলীসহ বিভিন্ন গ্রামের মাঠে পর্যাপ্ত পরিমাণ বেগুন চাষ হয়েছে। গাছে বেগুনের ফলন দেখা যাচ্ছে পর্যাপ্ত। এতে বেগুন চাষিদের পাশাপাশি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগও খুশি। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা ক্ষেতে ক্ষতিকর বিষের ব্যবহার না করে ফেরেমোন ফাঁদ পেতে পোকা মারার জন্য বেগুন চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছেন।

মেহেরপুর গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের মহিবুর জানান, এবছর আষাঢ় মাসের শেষের দিকে তিনি ৩ বিঘা জমিতে স্থানীয় জাতের বেগুন চাষ করেছেন। চাষ, সার-বীজ ও লেবার খরচ বাবদ ইতোমধ্যে প্রতিবিঘা জমিতে তার ২০ হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে। তবে বেগুন উঠতে শুরু করার পর তিনি প্রতিবিঘা জমি থেকে গড়ে ৫০ হাজার টাকা করে প্রায় দেড় লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করেছেন। গাছ মরার আগ পর্যন্ত তিনি প্রতি বিঘা জমি থেকে আরো ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করবেন বলে আশাবাদী। সেক্ষেত্রে তার আরো ১০ হাজার টাকা করে প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হতে পারে।

জেলার মুজিবনগর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের চাষি হবিবুর রহমান জানান, গ্রামের মাঠে তার রয়েছে ২ বিঘা জমিতে বেগুন চাষ। তিনি বলেন প্রতিবিঘা জমিতে বেগুন চাষে প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হলেও বিঘাতে ৮০ থেকে ১০০ মন বেগুন পাওয়া যায়। এবছর বেগুন পাইকারি ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা মন দরে বিক্রি হচ্ছে। তাই আবহাওয়া ভালো থাকলে প্রতি বিঘা জমি থেকে এবছর চাষি ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করতে পারবেন।

মেহেরপুর সদর উপজেলার উজুলপুর গ্রামের চাষি আলমগীর হোসেন বলেন, সবজি চাষ করে তিনি সংসার চালান। এবার মাঠে বেগুন ভালো হয়েছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় মেহেরপুরের বেগুনের চাহিদা রয়েছে। এবার ঢাকায় বেগুনের চালান পাঠাবার পর ঘর-বাড়ির উন্নতি করা ছাড়াও একটি মোটরসাইকেল কিনবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মুজিবনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোফাক্খারুল ইসলাম জানান, সবজি উৎপাদন খ্যাত মেহেরপুর জেলায় এবছর বেগুনের চাষ ভালো হয়েছে। কৃষক ভালো দাম পাচ্ছেন। লাভবান হচ্ছেন। বেগুন চাষিদের মুখে হাসি দেখা যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন- গেল সপ্তাহে মাঠ পর্যায়ে চলমান কৃষি কার্যক্রম পরিদর্শন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক চণ্ডি দাস কুণ্ডু। তিনি মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন মাঠের সবজি উৎপাদন প্রদর্শনী, মেহের সাগর কলা, কচু, বেগুন এবং প্রনোদণা প্যাকেজের আওতায় আবাদকৃত উফশী আউশ ও নেরিকা আউশ ধান ক্ষেত পরিদর্শন করেন। তিনি বেগুনের ক্ষেত ও ফলন দেখে খুবই প্রশংসা করেন।