চুয়াডাঙ্গার দোস্ত গ্রামে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বাল্যবিয়ে পণ্ডু : ডেকরেটরের মালামাল জব্দ

 

বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা প্রশাসনের হস্থক্ষেপে বাল্যবিয়ের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে দোস্ত গ্রামের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী হাজেরা। প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ি ছেড়ে পালায় কনের পিতামাতা। উপায়অন্ত না পেয়ে জব্দ করা হয়েছে ডেকরেটরের মালামাল। আগামী রোববার কনের পিতাকে তলব করা হয়েছে উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ে।

দেশ ও সমাজকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীর অবদান অনেক বেশি। উন্নত বিশ্বে পুরুষের পাশাপাশি দেশ গড়ায় নারীরাও সমান অবদান রেখে চলেছেন। বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি পেলেও এখনো অনেক নারীর জীবন বাল্যবিয়ের কারণে চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী হয়ে যায়। এতে করে সংসার-জীবন বুঝে ওঠার আগে খুব কম বয়সে ‘মা’ হয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন মেয়েরা। আগামী প্রজন্মের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠা এবং সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতেও বাল্যবিয়ে বাধা। তাই বাল্য বিয়ের কুফল এবং আইনে শাস্তির বিধান নিয়ে প্রচার প্রচারনা রয়েছে অব্যাহত। এর মধ্যেও কতিপয় গ্রাম্য মাতব্বরের প্রতিশ্রুতিতে কোথাও কোথাও প্রকাশ্যে অথবা গোপনে আয়োজন করা হচ্ছে বাল্য বিয়ের। তেমনি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের দোস্ত গ্রামের আব্দুল খালেক তার ৭ম শ্রেণীর মেয়ে হাজেরার বিয়ে ঠিক করে মহেশপুরের নিচিন্তপুরে। গতকাল শুক্রবার ছিলো বিয়ের নির্ধারিত দিন। ৭ম শ্রেণীর ছাত্রীর বিয়ের বিষয়টি জানতে পেরে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে দুপুরের দিকে বিয়ে বাড়িতে হাজির হন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পিএস ওসমান গণি। তিনি হাজেরার বয়স প্রমানের কাগজ পত্র দেখতে চাইলে পরিবারের লোকজন নিবন্ধনের কাগজ দেখান। যেখানে বয়স প্রায় ২০ বছর। প্রশ্ন ওঠে ২০ বছর বয়সি মেয়ে ৭ম শ্রেণির ছাত্রী হয় কিভাবে। তখন ৫ম শ্রেণি পাসের সার্টিফিকেট আনলে বয়সে দেখা দেয় গড়মিল। বিষয়টি আচ করতে পেরে কনের পিতামাতা দেয় গাঢাকা। অনেক সন্ধান করেও তাদের না পাওয়া গেলে অবশেষে বিয়ের কাজে ব্যবহৃত ডেকরেটরের মালামাল জব্দ করে স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য হালিমা বেগমের হেফাজতে দেয়া হয়। সেই সাথে বাল্যবিয়ের আয়োজন করায় কনের পিতাকে আগামী কাল রোববার সকালে নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়। উপস্থিত অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, বাল্যবিয়ে অপরাধ জেনেও যারা সাহস যুগিয়ে এ আয়োজন করিয়েছে তাদের শাস্তি আগে হওয়া দরকার। কারণ একজন কনের পিতা তার মেয়ের বিয়ে দেয়ার জন্য প্রথমে গ্রাম্য মতবরদের সরনাপন্ন হয়। প্রথমেই বাঁধা পেলে এ ধরেনের আয়োজন করে মেয়ের বাবা খতিগ্রস্ত হতো না।