ফেসবুক ব্যবহার যখন দণ্ডনীয় অপরাধ অ্যাড. তুহিন আহমেদ

বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগের অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত মাধ্যম হলো ফেসবুক। ফেসবুকের কারণে অনেক দূরের মানুষকে, অনেক দিনের অদেখা মানুষকে যেমন কাছে পাওয়ার সুযোগ হয়। তেমনি ফেসবুকের অপব্যবহার মারাত্মক অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। যেমন- কারো সম্পর্কে ফেসবুকে অশোভন লেখালেখি, কারো অশ্লীল ছবি প্রকাশ এবং কাউকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য যে কোন ধরনের পোস্ট আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আসুন আমরা আইন সম্পর্কে জেনে নিই। উপরোক্ত ধরনের কাজ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ অনুযায়ী অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এই আইনের ৫৭ ধারা অনুযায়ী ‘কোনো ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেউ পড়লে, দেখলে বা শুনলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ হতে পারেন অথবা যার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবণতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানি প্রদান করা হয়, তা হলে তার এ কার্য হবে অপরাধ”। কোনো ব্যক্তি এ ধারার অপরাধে অভিযুক্ত হলে সর্বোচ্চ ১৪ বছর এবং সর্বনিম্ন ৭ বছরের কারাদণ্ডে এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের মামলা থানায় দায়ের করতে হবে। বিচার হবে সাইবার ট্রাইব্যুনালে এবং বিচারক হবেন দায়রা জজ বা অতিরিক্ত দায়রা জজ পদমর্যাদার একজন বিচারক। ৫৭ ধারার অপরাধ জামিন অযোগ্য এবং ওয়ারেন্ট ছাড়াই পুলিশ আসামীকে গ্রেফতার করতে পারবেন। অনেক ক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদের পরে স্বামী-স্ত্রী একজন অপরজনের ছবি পোস্ট করে অপরকে বিব্রত করে যা এ ধারার অপরাধ। তাছাড়া অনেক সময় উঠতি বয়সের ছেলেরা আবেগের বশে কোনো মেয়েকে নিয়ে বাজে মন্তব্য প্রকাশ বা খারাপ ছবি তৈরি করে ফেসবুকে পোস্ট করে, এটিও এই ধারায় দণ্ডনীয় অপরাধ। সুতরাং কোনো অবস্থাতেই ফেসবুকে কারো সম্পর্কে বাজে মন্তব্য বা কারো অশ্লীল ছবি প্রকাশ করবেন না, আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াবেন না।
হন