দরপত্রের কোন্দলে ছাত্রলীগ : ধর্মঘট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে

স্টাফ রিপোর্টার: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯৭ কোটি টাকার কাজের দরপত্র দাখিল নিয়ে কোন্দলে লাগাতার ধর্মঘট ডেকেছে ছাত্রলীগের একটি অংশ। ধর্মঘট আহ্বানকারীদের অভিযোগ, সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এক ঠিকাদারের পক্ষ নিয়ে অন্যান্যদের দরপ্রস্তাব দাখিলে বাধা দিচ্ছে।

অন্যদিকে সভাপতি আলমগীর টিপু দাবি করেছেন, ধর্মঘট আহ্বানকারীরা কোনো ঠিকাদারদের পক্ষ নিয়েছেন। দরপত্র সংক্রান্ত কাজে ছাত্রদের সংশ্লিষ্টতার সুযোগ না থাকলেও বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এনিয়ে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন জড়িয়ে পড়ে সংঘর্ষে রক্তক্ষয়ের নজিরও রয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা হল’ ও দ্বিতীয় কলা অনুষদের দ্বিতীয় স্তরের কাজের ৯৫ কোটি টাকা দরপত্র আহ্বান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দ্বিতীয় কলা অনুষদের দ্বিতীয় দফা কাজের জন্য ৭৬ কোটি এবং জননেত্রী শেখ হাসিনা হলের জন্য ১৯ কোটি টাকার কাজের দরপ্রস্তাব জমা দেয়ার শেষ সময় সোমবার।

সেই সময়সীমার একদিন আগেই সরকার সমর্থক সংগঠনটির এই বিশ্ববিদ্যালয় শাখার একাংশ অনির্দিষ্টকাল ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে। ধর্মঘট আহ্বানকারীদের অন্যতম সহ-সভাপতি রাশেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে টেন্ডার প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। নিজেদের স্বার্থের কারণে তারা অন্যদের টেন্ডার জমা দিতে বাধা দিচ্ছে।’ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় জড়িত হওয়ার প্রতিবাদে আগামীকাল (সোমবার) থেকে ক্যাম্পাসে লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। এই দরপত্র নিয়ে রোববার ক্যম্পাসে ছাত্রলীগের এক পক্ষ মহড়া দেয়। এতে অনেকে দরপ্রস্তাব জমা দিতে ক্যাম্পাসে যেতে পারেননি বলেও অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ‌্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক এক সহ-সভাপতি ও সাবেক এক নেতার পক্ষ নিয়ে বর্তমান সভাপতি আলমগীর টিপু ও সাধারণ

সম্পাদক ফজলে রাব্বি সুজনের অনুসারীরা অন্য ঠিকাদারদের দরপত্র জমা দিতে বাধা দিচ্ছেন। তবে দরপত্র নিয়ে কোনো ঠিকাদারের পক্ষাবলম্বনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি টিপু। তিনি বলেন, ‘টেন্ডার প্রক্রিয়ার সাথে আমি বা সাধারণ সম্পাদক কেউ সম্পৃক্ত নয়। যদি আমাদের পরের স্তরের কোনো নেতা এর সাথে সম্পৃক্ত থাকে, এর দায়ভার আমাদের না। কয়েকজন নেতা কোনো কোনো ঠিকাদারের পক্ষ নিয়েছেন। এদের মধ্যে টিকতে না পেরে তারা হয়ত ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।

২০১৩ সালের ২৪ জুন চট্টগ্রাম নগরীর সিআরবিতে এক দরপত্র নিয়ে সংঘর্ষে সংঘর্ষে দুজন খুন হওয়ার মামলায় টিপু অন্যতম আসামি, তবে তাতে সম্পৃক্ততার অভিযোগও তিনি অস্বীকার করে আসছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে কোনো কোন্দল নেই বলেও দাবি করেন টিপু। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমরা এক আছি। আমাদের মধ্যে যেহেতু কোনো মতবিরোধ নেই, সেহেতু অন্য কোনো পক্ষও এখানে নেই।