ঈদুল আজহা উদযাপিত : নির্দিষ্টসহ অন্যান্য স্থানেও পশু কোরবানি পৌর এলাকায় পশুর বর্জ্য পরিষ্কার প্রায় সম্পন্ন

 

স্টাফ রিপোর্টার: মহান ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। ঈদগাহে নামাজ আদায়ের পর থেকেই শুরু হয় পশু কোরবানি। গত মঙ্গলবার থেকে গতকাল পর্যন্ত কোরবানি দিয়েছেন মুসল্লিরা। চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় পশু কোরবানির নির্ধারিত স্থান থেকে পশুর বর্জ্য পরিস্কার করা হয়েছে। গত তিনদিন পশু কোরবানির সকল বর্জ্য পরিষ্কার প্রায় সম্পন্ন করেছে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা। পরিচ্ছন্ন কাজ তদারকি করেছেন জেলা প্রশাসক ও পৌর মেয়র। ঈদের তৃতীয় দিন পশু জবাই করা স্থানে গিয়েও পরিষ্কার করেছেন পরিচ্ছন্নকর্মীরা। বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে শতভাগ বর্জ্য অপসারণ প্রায় সম্পন্ন করেছে পৌর পরিষদ। তবে কিছু কিছু এলাকায় বাসিন্দারা অন্যান্য স্থানে পশু কোরবানি দিলেও তার বর্জ্য অপসারণ করেননি। তাদের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে পৌর পরিষদ। তা না হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। এদিকে প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে পশু কোরবানির স্থান নির্ধারণ করায় সংশ্লিষ্টদেরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অনেকেই। পৌর এলাকার বেলগাছি ঈদগাপাড়ায় দীর্ঘ ৪০ বছর একই স্থানে পশু কোরবানি করছেন মহল্লার বাসিন্দারা। সরকারি উদ্যোগের ফলে তা নিয়মিত থাকায় জেলা প্রশাসন ও পৌরসভাকে ধন্যবাদ জানান এলাকাবাসী।

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় ৯টি ওয়ার্ডে কোরবানির পশুর বর্জ্য পরিষ্কার করেছে পরিছন্নকর্মীরা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিছন্ন করার জন্য ৬৫ স্পট তদারকি করেন পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু। পরিচ্ছন্নকর্মীদের পাশে থেকে তিনি নিজেও বর্জ্য পরিষ্কার করেছেন। সকল স্থান থেকেই প্রায় শতভাগ পশুর বর্জ্য পরিষ্কার সম্পন্ন করেছে পৌরসভা। সড়ক, পাড়া মহল্লার অলিগলি থেকে সরানো হয়েছে পশুর চামড়া, রক্ত, বিষ্ঠা ও হাড়হাড্ডি। গত তিনদিনের কোরবানি হওয়া সকল বর্জ্য পরিষ্কার প্রায় শেষের দিকে। তবে কিছু কিছু এলাকায় নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি দেননি বাসিন্দারা। নিজ স্থান অথবা বাড়ির পাশে মাঠে পশু জবাই করেও সেখানকার বর্জ্য অপসারণ করেননি তারা।

এদিকে সরকারিভাবে পশু জবাইয়ের জন্য নির্ধারিত স্থান করায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন ও পৌরসভার সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অনেকেই। বেলগাছি ঈদগাপাড়ার মৃত আব্দুল মাজিদ মিয়ার জমিতে ৪০ বছর ধরে পশু কোরবানি দিয়ে আসছেন মহল্লার বাসিন্দারা। ১৯ বছর আগে আব্দুল মাজিদ মিয়ার মৃত্যুর পর থেকে প্রায় ৮ বিঘা জমিতে মহল্লার সকলের কোরবানি দেখভাল করে আসছেন তার ছেলে ফয়জুর রহমান ইদ্রিস। এ বছর সেখানে ২১টি গরু ও ১৮টি ছাগল কোরবানি দেয়া হয়েছে। কোরবানির সারাদিনে উপস্থিত সকলকে বিশেষ আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেন ফয়জুর রহমান। ফলে ঈদের মধ্যেও আরেক আনন্দের সৃষ্টি হয় সেখানে। এ বছর বেলগাছি ঈদগাপাড়ায় পশু কোরবানি কমিটিতে আরও ছিলেন হাসিবুল রেজা শামিম, হামিদুর রহমান, রফিকুল ইসলাম ও সাবিউল মওলা। সরকারি উদ্যোগের ফলে বেলগাছির ঐতিহ্যবাহী কোরবানি নিয়মিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান স্থানীয়রা।

নির্ধারিত স্থানে পশু জবাইয়ের সচেতনতার জন্য শহরে ঈদের আগে বেশকয়েকদিন মাইকিং ও বিজ্ঞাপন চিত্র প্রদর্শন করা হয়। জেলা প্রশাসনের পক্ষেও ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়।

চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু বলেন, পশু কোরবানির জন্য স্থান নির্ধারণ প্রথমবারের মতো হলেও পৌরসভার আহ্বানে পৌরবাসীরা সহযোগিতা করেছেন। তবে কিছু এলাকার বাসিন্দারা নিজ স্থানে পশু কোরবানি দিয়েছেন এবং তার বর্জ্য ঠিকমতো অপসারণ করেননি। তাদের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে পৌর পরিষদ আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে। তা না হলে পরিষদ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও জানান পৌর মেয়র।