মালয়েশিয়ায় আটকে মুক্তিপণ আদায়ের সেই হোতা ঝিনাইদহের দালাল বল্টু আটক সমঝোতায় মুক্তি

 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: মালয়েশিয়ায় আটকে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য তুহিন রেজা নামে এক যুবকের দুই পা ভেঙে দেয়ার ঘটনায় জড়িত সেই দালাল মাহফুজুর রহমান ওরফে বল্টুকে আটক করেও পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে। গত রোববার সকালে বল্টুকে তার বাড়ি থেকে আটক করে ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই ফজলুর রহমান। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হওয়ায় দালাল বল্টুকে ছেড়ে দেয়া হয়। এসব তথ্য জানান, নির্যাতনে পঙ্গুত্ব বরণকারী তুহিনের মা রোকেয়া খাতুন। তিনি জানান, রোববার ভোরের দিকে পুলিশ বেজিমারা গ্রামের তোরাব আলীর ছেলে মাহফুজুর রহমান বল্টুকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর থানায় মধুহাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুয়েলের মধ্যস্থতায় দুই সপ্তার মধ্যে তুহিন রেজাকে দেশে ফিরিয়ে আনা ও বিদেশে যাওয়ার খরচ দেয়ার সমঝোতা হয়। ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই ফজলুর রহমান জানান, ওসি সাহেবের উপস্থিতিতে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হওয়ায় বল্টুকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালে লিবিয়া যাওয়ার জন্য এলাকার দালাল মহামায়া গ্রামের মধু, আসাদ, বেজিমারা গ্রামের মাহফুজুর রহমান ওরফে পল্টু ও তোরাব আলীর কাছে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা পরিশোধ করে তুহিন। দুই বছর ধরে ঘোরানোর পর দালালরা জানান, লিবিয়ার আবস্থা ভাল নয়। সাড়ে ৪ লাখ টাকা হলে ইরাক বা কাতারে পাঠানো হবে। এরপর ফ্লাইটের নামে তুহিনকে দফায় দফায় ১৬ বার ঢাকায় নিয়ে রাখা হয়। সর্বশেষ একই খরচে তুহিনকে ২০১৬ সালের ১৪ জুলাই মালয়েশিয়ায় পাঠিয়ে দেয়। মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর পর দালালচক্র তুহিনকে আটকিয়ে পরিবারের কাছে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। দাবিকৃত টাকা না পেয়ে তুহিনকে দফায় দফায় নির্যাতন করে। কোন উপায়ন্ত না পেয়ে তুহিনের দরিদ্র বাবা গরু ও মাঠের জমি বিক্রি করে দেড় লাখ টাকা পরিশোধ করেন। এরপর তুহিনের নিকট আরো ১০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। টাকা দিতে না পারাই তিনতলা বাড়ির ছাদ থেকে ফেলে হত্যার চেষ্টাও করা হয়েছে। এতে তুহিনের দুই পা ভেঙে যায়। তুহিন এখন পঙ্গু হয়ে মালয়েশিয়ায় এক আত্মীয়ের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

Leave a comment