নারীকে বোকা বানাতে গিয়ে বেকায়দায় জিনের বাদশা

মেহেরপুর গাংনীতে সোনার পুতুল দেয়ার লোভে প্রতারণা

 

গাংনী প্রতিনিধি: জিনের বাদশা সেজে ধোকা দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিলেও এবার গ্যাঁড়াকলে পড়েছে ফজলু মিয়া নামের একজন। মেহেরপুর গাংনী উপজেলার রুয়েরকান্দি গ্রামের এক নারীকে সোনার পুতুল দিয়ে টাকা নেয়ার সময় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে গাংনী হাসপাতাল বাজারে ওই নারীর বিচক্ষণতায় স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। ফজলু মিয়া গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কমলনারায়নপুর গ্রামের মৃত জলিল ওরফে জুলুর ছেলে।

পুলিশ জানান, এ উপজেলার রুয়েরকান্দি গ্রামের মৃত মুনছুর আলীর মেয়ে লিপি খাতুনের মোবাইলে জিনের বাদশা সেজে টাকা দাবি করে ফজলুসহ প্রতারক চক্রের সদস্যরা। ধর্মের দোহায় দিয়ে তাকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। কিন্তু কোনভাবেই কিছু হচ্ছিলো না। শেষ পর্যন্ত পবিত্র কোরআন শরিফ কেনার কথা বলে ১ হাজার ৫০ টাকা বিকাশের মাধ্যমে গ্রহণ করে ওই জিনের বাদশা। পরবর্তীতে আবারো টাকা হাতিয়ে নিতে বিভিন্ন জিনিসের প্রলোভন দেখায়। সোনার একটি অলৌকিক পুতুল পেতে ১৬ হাজার ৭২১ টাকা ছদকা পরিশোধ করার নির্দেশ দেয় সেই জিনের বাদশা। অমান্য করলে সংসারে বড় ধরণের অমঙ্গল হবে বলে হুশিয়ারী করেন তিনি।

এদিকে জিনের বাদশার কথা কোনোভাবেই বিশ্বাস করেননি লিপি খাতুন। বুদ্ধিমতি এই নারী জিনের বাদশাকেই ধরার ছক তৈরি করেন। এ কারণে তিনি শুধু অভিনয় করে যাচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত টাকার বিনিময়ে সোনার পুতুল নিতে সম্মত হন লিপি। জিনের বাদশার নির্দেশমত গতকাল দুপুরে গাংনী হাসপাতালে অবস্থান করেন লিপি। তার আশেপাশে ছিলেন আত্মীয় স্বজনরা। মোবাইলফোনে দেয়া নির্দেশনা মতো জিনের বাদশার তিনজন লোক পুতুল নিয়ে সেখানে পৌঁছায়। লিপির কাছে এসে পুতুল দিয়ে টাকা নেয়ার সময় লিপি ও তার স্বজনরা তাকে আটক করেন। এ সময় পালিয়ে যায় ফজলুর সহযোগী সাজু ও মিনহাজুল। দুজনেরই বাড়ি ফজলুর এলাকায়।

গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, এ ঘটনায় ওই নারী বাদি হয়ে ফজলু ও তার কয়েকজন সহযোগীর নামে গাংনী থানায় একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করছেন। আজ ফজলুকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। পালিয়ে যাওয়া দুই সহযোগিকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি।