যশোরে সেপটিক ট্যাঙ্কের বিষাক্ত গ্যাসে বাবা-ছেলেসহ ৫ জনের মৃত্যু

 

স্টাফ রিপোর্টার: যশোরের কেশবপুরে নির্মাণাধীন একটি সেপটিক ট্যাংকে পড়ে যাওয়া এক শ্রমিককে বাঁচাতে গিয়ে বিষাক্ত গ্যাসে বাবা-ছেলেসহ একে একে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে উপজেলার সরসকাঠি গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। মৃতরা হলেন আহাদ আলী (৪৫) ও তার ছেলে শফিকুল ইসলাম (২০) এবং তিন শ্রমিক বরণডালি গ্রামের হামিদ আলী (২৫), ইকবাল হোসেন (২৫) ও মীর্জানগর গ্রামের আল আমিন (২২)। আহাদ ও শফিকুল দুর্ঘটনাকবলিত বাড়ির মালিকের প্রতিবেশী।

স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক সপ্তাহ আগে ওজিয়ার মোড়লের একটি বাড়ির টয়লেটের সেপটিক ট্যাংক নির্মাণ করা হয়। গতকাল তিন শ্রমিক নির্মাণাধীন সেফটিক ট্যাংকের বাঁশ খুলে ফেলার কাজ শুরু করেন। এ সময় সেপটিক ট্যাংকের অংশবিশেষ ভেঙে পড়ে। এতে প্রথমে হামিদ আলী সেপটিক ট্যাংকের মধ্যে পড়ে যান। তাকে উদ্ধার করতে নামেন  ইকবাল হোসেন, এরপর আল আমীন। এই তিন শ্রমিকই বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হন। এ সময় তাদের উদ্ধার করতে প্রতিবেশী বরণডালি গ্রামের আহাদ আলী সেপটিক ট্যাংকে নেমে একইভাবে আক্রান্ত হন। বাবাকে উদ্ধার করতে ছেলে শফিকুল ইসলামও সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করেন। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। পরে এলাকাবাসী শাবল দিয়ে সেপটিক ট্যাংক ভেঙে ফেলে তাদের লাশ উদ্ধার করে। মনিরামপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শরিফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। স্বজনরা লাশ যার যার বাড়িতে নিয়ে গেছেন বলে স্থানীয়রা জানান।

যশোর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক পরিমল কুণ্ডু জানান, সেপটিক ট্যাংক বদ্ধ থাকার পর সেখানে শুষ্ক থাকলে কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি হয়। এর ক্রিয়ায় মানুষ জ্ঞান হারালেও প্রাণে বেঁচে থাকে। আর পানি জমে থাকলে সেখানে কার্বন মনো অক্সাইড তৈরি হয়। এর বিষক্রিয়ায় মানুষের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনাকবলিত সেপটিক ট্যাংকের জমাটবদ্ধ পানিতে কার্বন মনো অক্সাইড সৃষ্টি হয় বলেই সেখানে বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। কেশবপুরে ফায়ার সার্ভিসের অফিস নেই। প্রথমে পাশের উপজেলা মনিরামপুর, পরে যশোর থেকে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজ পরিচালনা করেন।