আলমডাঙ্গা জামজামির সেচখালে নিখোঁজ কলা ব্যবসায়ীর মাথা বিহীন গলিত লাশ উদ্ধার

 

হত্যার নৈপথ্যে পরকীয়া-টাকা ধারদেনা :  আলোচিত প্রেমিকা ও স্বামী গ্রেফতার

জামজামি প্রতিনিধি: ইবির কলা ব্যবসায়ী তৌফিক হোসেনের লাশ আলমডাঙ্গা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ হওয়ার ১২ দিনের মাথায় আলমডাঙ্গার জামজামি খাল থেকে রোববার দুপুরে তার গলিত লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। লাশ উদ্ধারের সময় লাশের মাথার অংশ খুঁজে পায়নি পুলিশ। তাদের ধারণা ধড়-মাথা আলাদা করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার অভিযোগে পরকীয় প্রেমিকা ও তার স্বামীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা হয়েছে ইবি থানায়। নিহত কলা ব্যবসায়ী তৌফিক আলমডাঙ্গার পার্শ্ববর্তী ইবি থানার বলরামপুর গ্রামের মৃত দুবন মণ্ডলের ছেলে।

এলাকাবাসী ও পুলিশসূত্রে জানা গেছে, ইবি থানার বলরামপুরের অদূরে আলমডাঙ্গা উপজেলার জামজামি বাজার। ১৯ জুলাই বেলা ১টার দিকে জামজামি বাজারে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন তৌফিক হোসেন (৩৫)। তৌফিক নিখোঁজ ঘটনায় স্ত্রী সীমা খাতুন পরদিন সকালে ইবি থানায় একটি জিডি করেন। পুলিশ সন্ধ্যায় প্রধান সন্দেহভাজন পরকীয়া ২ সন্তানের জননী আলোচিত সুন্দরি ববিতা, স্বামী মহরজান ও আলমডাঙ্গা বাদেমাজু গ্রামের জলিল খাঁর ছেলে ননদাই রবজেলকে পার্শ্ববর্তী রাধানগর থেকে আটক করে। কয়েক ঘণ্টার মাথায় রহস্যজনক কারণে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়। অভিযোগ উঠেছে সরকার দলীয় প্রভাবশালী এক নেতার ইশারায় পুলিশ তাদেরকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। ঘটনার ১২ দিনের মাথায় রোববার আলমডাঙ্গার যমুনা মাঠের জিকে খালে একটি গাছের গোড়ায় ভাসমান অবস্থায় কঙ্কাল আকৃতির লাশ দেখতে পেয়ে কৃষকরা পুলিশে খবর দেয়। গায়ের জামা ও পরনের লুঙ্গি দেখে তৌফিকের লাশ শনাক্ত করেন তার ভাই রফিকুল ইসলাম। দুপুরে আলমডাঙ্গা ও ইবি পুলিশ যৌথভাবে তার লাশ উদ্ধার করে।

গতকাল বিকেলে ময়না তদন্তের পর সন্ধ্যায় গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে  নিহত তৌফিকের লাশ দাফন করা হয়। তার মেয়ে তৃষা (১০)  ও ছেলে নিশানের (৩) কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে এলাকার পরিবেশ।

নিহত তৌফিকের স্ত্রী দু’সন্তানের জননী সীমা খাতুন অভিযোগ করেন, তার স্বামীর পরকীয়া প্রেমিকা প্রতিবেশী ববিতা ৪ বছর ধরে লেগেছে। আমার সংসার শেষ করেছে। সে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। টাকা উদ্ধারের জন্য চাপ দেয়ায় কৌশলে ডেকে নিয়ে ববিতা আমার স্বামীকে লোকজন দিয়ে হত্যা করিয়েছে। গ্রামের অনেকেই জানায়, নিখোঁজ হওয়ার দিন ববিতার সাথে একই আলমসাধুতে তৌফিককে দেখা গেছে।Screenshot_2016-07-31-16-11-56

আলমডাঙ্গা থানার ওসি (তদন্ত) মেহেদী রাসেল জানান, লাশের মাথার অংশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি জানান, ধারণা করা হচ্ছে, হত্যার পর মাথা আলাদা করে ফেলেছে খুনিরা। এদিকে রোববার লাশ উদ্ধারের পরপরই তৌফিকের পরকীয়া প্রেমিকা একই গ্রামের ববিতা খাতুন ও তার স্বামী মহরজানকে আটক করে গ্রামবাসী। পরে ইবি থানা পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করে। ইবি থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তদন্তের স্বার্থে সব কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে তাদের কাছ থেকে অনেক তথ্যই উদ্ধার হয়েছে। তিনি বলেন নিহদ তৌফিকের মা শাহানারা খাতুন বাদী হয়ে ইবি থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।