চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়ক ৪৪ কোটি টাকার নির্মাণ কাজে ধীরগতি : ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর সড়ক অবরোধ

 

ডাকবাংলা প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা সড়কের ডাকবাংলা বাজার এলাকায় নতুন করে রাস্তা নির্মানের নামে এক বছরের বেশি সময় ধরে খুড়ে রাখায় এলাকাবাসী ফুসে উঠেছে। সড়ক দ্রুত নির্মাণের দাবি জানিয়ে গতপরশু শুক্রবার দুপুরে অবেরাধ কর্মসুচি পালন করেছে এলাকাবাসী।

শুক্রবার চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কের ডাকবাংলায় অবরোধের কারণে এক ঘন্টারও বেশি সময় যান চলাচল বন্ধ ছিলো। দুই পাশে শত শত পরিবহন আটকে পড়ে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। অবরোধ কর্মসুচিতে বৈডাঙ্গা, বাটিকাডাঙ্গা, ডহরপুকুর, বাথপুকুর ও নারায়নপুরসহ আশপাশের ১০ গ্রামের মানুষ অংশগ্রহণ করেন। অবরোধ শেষে রাস্তার ওপর এক প্রতিবাদ সমাবেশ হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে স্থানীয় ইউপি মেম্বার হুসিয়ার হোসেন, ড্রাইভার নুর ইসলাম সরকার, ওহিদুল ইসলাম, রাজু আহম্মেদ শিপন ও টোকন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। রাস্তা অবরোধকারীরা অভিযোগ করেন, ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা সড়কের উত্তর নারায়ণপুর থেকে বৈডাঙ্গা বাজার প্রায় এক কিলোমিটার ভাল রাস্তা দেড় বছর ধরে খুড়ে রাখা হয়েছে। ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা-মুজিবনগর রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হয়। তারা বলেন, অন্যান্য ঠিকাদাররা রাস্তার বিভিন্ন অংশের নির্মাণ কাজ শেষ করলেও সুমন এন্টারপ্রাইজ রাস্তা না করে ফেলে রেখেছে। খুড়ে রাখার কারণে রাস্তার ওপর বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেই গর্তে যানবাহন পড়ে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তা অবরোধের এক ঘটনা পর দ্রুত সংস্কারের পুলিশের এমন আশ্বাস তারা অবরোধ তুলে নেয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা মুজিবনগর রাস্তা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ঝিনাইদহের অংশে ৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু নির্মাণ কাজ শুরু থেকেই ঘপলাবাজীর আশ্রয় নেয়া হয়। মাটির কাজ না করেই কয়েক কোটি টাকা ভাগাভাগী করে নেয়া হয়েছে। অবরোধকারীরা সিডিউল দেখিয়ে অভিযোগ করেন, প্রতি কিলো রাস্তা ৩ কোটি টাকার নির্মাণ ব্যায় ধরা হয়েছে।

এলজিইডির ল্যাব টেকনিশিয়ান দিয়ে পরীক্ষা করলে এই পুকুর চুরির ঘটনা ধরা পড়বে। এলাকাবাসী জানিয়েছে, প্রতি কিলোতে মাটির কাজ রয়েছে ৫০ লাখ টাকার। কিন্তু রাস্তার সাইড প্রশস্ত করণে কোন মাটির কাজ করা হয়নি। রাস্তা তদারকি কর্মকর্তা এসও আহসানুল হক প্রতি কিলোতে ২০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে বিল দিয়েছেন বলে অভিযোগ। ঠিকাদারদের একটি সুত্র জানিয়েছে, আনলিমিটেড ঘুষ নেয়ার কারণে রাস্তার কাজ মানসম্মত হয়নি। তাদের ভাষ্য ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগ লুটপাটের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। সরকারের রাস্তা উন্নয়নের টাকা ভুয়া পাইলিং, রং, রাস্তার পাশ পরিস্কার, মালামাল সাপ্লাই, বালি, ইট ও মাটির কাজ দেখিয়ে হরিলুট করা হচ্ছে। এছাড়া ২৫ হাজার টাকার কোটেশন দেখিয়ে মাসে সরকারের লাখ লাখ টাকা তছরুপ করছে এসও আহসান ও মনিরুল। এ নিয়ে ঠিকাদারদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, মাটির কাজ এখনো শেষ হয়নি। রাস্তার কাজ এখনো চলমান। তাই টাকা তছরুপের বিষয়টি ঠিক নয়। তিনি বলেন, সুমন এন্টারপ্রাইজকে চিঠি দিয়ে বারবার তাগাদা দেয়ার পরও তিনি রাস্তার কাজ শেষ করছেন না। ফলে ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা সড়কের উত্তর নারায়ণপুর থেকে বৈডাঙ্গা বাজার পর্যন্ত রাস্তা খুড়ে ফেলে রাখা হয়েছে। তিনি ভুয়া কোটেশন ও বিল ভাউচারে সড়কের টাকা হরিলুটের বিষয়টি এড়িয়ে যান।