চুয়াডাঙ্গার দোস্ত বাজারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে জেলা পরিষদের নোটিস : ঈদগা কমিটি আর দখলদারদের মধ্যে চলছে রশি টানাটানি

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদরের দোস্ত বাজারে জেলা পরিষদের জায়গা দখল করে পাকা দোকান ঘর নির্মাণ করে বেশ কয়েকজন দু যুগ ধরে ব্যবসা করে আসছে। এ নিয়ে পত্রিকায় ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ পেলে বিষয়টি দৃষ্টিগোচরে আসে জেলা পরিষদের। দফায় দফায় ঈদগা কমিটি ও দখলদার দোকানিদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে ফেলার নোটিশ দেয়া হয়েছে। নোটিশ প্রদানের ১৭ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি জেলা পরিষদ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের দোস্ত বাজারে ২ নং খতিয়ানে ৭৩৫ দাগে বাজারের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পাকা সড়কের পশ্চিম পাশে জেলা পরিষদের ৮৯ শতক সরকারি জমি দীর্ঘদিন থেকে দখল করে রেখেছে স্থানীয় প্রভাবশালী ২০-২২ জন। সম্প্রতি কুন্দিপুর গ্রামের গুলু শেখের ছেলে বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেন দু কক্ষ বিশিষ্ট একটি পাকা দোকানঘর নির্মাণের কাজ শুরু করলে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টিগোচরে আসে। মাপজোঁক করতে গিয়ে কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে পড়ে সাপ। এ নিয়ে দখলদারদের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। এতোদিন নিজের জায়গা বলে জোর দাবি করে যা খুশি তাই করে আসছিলো দখলদাররা। এমন কি সরকারি জায়গা দখল করে লাখ লাখ টাকায় পজিশন বিক্রি করেছে অনেকেই। মাপজোঁকের পর মুখে কুলু পড়ে অনেকের। দীর্ঘ দুইযুগ ধরে জেলা পরিষদের জায়গা ভোগদখল করলেও কোনো লিজ মূল্য দিতে হয়নি কারো।

স্থানীয়রা জানান, দোস্তবাজারের ওপর আছে ঈদগা। ঈদগার উন্নয়নে ঈদগা কমিটি নামমাত্র টাকা নিয়ে জেলা পরিষদের ওই জায়গা বিভিন্ন জনের নিকট লিজ দেয়। সবকিছুই চলছিলো ঠিকঠাক। বিষয়টি জেলা পরিষদের দৃষ্টিগোচর হলে ওই জমি লিজ দেয়ার উদ্যোগ নেয়। ৫-৬টি গ্রামের লোকজনের দাবি ঈদগা কমিটির নামে লিজ হোক। আর যেভাবে চলছে সেভাবেই চলুক। কতিপয় দোকানদাররা চাচ্ছেন জেলা পরিষদ সরাসরি তাদের নামে লিজ প্রদান করুক। এ নিয়ে ঈদগা কমিটি এবং দোকানদারদের মধ্যে চলে রশি টানাটানি। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সমাধান করার জন্য বারবার তাগিদ দেয়া হলেও কোনো সমাধানে আসতে পারেনি দোকানদার এবং ঈদগা কমিটির লোকজন। পরিশেষে গত ১৪ জুলাই চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ হামীম হাসান স্বাক্ষরিত নোটিশ মারফত দখলদারদেরকে ৭ দিনের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে ফেলার নোটিশ দেয়া হয়। নোটিশ প্রদানের ১৭ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত জেলা পরিষদ কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ নিতে পারেনি।

এ বিষয়ে জেলা পরিষদ প্রশাসক মাহফুজুর রহমান মনজু বলেন, মানবিক কারণে উভয়পক্ষকে সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান করার কথা বলা হয়েছিলো। তারা যখন সমাধানে আসতে পারেনি বাকি কাজ আইন মোতাবেকই হবে।

Leave a comment