মাদককারবারীর বাড়িতে পুলিশি অভিযান ও কিশোরীকে নির্যাতন

 

চুয়াডাঙ্গা জীবননগরের উথলীর ১৩ বছরের এক কিশোরীকে প্রতিবেশী নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে। এ তথ্য দিয়ে অভিযোগকারীরা বলেছেন, চিহ্নিত মাদক বিক্রেতার বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালানোর পর পুলিশের গোপন সংবাদদাতা হিসেবে সন্দেহ করে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। স্থানীয়রা কিশোরী নির্যাতনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পুলিশের পদস্থ কর্তার আশুদৃষ্টি কামনাসহ এলাকার মানবাধিকার সংস্থা সংগঠনগুলোরও হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করেছে। গতকাল শুক্রবার এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রতিবেদনে এরকমই প্রত্যাশার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন- পুলিশের গোপন সংবাদদাতা সন্দেহে কিশোরীকে যে বা যারা নির্যাতন করেছে তাকে বা তাদের কি বিচার হবে?

ওই সমাজকেই সুন্দর সমাজ বলা হয়, যে সমাজে স্বচ্ছতার সাথে যথাযথভাবে আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করা হয়েছে। ফুটপাথ নোংরা রোধে চুইংগাম প্রকাশ্যে চিবুনো নিষিদ্ধ করে আইন প্রণয়ন করলেই হয় না, আইনের প্রয়োগ থাকতে হয়। সিঙ্গাপুরে শুধু প্রকাশ্যে চুইংগাম চিবুনো নিষিদ্ধ করা আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই, সমাজ সুন্দর করার স্বার্থে প্রণীত সকল আইনেরই প্রয়োগ সেখানে নিশ্চিত করা হয়েছে বলেই ছোট্ট রাষ্ট্র হয়েও চমৎকার শৃঙ্খলাবদ্ধতায় উন্নয়নে ঈর্ষন্বীয় শীর্ষে। অথচ আমরা? আইন আর আইন। অথচ প্রয়োগের অভাবে যাচ্ছে তাই অবস্থায় হাবুডুবু খাচ্ছে সমাজ। স্বয়ং অর্থমন্ত্রীয় বলেন, আইন করেও দুর্নীতি দূর করা যায়নি। আইন থাকলেই যে দুর্নীতি দূর করা যায় না তার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হয় তা নিশ্চয় প্রবীণ প্রজ্ঞাশীল মন্ত্রীর অজানা নয়। ঠিক একইভাবে, দেশে মাদকের কালোথাবা দ্রুত পুরো সমাজ গিলে নেয়ার মতো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। মাদক বিক্রেতাদের দাপট দিন দিন বেড়েই চলেছে। কেন? আইনের যথাযথ প্রয়োগে অবশ্যই ঘাটতি রয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা জীবননগরের উথলীতে চিহ্নিত একটি বাড়িতে পুলিশি অভিযানে একজন ধরা পড়ে। ওই বাড়িতে পুলিশি অভিযানের আড়ালে কিশোরীর সংশ্লিষ্টতা কতোটুকু তা ভিন্ন কথা। কিশোরীকে নির্যাতন করা হয়েছে। কাউকে নির্যাতন করার অধিকার দেশের প্রচলিত আইনে নেই। তা কেন কিশোরীকে প্রতিবেশী পুরুষ নির্যাতন করেছে তা খতিয়ে দেখতে হবে। আর যদি সত্যিই কিশোরী সুন্দর সমাজের প্রত্যাশায় মাদককারবারীদের বিরুদ্ধে গোপনে পুলিশকে তথ্য দেয় তাহলে তাকে তো বাড়তি নিরাপত্তা দেয়া পুলিশের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। তথ্য না দিলেও কিশোরীকে নির্যাতন করা হয়েছে। বিষয়টিকে কোনোভাবেই খাটো করে না দেখে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া দরকার।