কালো পোশাকে জঙ্গিদের ছবি মিললো পেনড্রাইভে

 

স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীর কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানা থেকে উদ্ধার করা দুটি পেনড্রাইভে পাওয়া গেছে জঙ্গিদের কালো পোশাক পরা বেশ কিছু ছবি। ঠিক একই রকম পোশাক পরিহিত ছবি দেখা গেছে গুলশান হামলায় নিহত জঙ্গিদেরও। দুই স্থানের জঙ্গিদের ছবির দৃশ্যপটে পাওয়া গেছে হুবহু মিল। যা থেকে তাদের মধ্যে যোগসূত্র ও একই গোষ্ঠীর সদস্য হওয়ার বিষয়টি জোরালোভাবে উঠে এসেছে। কল্যাণপুরের আস্তানায় উদ্ধার পেনড্রাইভ থেকে পাওয়া ছবিগুলো জঙ্গিরা অভিযানের আগেই তুলেছিলো বলে পুলিশের ধারণা। এসবের মধ্যে কিছু গ্রুপ ছবি, কিছু আলাদা আলাদা। পেনড্রাইভে পাওয়া গেছে আরও অনেক অজানা তথ্য। শিগগিরই গুলশান হামলার মতো বড় হামলার পরিকল্পনাও ছিল এ জঙ্গিদের। কল্যাণপুরের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ওই আস্তানায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল তামিম চৌধুরী নামে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক কানাডার নাগরিকের। দেশীয় জঙ্গিদের সাথে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ স্থাপনে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের তথ্য পাওয়া গেছে।
এদিকে কল্যাণপুরের আস্তানায় নিহত জঙ্গিদের মধ্যে বৃহস্পতিবার আরও একজনের পরিচয় জানা গেছে। আগের দিন সাতজনের পরিচয় জানা গিয়েছিল। একজনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। সর্বশেষ যার পরিচয় মিলেছে, তার নাম রায়হান কবির ওরফে তারেক। রংপুরের পীরগাছার কৃষক শাহজাহান মিয়ার ছেলে তারেক আশুলিয়ায় চেকপোস্টে পুলিশ কনস্টেবল মুকুল হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। সে কাজ করত নতুন ধারার জেএমবি (জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ) সদস্যদের প্রশিক্ষক হিসেবে।
তদন্ত সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, গুলশান হামলার আগে গাইবান্ধার সাদুল্ল্যাপুরে যমুনার চরে গুলশানে নিহত জঙ্গি খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল ওরফে বিকাশসহ তিনজনকে অস্ত্র চালনা প্রশিক্ষণ দিয়েছিলো তারেক। কল্যাণপুরের আস্তানায় ২৫ জুলাই নিহত অপর জঙ্গিদেরও প্রশিক্ষক ছিল সে। মামলার তদন্ত সংস্থা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটি) কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। সিটি সূত্র আরও জানায়, জেএমবির এ অংশটি শায়খ আবদুর রহমানের অনুসারী। শায়খ রহমানের ফাঁসির পর জেএমবির আমীর হন মাওলানা সাঈদুর রহমান। বর্তমানে তিনি কারাবন্দি। জেএমবির এ অংশটি সাঈদুর রহমানের নেতৃত্বের বিরোধী। সিটি ইউনিটের প্রধান ও গুলশানে হলি আর্টিজান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের হওয়ার মামলার তদারকি কর্মকতা মনিরুল ইসলাম বলেন, গুলশানে হামলাকারী ও কল্যাণপুরে নিহত জঙ্গিরা জেএমবির একই গ্রুপের সদস্য। তারেক তাদের নির্দেশক ও প্রশিক্ষক। তার বিষয়ে পুলিশের কাছে আগে থেকেই তথ্য ছিল। পুলিশ তাকে তারেক নামে চিনত। এটা তার ছদ্মনাম। তার প্রকৃত নাম শাহীনুর কবির। সে জেএমবির জঙ্গি কর্মকাণ্ডের ঢাকা অঞ্চলের কমান্ডার ছিলো।
তদন্ত সূত্র জানায়, কল্যাণপুরের আস্তানায় পুলিশের অভিযানের আগে জঙ্গিরা গুলশানে হামলাকারীদের মতো কালো পোশাক ও লাল পাগড়ি পরে ছবি তোলে। তদন্ত সংস্থা ওই আস্তানা থেকে উদ্ধার করা পেনড্রাইভ ও কয়েকটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে এসব ছবি উদ্ধার করেছে। তারা জানান, জঙ্গিরা ওই আস্তানায় জড়ো হয়েছিলো বড় ধরনের কোনো হামলার পরিকল্পনা নিয়ে। হলি আর্টিজানে জিম্মি ঘটনার পর আইএসের আমাক এজেন্সি যে ছবি প্রকাশ করেছিল এসব ছবিও একই ধরনের। আইনশৃংখলা বাহিনী সূত্র জানায়, জঙ্গিরা জেএমবির সদস্য। তারা প্রত্যেকে কালো পতাকা পেছনে রেখে ছবিগুলো তুলেছিল। তারা নতুন করে বড় ধরনের নাশকতার আগে কোনো মাধ্যমে তা আইএসের কাছে পাঠাত বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, কল্যাণপুরে অভিযানের আগে জঙ্গিরা তাদের কিছু ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস পুড়িয়ে ফেলে এবং কিছু ভেঙে ফেলে। যাতে আইনশৃংখলা বাহিনী এসব ডিভাইস থেকে কোনো তথ্য উদ্ধার করতে না পারে। পুলিশ দুটি পেনড্রাইভ উদ্ধার করেছে। ওই পেনড্রাইভের ভেতরেই ছবিগুলো ছিলো। কাউন্টার টেরোরিজমের কর্মকর্তাদের ধারণা, ছবিগুলো কয়েক দিন আগেই তুলেছিল জঙ্গিরা। আইনশৃংখলা বাহিনী সূত্র আরও জানায়, কল্যাণপুরের আস্তানা থেকে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ আলামত পাওয়া গেছে। সেগুলোর যাচাই-বাছাই চলছে। কল্যাণপুরে নিহত জঙ্গিদের সম্পর্কে মনিরুল ইসলাম জানান, ওই আস্তানায় থাকা ১১ জনের জঙ্গি দলটির ধর্মগুরু ছিল দিনাজপুরের নিহত আবদুল্লাহ। সে প্রথমে একটি কওমি মাদরাসা থেকে দাওরা পাস করে। পরে সরকারি আলিয়া মাদরাসা থেকে আলিম (এইচএসসি) পাস করে। ধর্মীয় বিষয়ে অন্যদের চেয়ে ‘ভালো জানে’ বলে ধর্মগুরু হিসেবে দলের সাথে ছিলো।
তারেক সম্পর্কে আরও জানা গেছে, জেএমবি নেতা মাসুদ রানার হাত ধরে জেএমবিতে যোগ দেয় তারেক। ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়া জেএমবির অন্যতম নেতা সিদ্দিকুর রহমান বাংলা ভাই পীরগাছার ইটাকুমারি ইউনিয়নের পশুয়া টাঙ্গাইলপাড়ায় তারেকের গ্রামে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। ওই সুযোগে তার অবাধ যাতায়াত ছিলো সেখানে। ওই সময় বাংলাভাইয়ের হাত ধরে জেএমবিতে যোগ দেন জেএমবির আঞ্চলিক কমান্ডার মাসুদ রানা। রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি ও কাউনিয়ার চৈতার চরে দারবার শরিফের খাদেম রহমত আলী হত্যার সঙ্গে জড়িত এ মাসুদ রানা। তাকে গ্রেফতার করার পর সে এ বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেয়। তার অন্যতম শিষ্য তারেক। মাসুদ রানাই তাকে অস্ত্র চালনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়।
এদের মদদদাতা কারা জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, কল্যাণপুর ও গুলশানে হামলাকারী দুটি জঙ্গি দলের মধ্যে যোগাযোগ ছিল। তাদের আর্থিক মদদদাতা ও উসকানিদাতাদের বিষয়ে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। কল্যাণপুরের আস্তানায় অভিযানের সময় গ্রেফতার জঙ্গি হাসানের স্বীকারোক্তি থেকেও তাদের বিষয়ে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে এসব বিষয় প্রকাশ করেনি মনিরুল। এদিকে নিহত ৯ জঙ্গির মধ্যে ৮ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। পুলিশ তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়েছে। তালিকায় বাদ থাকা ছবিটি চট্টগ্রামের সাব্বিরের বলে ধারণা করেছিলো তার পরিবার। তবে বৃহস্পতিবার ঢাকায় এসে সব লাশ দেখে তারা নিশ্চিত করেছেন নিহতদের মধ্যে সাব্বিরের লাশ নেই।

আস্তানায় নিয়মিত যেত তামিম চৌধুরী: কানাডা প্রাবাসী জঙ্গি তামিম চৌধুরী কল্যাণপুরের জঙ্গি নিয়মিত আস্তানায় যেত বলে তথ্য পেয়েছে মামলার তদন্ত সংস্থা। বছরদুয়েক আগে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক সিলেটের তামিম চৌধুরী দেশে ফিরে আত্মগোপন করেন। এ ঘটনায় মিরপুর থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারেও তার বিষয়ে তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। তামিম চৌধুরীই দেশীয় জঙ্গিদের আন্তর্জাতিক যোগাযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় তার যাতায়াতের বিষয়টি গ্রেফতারকৃত আসামি রাকিবুল হাসান ওরফে রিগেন পুলিশকে জানিয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, তামিম চৌধুরী বর্তমানে জেএমবির নতুন অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সে দেশেই আত্মগোপন করে আছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। হাসানের দেয়া তথ্যে তামিম চৌধুরী ও জোনায়েদ খান ছাড়া অন্য নামগুলো জঙ্গি নেতাদের ছদ্মনাম বলে মনে হয়েছে। কারণ জঙ্গিরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নামে ও পরিচয়ে তাদের কার্যক্রম চালায়। তারপরও শারীরিক অবয়বের বর্ণনা শুনে ও গোয়েন্দা তথ্য মিলিয়ে তাদের কয়েকজনকে শনাক্ত করা গেছে।
থানায় মামলা : কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে ৯ জঙ্গি নিহত হওয়ার ঘটনায় বুধবার রাতে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার বাদী ইন্সপেক্টর সাজ্জাদ হোসেন। মামলা নম্বর-৪৮। মামলায় নিহত ৯ জঙ্গি এবং তাদের কয়েক সহযোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় বলা হয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আস্তানা থেকে আটক রাকিবুল হাসান রিগেন জানিয়েছে, কল্যাণপুরে তাদের আস্তানায় তামিম চৌধুরী, রিপন, খালিদ, মামুন, মানিক, জোনায়েদ খান, বাদল ও আজাদুল ওরফে কবিরাজ নামে ব্যক্তিরা নিয়মিত যাতায়াত করত। তারা তাদের ধর্মীয় ও জিহাদি কথাবার্তা বলে উদ্বুদ্ধ করত। প্রয়োজনীয় টাকা-পয়সা দিয়ে যেত। মামলায় কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে তামিম চৌধুরী, রিপন, খালিদ, মামুন, মানিক, জোনায়েদ খান, বাদল ও আজাদুল ওরফে কবিরাজ আত্মগোপনে রয়েছে।

জব্দ তালিকায় ৫৪ ধরনের আলামত: কল্যাণপুরের জাহাজ বিল্ডিংয়ের সেই আস্তানা থেকে অস্ত্র ও গোলা-বারুদসহ ৫৪ রকমের আলামত জব্দ করেছে পুলিশ। মামলায় পৃথক দুটি জব্দ তালিকায় এসব উপকরণের বিস্তারিত বিবরণ দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, সিআইডির ক্রাইমসিন বিভাগ ও মিরপুর মডেল থানা পুলিশের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে জঙ্গি কর্তৃক ব্যবহৃত ঘটনাস্থলে থাকা নিহত জঙ্গিদের ব্যক্তিগত মালামাল এবং ঘটনাস্থলে থাকা অন্যান্য আলামত বিধি মোতাবেক দুটি জব্দ তালিকায় জব্দ করা হয়।
পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি জানান, ৫ মাস আগে মাসুদ রানা পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর আত্মগোপন করে রায়হান কবির ওরফে তারেক। এরপর থেকে সে নিখোঁজ। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়িতে গেলে স্থানীয়রা জানান, গ্রামের দরিদ্র কৃষক শাহজাহান মিয়া ও রাহেলা বেগমের দ্বিতীয় ছেলে তারেক। তাদের পূর্বপুরুষরা টাঙ্গাইল থেকে পীরগাছায় গিয়ে বসতি করেন। এ কারণে এলাকাটির নাম হয় টাঙ্গাইলপাড়া। তারেক পীরগাছার দামুরচাকলা দেওয়ান সালেহ দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২০১৩ সালে দাখিল পাস করে। পরে ছাত্রশিবিরে যোগ দেয়। সে টাঙ্গাইলপাড়ায় সিদ্দিকুর রহমান বাংলা ভাইয়ের প্রতিষ্ঠিত মসজিদ দেখাশুনার কাজ করত। মসজিদে থাকার সুযোগে জেএমবির আঞ্চলিক কমান্ডার মাসুদ রানার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় তারেকের। মাসুদ রানার সঙ্গে তারেক এলাকায় জেএমবির দাওয়াতি কাজ করত। বিভিন্ন জনকে যমুনার দুর্গম চরে নিয়ে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ দিত। ৫ মাস আগে মাসুদ রানা গ্রেফতার হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে জাপানি নাগরিক কোনিও হোশি এবং কাউনিয়া উপজেলার চৈতার মোড় সুরেশ্বর দরবার শরিফের খাদেম রহমত আলী হত্যার সঙ্গে জড়িতের কথা স্বীকার করে।
তারেকের মা রাহেলা বেগম বলেন, তিন মাস আগে তিনি অসুস্থ হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ওই সময় একবার তারেক তাকে দেখে যায়। সেটাই ছিল শেষ দেখা।
পীরগাছা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বৃহস্পতিবার রায়হানের লাশ নেয়ার বিষয়ে জানতে তিনি তাদের বাড়িতে যান। পরিবারের লোকজন প্রথমে লাশ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়। পরে রায়হানের মা রাহেলা বেগম সন্তানের লাশ নিতে রাজি হন।

তাড়িয়ে দেয়া হয়েছিল নাইমের পরিবারকে : কল্যাণপুরে নিহত জঙ্গি আবু হাকিম নাইমের বাড়ি টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল গ্রামে। নাইমের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কারণে তার পরিবারকে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল গ্রামবাসী। টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার এসব তথ্য জানান। তবে ডিএমপির প্রকাশিত তথ্যে তার বাড়ি পটুয়াখালীর কুয়াকাটা লেখা হয়েছে। নাইমের বাড়ি টাঙ্গাইল হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহিপুর থানার ওসি মাকসুদুর রহমান। তিনি জানান, আবু হাকিম নাইম যে ঠিকানায় ভোটার হয়েছিলেন, সেই ঠিকানায় গিয়ে খোঁজ নিয়ে তার পরিবারের সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নাইম ২০০৬-২০০৭ সালের দিকে কুয়াকাটার সাগরনীড় হাউজিং নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। সেখানকার ঠিকানা ব্যবহার করে ভোটার হন তিনি। অনেক দিন থেকে তাকে কুয়াকাটায় দেখা যায়নি। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মাহবুব আলম জানান, নাইমের সঙ্গে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা থাকায় ২০১৩ সালে গ্রামবাসী নাইম এবং তার পরিবারকে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরে তারা প্রথমে জামালপুরে ও পরে পটুয়াখালী চলে যায়। বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার চাপাইদ গ্রাম থেকে নাইমের স্ত্রীর বড়ভাই মাওলানা আবদুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় ডিএমপি পরিচালিত অপারেশন স্টর্ম টোয়েন্টি সিক্সে নিহত হয় ৯ জন। এ সময় পালিয়ে যায় ইকবাল নামে একজন।