হাসানহাটির আকবরকে কুপিয়ে জখম : কবিখালীর মঞ্জুরকে গণধোলাই

চুয়াডাঙ্গার কবিখালী গ্রামে সন্ধ্যারাতে বোমার বিস্ফোরণ : ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার কবিখালী গ্রামে বোমা মেরে ও তাড়িয়ে ধরে আকবর আলী নামের একজনকে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। পরে গ্রামবাসী মঞ্জুর নামের এক হামলাকারীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে ঘায়েল করেছে। গতরাত সাড়ে ৮টার দিকে কবিখালী তেমাথায় এ ঘটনা ঘটে। আহত দুজনকেই চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঞ্জুর আলীর অবস্থা গুরুতর বলে হাসপাতালসূত্রে জানা গেছে। কবিখালীর অনেকেই বলেছে, মঞ্জুর হামলাকারী সন্ত্রাসী। তাকে ধরে গণধোলাই দেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি চাইনিজ কুড়ুল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের মাছেরদাড়ী গ্রামের কয়েকজন দুটি মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। তারা কবিখালী গ্রামের তেমাথার কাছে পৌঁছুলে তাদের লক্ষ্য করে বোমা চালায় দুর্বত্তরা। মোটরসাইহেল আরোহীরা মোটরসাইকেল ফেলে দৌড়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। কিন্তু আকবর নামের একজন মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের কব্জায় পড়ে যান। তার পেছন দিক থেকে চাইনিচ কুড়ুল দিয়ে কোপাতে থাকে এক দুর্বৃত্ত। এ সময় মোড়ের অদূরবর্তী দোকানে বসে থাকা লোকজন ও স্থানীয়রা হামলাকারীদের তাড়িয়ে ধরার চেষ্টা করে। অন্য হামলাকারীরা পালিয়ে গেলেও মঞ্জুর নামের একজনকে গণপিটুনি দেয়া হয়। সংবাদ পেয়ে সদর থানা পুলিশ মারাত্মক আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি চাইনিচ কুড়ুল উদ্ধার করেছে।

ঘটনাস্থলে থাকা কয়েকজন জানান গতকাল মঙ্গলবার নীলমণিগঞ্জ বাজার ফিরছিলেন মাছেরদাড়ী গ্রামের আলী, জসিম ডাক্তার ও তার ভগ্নিপতি হাসানহাটি গ্রামের আকবার আলী (৪৫)। রাত সাড়ে ৯টার দিকে কবিখালী গ্রামে পৌঁছুলে তাদের ওপর এ হামলা হয়। বোমাটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও পরে তাড়িয়ে ধরে আকবরকে কুপিয়ে জখম করে এক দুর্বৃত্ত।  পরে কবিখালী গ্রামের লোকজন ওই দুর্বৃত্তকে গণধোলাই দেয়। গ্রামবাসী ওই হামলাকারীর পরিচয় দিতে গিয়ে বলেন তার নাম মঞ্জুর (৩৫)। সে দিগড়ি গ্রামের আলিমউদ্দিনের ছেলে।এদিকে হামলার খবর পেয়ে পেয়ে রাত ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মামুন, এসআই শরিফুল ও এএসআই শাহ আলম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে কবিখালী থেকে মারাত্মক আহত অবস্থায় মনঞ্জুরকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি চাইনিজ কুড়ুল উদ্ধার করে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে এলাকাবাসী হামলাকারী মঞ্জুরের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে বলে গ্রামের কেউ কেউ জানান।

এদিকে আহত চাইনিজ কুড়ুলের কোপে আহত আকবরকে রাত ১১টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে নিতে দেরি কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তার লোকজন জানায়, আবারো হামলার ভয়ে হাসপাতালে নিতে দেরি হয়েছে।

অন্যদিকে জখম মঞ্জুর আলী ও তার স্বজনরা জানান, কবিখালী মোড়ের চায়ের দোকানে মঞ্জুরসহ কয়েকজন বসে ছিলেন। এ সময় একই গ্রামের রমজান আলীর ছেলে ইমান আলীসহ ৪/৫ জন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। কিছুক্ষণ পরেই সেখানে যান মোমিনপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দার। তারপরেই কবিখালী গ্রামের আলিমদ্দিনের ছেলে মঞ্জুর আলীর (৩০) ওপর হামলা চালায় একদল যুবক। এছাড়া, একই গ্রামের সাজেদার মণ্ডলের ছেলে বিশারত, আব্দুল জব্বারের ছেলে রনি, রিয়াজুল হোসেনের ছেলে সোহেল ও রমজান আলীর ছেলে ইমান আলী ধারালো অস্ত্র দিয়ে মঞ্জুরের মাথায় কুপিয়ে জখম করে বলে জানান তার পাশে থাকা লোকজন। পরে একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তারা চলে যায়। স্থানীয়রা মঞ্জুর আলীকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেয়। এদিকে জখম মঞ্জুর আলী বলেছেন, ইউপি নির্বাচনে নৌকার পক্ষে সমর্থন করায় তার ওপর এ হামলা চালানো হয়েছে। জখম মঞ্জুর আলীর মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজিবুল ইসলাম।