দেশের সম্মানজনক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতেই গুলশান হামলা : প্রধানমন্ত্রী

 

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, জঙ্গিবাদ এখন বৈশ্বিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা নিরলসভাবে কাজ করে সারাবিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি একটি সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু গুলশানে হামলার ঘটনা সেটাতে একটা ছেদ এনে দিলো। তিনি বলেন, গুলশানের হামলার পর আমরা সম্মান হারাইনি। ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাস্ট্র, ফ্রান্সসহ বিশ্বের অনেক দেশই আক্রান্ত হচ্ছে। তবে আমার কষ্ট লেগেছে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কষ্ট করে যখন সবদিক থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, তখনই এই হামলা চালিয়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করা হলো। তারা চায় সারাবিশ্বের কাছে আমরা মাথা উঁচু করে যেন কথা বলতে না পারি। বাংলাদেশ সব সময় ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে চলবে- এটাই তারা চায়।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, যারা ভাল খায়, ভাল পরে তারাই এখন জঙ্গিবাদের সাথে জড়াচ্ছে। কিন্তু তাদের তো কোনI অভাব নেই, চাওয়া-পাওয়ারও কোনI কমতি নেই। যেখানে তাদের কোন কিছুই অপূরণীয় থাকে না, সেখানে কেন তারা এটা করছে এর যৌক্তিকতা কী? তারা এখন বেহেস্তের হুরপরি পাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর যৌক্তিকতাই বা কোথায়? কারা তাদের পেছন থেকে উস্কাচ্ছে, কারা অস্ত্র দিচ্ছে, কারা অর্থ যোগাচ্ছে তাদের খুঁজে বের করা হবে। যারা ধর্মের দোহাই দিয়ে জঙ্গি কর্মকান্ডে লিপ্ত তাদের উদ্দেশে তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন, মানুষ খুন করলে বেহেস্তের দরজা খোলে না। গতকাল রবিবার বিকালে গণভবনে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। মঙ্গোলিয়ার উলানবাটোরে অনুষ্ঠিত এশিয়া-ইউরোপ (আসেম) শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান শেষে শনিবার রাতে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী। ওই শীর্ষ সম্মেলনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। লিখিত বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। দেশের সরকারি ও বেসরকারি টেলিভিশনগুলো অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে।

এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি-জামায়াতের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। অবশ্য যারা যুদ্ধাপরাধী, দেশে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে তাদের কথা আলাদা। তারা তো সর্প হয়ে দংশন করে, আর ওঝা হয়ে ঝাড়তে চায়। তিনি জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় তার সরকারের অনুসৃত ‘জিরো টলারেন্স’ অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যার যার অবস্থান থেকে সবাইকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আতঙ্ক সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যেই গুলশানের আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলা চালানো হয়। তবে মানুষের জীবন চলমান, জীবন থেমে থাকে না। যারা ধর্মের নামে তরুণদের জঙ্গিবাদে জড়াতে উস্কানি দিচ্ছে তাদের চিহ্নিত করা হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সব সময় সন্ত্রাসবিরোধী, জঙ্গিবাদবিরোধী। দেশের মানুষকে এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদকে একটি বৈশ্বিক (গ্লোবাল) হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, একবার যখন ঘটনা ঘটেছে, তারা তো বসে থাকবে না। ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছে। তবে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ অত্যন্ত কঠোরভাবে দমনে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে দেশের মানুষও আজ জেগে উঠেছে।

তিনি বলেন, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোকে দেশের প্রতিটি এলাকায় কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো প্রতিবেশি ও উন্নয়ন সহযোগীদের সাথেও এ বিষয়ে সহযোগিতা ও তথ্য বিনিময়ের সমঝোতা হয়েছে। গুলশান হামলার কয়েকদিনের মধ্যে সারাদেশে জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এমন জাগরণ পৃথিবীর কোন দেশই করতে পারেনি। মাত্র দুই দিনে ৮টি বিভাগের ৬৪টি জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে আমি টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেছি। সারাদেশের গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত জঙ্গিবাদবিরোধী কমিটি গঠন করা হচ্ছে। প্রশাসনের পাশাপাশি দেশের জনগণও বিপথগামীদের খুঁজে খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করবে।

সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের সাথে ঐক্য করলে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ নির্মুল হবে, সেই জনগণের সাথে ইতোমধ্যে জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছে। এটা বাস্তব। দেশের মানুষ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। গ্রামে গ্রামে সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি হচ্ছে। সর্বস্তরের মানুষ মানুষ সচেতন হয়ে উঠছে। এবার ঈদের নামাজে সনাতম ধর্মের যুবকেরা পাহারা দিয়েছে। এটা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের এক বিরল দৃষ্টান্ত।

গুলশানে হামলার ঘটনার তদন্ত প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, এই জঙ্গি হামলার ঘটনা তদন্ত চলছে। অপেক্ষা করুন। তদন্তের স্বার্থে এখন সব কিছু বলা যাবে না। তবে যেসব তথ্য আসছে তা তাজ্জব হওয়ার মতো। তদন্ত শেষ হলে সব কিছুই বুঝতে পারবেন। তদন্তধীন বিষয় নিয়ে বেশি খোঁচাখুচি না করার জন্যও তিনি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কিছু পদলেহনকারী ও চাটুকাররা কাউকে ক্ষমতায় বসাতে চায়।  যারা চায়নি ২০১৪ সালের নির্বাচন হোক তারাই নানা কর্মকান্ড ঘটাচ্ছে। তবে  গুলশানের জঙ্গি হামলার মতো ঘটনা বাংলাদেশে নতুন নয়। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার শিকার আমি নিজেই হয়েছি। ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর থেকেই আমার ওপর একের পর এক হামলা হয়েছে। সম্প্রতি ট্রাক চালিয়ে ফ্রান্সে বহু মানুষ হতাহতের ঘটনা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এই ঘটনা আমাদের দেশেও হয়েছে। জিয়াউর রহমানের আমলে আমাদের মিছিলের ওপর গাড়ি চালিয়ে অনেক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। এরশাদ সরকারের আমলেও ট্রাক তুলে দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ‘মরলে শহীদ, বাঁচলে গাজী’, ‘বৃষ্টির মতো গুলি কর’- প্রকাশ্য এই স্লোগান দিয়ে কারা আওয়ামী লীগের মিছিলে গুলিবর্ষন করে আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করেছিল, সেকথা দেশবাসী ভুলে যায়নি। শুধু তাই নয়, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত এবং অবরোধের নামে প্রকাশ্য পেট্টোল বোমা মেরে পুড়িয়ে পুড়িয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। মসজিদ-মন্দির-প্যাগোডা-গীর্জা সবখানে হামলা চালানো হয়েছে, কোরআন শরিফ পর্যন্ত পুড়িয়ে দিয়েছিল তারা। আমরা সবকিছু মোকাবেলা করেই দেশকে উন্নয়ন-অগ্রগতির সোপানে নিয়ে যাচ্ছি। ঠিক তখনি আবারও গুলশানে হামলা হলো। তবে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করতে যা যা করার সরকার থেকে তার সবই করতে বদ্ধপরিকর।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুলশানের হামলার পর বিশ্বের অনেক দেশই আমাদের সহযোগিতা করতে চেয়েছে। শুধু বাংলাদেশেই নয়, অনেক উন্নত দেশও জঙ্গিবাদের হামলায় আক্রান্ত হচ্ছে। সেজন্য এই সমস্যা মোকাবেলায় বিশ্বের সব দেশকেই একে অপরকে সহযোগিতা করতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আমি জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে  গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছি। কারণ এটি এখন বৈশ্বিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারা জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করছে, অস্ত্রের ডিলার কারা, কারা মদদ দিচ্ছে- সবকিছুই সম্মিলিতভাবে খুঁজে বের করতে হবে।

ভারতীয় এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সারাদেশেই প্রতিরোধ গড়ে উঠছে। দেশের জনগণের মধ্যে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি করছি। দেশের কোন মানুষই জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ দেখতে চায় না। কারা এসব ঘটাচ্ছে, কাদের সন্তানরা বিপথে পা দিচ্ছে- তা জনগণের সচেতনতার মাধ্যমেই খুঁজে বের করা হবে। তিনি বলেন, দুঃখ লাগে একজন শিক্ষক হয়ে ছাত্রকে কীভাবে মুত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। জঙ্গি বানায়।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু ঘটলে কী এতো দ্রুত সবকিছুর তদন্ত শেষ করা যায়। আমি নিজেই তো ভুক্তভোগী। বাবা-মা, ভাই, পরিবারের সদস্যদের হত্যার বিচার পাওয়ার জন্য আমাকে ৩৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। এখনকার মতো তখন তো অনেককে এজন্য এতো সোচ্চার হতে দেখিনি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একে একে সব হত্যাকান্ডের বিচার করছি।

‘আলোচনা ও ঐক্য হলেই সন্ত্রাস বন্ধ হবে’-সম্প্রতি বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের (বিএনপি-জামায়াত) সাথে আলোচনা করলে সব সন্ত্রাস-জঙ্গি হামলা বন্ধ হবে, না করলে তারা এসব কর্মকান্ড চালিয়েই যাবেন- তারা কী এটাই বলতে চাচ্ছেন? অনেক শীর্ষ জঙ্গির বিচার বছরের পর বছর আটকে থাকা প্রসঙ্গে অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত শীর্ষ জঙ্গির বিচার ঝুলে আছে, এটা সত্যিই দুঃখজনক। তাদের বিচার হলে একটি দৃষ্টান্ত সৃষ্টি হতো, এসব কর্মকান্ডের সাথে জড়িতরা বুঝতে পারতো এসব করলে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি তাদেরও হতে হবে। তিনি বলেন,  আমরা চাই যারা চিহ্নিত এবং সাজাপ্রাপ্ত তাদের সাজাটা যেন দ্রুত কার্যকর হয়।

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের সফলতা তুলে ধরে সংবাদ সন্মেলনে বলেন, বাংলাদেশ সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বমন্দার মধ্যেও দেশের প্রবৃদ্ধি ৬ ভাগ থেকে ৭ ভাগে উন্নীত করেছি। শুধুমাত্র ব্যক্তিস্বার্থের কারণে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু সততার সাথে দেশ পরিচালনা করছি বলেই আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করছি।

আসেম সম্মেলনে দেশের ভাবমূর্তি আরো সুসংহত হয়েছে: এবারের আসেম সম্মেলনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ অত্যন্ত ফলপ্রসূ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিখিত বক্তব্যে বলেন, সামগ্রিকভাবে এবারের আসেম সম্মেলনে অংশগ্রহণ বৈশ্বিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে আরও উজ্জ্বল, দৃশ্যমান এবং সুসংহত করেছে। ১১ তম এশিয়া-ইউরোপ সম্মেলন (আসেম) ১৫ ও ১৬ জুলাই মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাটোরে অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের সম্মেলনে, ‘সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা শুধু প্রশংসিতই হয়নি, বাংলাদেশকে এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। শান্তি ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের ভূমিকা বিশেষভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসেম সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা তিনি বিশ্ব নেতাদের জানিয়েছেন। সম্মেলন চলাকালিন ফ্রান্সের নিসে সন্ত্রাসী হামলা এবং তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থান এবং সম্প্রতিক বিভিন্ন সন্ত্রাসী ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশ্বনেতৃবৃন্দ সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে নিন্দা এবং প্রতিবাদের পাশাপাশি ভবিষ্যতে এই অভিন্ন ইস্যু মোকাবেলায় একযোগে কাজ করে যাবার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। সন্ত্রাসের উত্স খুঁজে বের করার বিষয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে তাঁর আহবানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি- যেন জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসে মদতদাতা, অর্থদাতা ও প্রশিক্ষণদাতাদের খুঁজে বের করা হয়।’

তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সব সময়ই অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী সে সময় বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন বলেও জানান। প্রধানমন্ত্রী আসেম সম্মেলনের সাইড লাইনে জার্মানীর চ্যান্সেলর অ্যানজেলা মারকেল, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ’সহ কয়েকজন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের সরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পাশাপাশি ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাওলো জেন্টিলোনি সিলভেরি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীও পৃথক বেশ কিছু গুরত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ গ্রহণ করেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহারা খাতুন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম মাহমুদ আলী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেস্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। এছাড়া মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।