আলমডাঙ্গায় যুবতী ধর্ষণ : সালিসে ধর্ষিতার পরিবারকে একঘরে

 

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গার মাদারহুদা গ্রামের ধর্ষিতার পরিবারকে একঘরে করা হয়েছে। গ্রাম্য সালিসে তাদেরকে ক্ষতিপূরণ বাবদ তাদেরকে দেড় লাখ টাকা দেয়া হয়। কিন্তু ধর্ষিতার পরিবার টাকা না নিয়ে বিচারের দাবি জানায়।  সালিসে করা জরিমানার টাকা না নিয়ে বিচার চাওয়ার কারণে তাদেরকে এক ঘরে করা হয়েছে। এ নিয়ে গ্রামে শুরু হয়েছে নানামুখী আলোচনা-সমালোচনা।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালা ইউনিয়নের মাদারহুদা গ্রামের যুবতীকে একা পেয়ে প্রতিবেশীর সহযোগিতায় ঘরে আটকে রেখে ধর্ষণ করে কলেজছাত্র একই গ্রামের হাফিজুল। ধর্ষনের কথা কাউকে বলে দিলে অ্যাসিড মেরে মুখ ঝলসে দেয়ার হুমকি দেয় সে। ধর্ষনের ফলে যুবতী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এর ৬ মাসের মাথায় অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায় ধর্ষিত যুবতীর। বিয়ের মাস না ঘুরতেই নববধূ আন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি টের পেয়ে যায় স্বামী-শাশুড়ি। তারা যুবতীকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। এ নিয়ে মাদারহুদা গ্রামে সালিস বসে। সালিসে অভিযুক্ত হাফিজুলকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ওই টাকা ধর্ষিতাকে দেয়ার জন্য সালিসে রায় দেয়া হয়। কিন্তু ধর্ষিতার পরিবার টাকা নয়, আমরা বিচার চাই বলে বেঁকে বসে এবং আলমডাঙ্গা থানায় মামলা করেন। এ কারণে ধর্ষিতার পরিবারকে উল্টো ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সাথে তাদেরকে একঘরে করা হয়েছে। গত বুধবার গ্রামে এ সালিস বসে বলে গ্রামসূত্রে জানা যায়। ধর্ষিতার পরিবারকে একঘরে করা ও ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করার ব্যাপারে গ্রামের মাতবর আলাউদ্দিনের কাছে মোবাইলফোনে জানতে চাইলে তিনি আমতা আমতা করে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গ্রামের লোকজন তাদের একঘরে করেছে আমার কোনো দোষ নেই। গ্রামবাসী যা চেয়েছে আমি শুধু তার রায় দিয়েছি। টাকার ব্যাপারে বলেন ৩০ হাজার টাকা আমার কাছে আছে, বাকি ৫০ হাজার টাকার ব্যাপারে কিছু জানি না।

ধর্ষিতার পরিবারে লোকজন অভিযোগ করে জানান, গ্রামের মাতবর আলিউদ্দিন ও গ্রামের যুবলীগের নামধারী নেতা সোনা মিয়া ধর্ষিতার পরিবারকে গ্রাম ছেড়ে ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ধর্ষিতার পরিবারটি এখন অসহায় দিন যাপন করছে। তারা চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার ও মানবাধিকার সংস্থার সুদৃষ্টি কামনা করেছে।