দালালচক্রের গাঢাকা : টোল আদায়ের ঘাট ফজলুর দখলে

 

দর্শনা অফিস: দর্শনা হল্টস্টেশন এলাকায় একের পর এক ঘটছে দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার মূলে রয়েছে মাদক ও চোরাকারবারীদের কাছ থেকে টোল আদায়। স্টেশন এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে বিরাজ করছে উত্তেজনা। ঘটছে হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা। এরই মধ্যে মাসুম বাহিনীকে হটিয়ে মিনারুল বাহিনী ঘাট দখল করলেও বেশি দিন টিকতে পারেনি। মাসুম ও তার সাঙ্গপাঙ্গের অত্যাচারে অতিষ্ঠ স্টেশন এলাকার মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস বেশিদিন ছাড়তে পারেনি। পরপরই মিনারুল তার সাঙ্গপাঙ্গের অত্যাচার শুরু হয়। মিনারুল বাহিনীর হামলার শিকার হয়েছেন দর্শনা পৌর কাউন্সিলর আ.লীগ নেতা হাসান খালেকুজ্জামান। এ হামলার প্রতিবেদন পত্রিকায় প্রকাশের জের ধরেই দালালচক্রের সদস্যরা হামলা চালায় সাংবাদিক চঞ্চল মেহমুদের ওপর। পরপর দুটি হামলার ঘটনায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা ও থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। ১ মাসের ব্যবধানে হামলাকারীদের সাথে মাসিক চুক্তিকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় দর্শনা হল্টস্টেশন জিআরপি ফাঁড়ির ইনচার্জ এএসআই ফজলুল করিমের। ফজলুল করিমের সাথে দ্বন্দ্বের মাশুল গুনতে হয়েছে ফাঁড়ির কনস্টেবল জিয়াউল হুদাকে। হামলাকারীরা ঈদুল ফিতরের দিন বিকেলে প্রকাশ্য দিবালোকে জিয়াউল হুদার ওপর হামলা চালিয়ে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে। এ ঘটনায় জিয়াউল হুদা বাদী হয়ে পোড়াদহ জিআরপি থানায় ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। দামুড়হুদা থানা ও জিআরপির যৌথ অভিযানে ওই রাতেই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি কুষ্টিয়া মিরপুর এলাকার সিমারুল ইসলামের ছেলে সুজনকে গ্রেফতার করে। পরদিন জিআরপি পুলিশ স্টেশন এলাকা থেকে দামুড়হুদা ডুগডুগির মোজাম্মেল হকের ছেলে হালিমকে গ্রেফতার করে। হালিম এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি নয় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও পুলিশ বলেছে, সে ওই বাহিনীর সক্রিয় সদস্য। অভিযোগ উঠেছে, সারাদেশে ফেনসিডিল, লাগেজ মালামাল পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে দর্শনা হল্টস্টেশন। যে কারণে হল্টস্টেশন এলাকায় দালালচক্রের আধিপাত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে চলছে দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব। জিআরপি কনস্টেবল জিয়াউল হুদার ওপর হামলার পর থেকে মিনারুল, ফারুক, রানা ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা গাঢাকা দিয়েছে। ফলে থেমে নেই স্টেশন এলাকায় টোল আদায়। ঈদের পরের দিন থেকেই টোল আদায়ের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন ফাঁড়ির ইনচার্জ এএসআই ফজলুল করিম। মাদক ও চোরাকারবারীদের কাছ থেকে নিয়ম মাফিক টোল আদায় করছেন ফজলুল করিম। তবে মিনারুল বাহিনীর সদস্যরা সটকে পড়ার সাথে সাথে হল্টস্টেশন ঘাট দখলে মেতেছে কেউ কেউ। দখলের রশি টানাটানিতে শেষ পর্যন্ত কার দখলে যাচ্ছে মাদক ও চোরাচালানী নিয়ন্ত্রণ ঘাট তা এখন দেখার অপেক্ষামাত্র। দর্শনাবাসী দালালমুক্ত স্টেশন দেখার আশায় চুয়াডাঙ্গা-৬ বর্ডার গার্ড পরিচালক ও পুলিশ সুপারের সুদৃষ্টি কামনা করেছে।