বাংলাদেশি তিন যুবকের ছবি দিয়ে আইএসের নতুন ভিডিও

 

মাথাভাঙ্গা মনিটর: গুলশানে হলি আর্টিজানে হামলাকারীদের অভিনন্দন জানিয়ে কথিত আইএসের বার্তা সংস্থা আমাক টেলিগ্রাম ও টুইটারের মাধ্যমে একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে। কথিত আইএসের যোদ্ধা পরিচয় দিয়ে তিন যুবকের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে এক যুবক বলেন, আজকের জিহাদ অতীতের মত নয়। আরো হামলার জন্য প্রস্তুত থাকুন। আমাদের শেখ আদনানির তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার আদেশ তামাশা নয়। বাংলাদেশে যা হয়েছে তা শুধু শুরু। আমরা শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করবো। আল্লাহর নাম নিয়ে বলছি, যে পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে শরীয়া স্থাপন না হবে সেই পর্যন্ত আমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবো। আমাদের হারানোর কিছু নেই।

কথিত আইএসের এই ভিডিওতে যোদ্ধা হিসাবে পরিচয় দেয়া যুবকের নাম আরাফাত ওরফে তুষার। বাংলাদেশের আইটেম গার্ল ও মডেল নায়লা নাঈমের সাবেক স্বামী তিনি। প্রয়াত মেজর (অব.) ওয়াশিকুর আজাদের ছেলে তুষারের (মুখভর্তি দাড়ি) সঙ্গে ২০১১ সালে নায়লা নাঈমের বিয়ে হয়। পরে ছাড়াছাড়ি হয় তাদের। ঢাকা ডেন্টাল কলেজ থেকে পাস করা দন্ত চিকিত্সক তুষার প্রায় দুই বছর ধরে নিখোঁজ। আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল থেকে এসএসসি এবং রাজউক থেকে এইচএসসি পাস করেন তিনি। বারিধারার ডিওএইচএসে তাদের বাসা। ভিডিওতে মুখ ঢাকা যুবক তৌসিফ হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর সাবেক ছাত্র। বিবিএ ১৮ ব্যাচে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া শেষ না করেই বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়েন তিনি। জেএমবি সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। পরে তাকে পরিবারের পক্ষ থেকে অস্ট্রিয়া পাঠানো হয়। তবে সেখানে তিনি নেই বলে তার বন্ধুরা জানিয়েছেন।

ভিডিওতে অপর যে যুবককে দেখা গেছে, তিনি তাহমিদ রহমান শাফি ক্লোজআপ ওয়ান তারকা। ২০০৭-০৮ সালে ক্লোজআপ ওয়ান প্রতিযোগিতায় প্রথম দিকে ছিলেন তিনি। তাহমিদ সাবেক নির্বাচন কমিশনার সফিউর রহমানের ছেলে বলে তার সাবেক সহপাঠী ও সহকর্মীরা জানিয়েছেন। ২০০২ সালে ঢাকার নটরডেম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাসের পর ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ এবং আইবিএ থেকে এমবিএ করেন তিনি। পরে মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণ ফোনে চাকরি নেন তাহমিদ। ২০১১ সালের মাঝামাঝি সেখানে ইস্তফা দেন। রাজধানীর নিকুঞ্জ-১ আবাসিক এলাকার ৮ নম্বর রোডের ১ নম্বর বাড়িটি প্রয়াত সফিউর রহমানের। ভিডিও ফুটেজ প্রকাশের পর ৭ জুলাই তার বাসায় গেলে নিরাপত্তা প্রহরী জানান যে, গণমাধ্যমের কাছে কেউ কথা বলবেন না। এলাকার বাসিন্দারা জানান, গত বছরের মে মাসে তাহমিদ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। তার বাবা সফিউর রহমান ১৯৯৬ সালে জনতার মঞ্চের একজন অন্যতম নেতা ছিলেন। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সফিউর রহমান স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে অবসরে যাওয়ার পর সরকার তাকে নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিয়োগ দেয়। ২০১৪ সালের ১৮ আগস্ট ৭৫ বছর বয়সে মারা যান তিনি।