গাংনীতে গ্রামীণ খেলাধুলা প্রতিযোগিতা

 

গাংনী প্রতিনিধি: ঈদ আনন্দকে আরো রাঙিয়ে তুলতে মেহেরপুর গাংনীতে হয়ে গেলো গ্রামীণ খেলাধুলা প্রতিযোগিতা। ঈদের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার হাইস্কুল ফুটবল মাঠে স্থানীয় কিছু তরুণ এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। বস্তাদৌঁড়, হাড়িভাঙ্গা, তৈলাক্ত কলাগাছে উঠা, গোল্লাছুটসহ বিলুপ্ত প্রায় গ্রামীণ বিভিন্ন খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করেন প্রতিযোগীরা। শুধু শিশুরা নয়, বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। ভিন্ন এ আয়োজন উপভোগ করতে বিভিন্ন এলাকার দর্শকরা ভিড় করেন।

চৌগাছার মেরিনার রফিকুর রশিদ রানা ও তার বন্ধু সালা উদ্দীন কাদের আন্টু ও মামুনুর রশিদ শান্তসহ বেশ কয়েকজন মিলে গত বছরের ন্যায় এবারো প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে সব বয়সী মানুষের অংশগ্রহণ থাকায় প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। শিশুদের দুষ্টুমি, যুবক-যুবতীদের উচ্ছাস ও বয়স্কদের শৈশবের স্মৃতিতে ফিরে যাওয়ার মধ্যদিয়ে এগিয়ে চলে প্রতিযোগিতা। শিশুরা যেমনি মেতেছিলো তাদের চিরচেনা খেলার মধ্যে তেমনি বয়স্করা খেলছিলেন বিলুপ্ত প্রায় খেলাধুলা। প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়েননি মায়েরা। হাড়িভাঙ্গা ও সুচে সুতা পরিয়ে মায়েরা আবারো প্রমাণ করলেন সংসার সামলানোর খেলায় তারাই সেরা। বালিশ খেলার ঝুল ফঁকিতে অংশ নিয়ে বিভিন্ন বসয়ী মায়েরা হাসলেন ও হাসালেন উপস্থিত দর্শকদের।

এদিকে অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিলো তৈলাক্ত কলাগাছ বেয়ে ওপরে ওঠা। মধ্য বয়সী কৃষকদের সাথে তরুণ কৃষকরা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রমাণ করলেন কৃষকরা কতো কঠিন কাজে অভ্যস্থ। মায়েদের পাশাপাশি বাবারাও পিছিয়ে ছিলেন না। কাগজে হাতির চোঁখ আকানো ছবিতে চোখের মণি চিহ্নিত করে প্রমাণ করলেন বয়োবৃদ্ধ হলেও এখনো তাদের চোখের জ্যোতি তেমন ঘাটতি হয়নি।

এছাড়াও শিশুদের লম্বা দৌঁড়, বস্তা দৌঁড়, মেয়েদের স্প্রিং খেলা, চামচে কাঁচের গুটি দৌঁড়সহ আবহমান গ্রাম বাংলার কোনো খেলাই যেন বাদ পড়েনি। সব মিলিয়ে এক নির্মল আনন্দ-বিনোদনের মধ্যদিয়েই সন্ধ্যায় প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। কোনো দাতা কিংবা অনুদানের অর্থ নয়, আয়োজক ছাত্রদের লেখাপাড়ার খরচ থেকে সারা বছর কিছু কিছু সঞ্চয়ের অর্থ দিয়েই পুরস্কারসহ অনুষ্ঠানের সব খরচ মেটানো হয়।