এবার শোলাকিয়া ঈদগাহের পাশে জঙ্গি হামলা : নিহত ৪

 

স্টাফ রিপোর্টার: গুলশানের জঙ্গি হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার জঙ্গিদের হামলা। এবারের টার্গেটস্থল কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ। ঈদের দিন বৃহস্পতিবার সকালে জামাত শুরুর সোয়া ঘন্টা আগে সকাল পৌনে ৯টার দিকে শোলাকিয়া ময়দানের অদূরে পুলিশের চেকপোস্টে হামলা চালায় জঙ্গিরা। বোমা মেরে, চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে এমনকি গুলি করে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের হতচকিত করে দেয় জঙ্গিরা। মুহূর্তের ঘোর কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ান পুলিশ সদস্যরা। পাল্টা গুলি ছোড়েন। জঙ্গিদের গুলি, বোমা ও চাপাতির কোপে দুই পুলিশ কনস্টেবল মারা যান। মৃত্যু হয় এক জঙ্গি দলের সদস্যের। আর পাশেই নিজ বাড়িতে ঘরের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান ঝর্ণা রানী ভৌমিক নামে এক গৃহবধূ। প্রায় দুই ঘন্টা ধরে জঙ্গিদের সাথে পুলিশের গোলাগুলি চলে। গ্রেফতার হয় দুই জঙ্গি। তাদের কাছ থেকে অস্ত্র, গুলি ও চাপাতি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, জঙ্গিরা পুলিশি বাধা না পেলে হয়ত ময়দানের মধ্যেই চলে যেত। সেখানে হামলা চালিয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষকে হতাহত করাই ছিলো তাদের উদ্দেশ্য। তবে কেউ কেউ বলছেন, জঙ্গিদের হামলার আসল টার্গেট ছিলেন মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। কারণ যে মাঠে হেলিকপ্টারে তার নামার কথা তার পাশেই হয়েছে এই হামলা। পুলিশের আইজি এ কে এম শহীদুল হক গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেছেন, গুলশান আর শোলাকিয়া একই সূত্রে গাঁথা। জেএমবির জঙ্গিরাই এই হামলা চালিয়েছে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় মসজিদের খতীব মাওলানা দীন ইসলাম জানান, তিনি ওই রাস্তা দিয়ে শোলাকিয়া ময়দানের দিকে যাচ্ছিলেন। হঠাত বোমার শব্দে হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। দেখেন আকস্মিক এই আক্রমণে পুলিশ সদস্যরা হতভম্ব হয়ে পড়েছেন। নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছোটাছুটি করছেন। কনস্টেবল জহিরুল ইসলাম (২৪) চেকপোস্ট সংলগ্ন মুফতি মোহাম্মদ আলী (রহ.) জামে মসজিদের টয়লেটে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করলে সেখানেই তাকে চাপাতি দিয়ে কোপায় হামলাকারীরা। পুলিশের সাথে সন্ত্রাসীদের গুলি বিনিময়ের সময় এক জঙ্গি পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়।

নিহত জঙ্গির নাম আবির রহমান (২৩)। সে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ত্রিবিদ্যা গ্রামের সিরাজুল ইসলাম সরকারের পুত্র এবং ঢাকার নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র। সে ঢাকার বসুন্ধরা এলাকায় ভাড়া করা বাসায় পরিবারের সাথে থাকত। গত ১ মার্চ  বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়ে নিখোঁজ হয়। ঈদের আগের দিন তার পিতা রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি জিডি করেন (জিডি নং-২৯৪)। নিহতের শরীর তল্লাশি করে একটি বিদেশি পিস্তল ও একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়।

এদিকে গুলি বিনিময়ের সময় ঘরের ভেতরে গৃহবধূ ঝর্ণা রাণী ভৌমিক মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘরের মধ্যেই মারা যান। তিনি স্থানীয় গৌরাঙ্গ নাথ ভৌমিকের স্ত্রী। অন্যদিকে আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে কনস্টেবল জহিরুল ইসলামের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত  কনস্টেবল আনছারুল হক, রফিকুল, প্রশান্ত, তুষার, জুয়েল, মতিউর ও এএসআই মতিউরকে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে কনস্টেবল আনছারুল হককে ময়মনসিংহ সিএমএইচে নেয়ার পর সেখানে তার মৃত্যু হয়। নিহত কনস্টেবল (নং-১৪৭৬) জহিরুল ইসলাম ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া বালাশর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মজিদের পুত্র এবং কনস্টেবল (নং-১৪৩০) আনছারুল হক নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি গ্রেনেড উদ্ধার করে। গত শুক্রবার দুপুরে ৱ্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থল সংলগ্ন একটি পুকুর থেকে ২টি অত্যাধুনিক চাইনিজ কুড়াল ও একটি চাপাতি উদ্ধার করে।

হামলায় অংশ নেয় ৭/৮ জন এবং ক্ষিপ্রগতির: শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের পাশে বোমা হামলার ঘটনায় ৭ থেকে ৮ জনের একটি দল অংশ নেয় এবং তারা ছিলো ক্ষিপ্রগতি সম্পন্ন। প্রত্যক্ষদর্শীরা এ তথ্য জানান। প্রত্যক্ষদর্শী হাবিবুর রহমান বলেন, কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক এই ময়দানে হামলাকারীরা সংখ্যায় ৭ থেকে ৮ জন ছিলো। বোমা হামলার পর পুলিশ ও হামলাকারীদের মধ্যে দফায় দফায় গুলি বিনিময় হয়। হামলাকারীরা প্রথমে আজিমউদ্দীন স্কুলের আশপাশের বাড়িতে ঢুকে পুলিশের ওপর গুলি চালায়। এ সময় পুলিশও পাল্টা অবস্থান নিয়ে গুলি করে।

তিনি আরও জানান, পরে খবর পেয়ে দুপুরের দিকে পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থা মিলে এলাকাটি ঘিরে ফেলে। এ সময় শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন আবদুল হান্নানের বাসা থেকে এক সন্দেহভাজন হামলাকারীসহ দুজনকে আটক করে পুলিশ। এছাড়া আরেক সন্দেহভাজনকে শোলাকিয়া মাঠের পাশ থেকে আটক করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, হামলাকারীরা প্রচণ্ড ক্ষিপ্রতার সাথে পুলিশের ওপর হামলা করে। তারা বোমা নিক্ষেপের সাথে সাথে চাপাতি দিয়ে পুলিশের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পুলিশ সদস্যরা পালানোর চেষ্টা করলে তাদের এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। পুলিশ গুলি চালালে তারাও দ্রুততার সাথে পাল্টা গুলি ছোঁড়ে।

চাপাতি রাখার বিশেষ পোশাক: শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের পাশে বোমা হামলার ঘটনায় নিহত সন্দেহভাজন যে পোশাক পরেছিলো তা ছিলো চাপাতি রাখার বিশেষ ধরনের পোশাক। নীল রঙের ওই পোশাকের ভেতরে বিশেষ কায়দায় চাপাতি জাতীয় অস্ত্র রাখার চেম্বার ছিলো বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, অল্পবয়সী ওই ছেলের পরনে ছিলো নীল রঙের ঢোলা পাঞ্জাবি ও ঢোলা পায়জামা এবং পায়জামার ভেতরেও জিনসের একটি প্যান্ট পরা ছিলো। সেই প্যান্টের মধ্যেই কোমর থেকে হাঁটুর ওপর পর্যন্ত বিশেষ চেম্বার বানানো ছিলো। ওই চেম্বারে চাপাতি জাতীয় লম্বা অস্ত্র রাখা যায়। পুলিশ আরও জানায়, হামলার পর পোশাক বদলে হামলাকারীরা সাধারণ জনগণের সাথে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করে এবং হামলার পর আজিম উদ্দিন স্কুলের আশপাশের বিভিন্ন বাড়িতে ঢুকে যায়।

ভিডিও ফুটেজে- পিস্তল, চাপাতি ও বোমা হাতে দৌড়ে যায় হামলাকারীরা: কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের পাশে বোমা হামলার ঘটনার একটি ভিডিওতে পুলিশের ওপর হামলার আগ মুহূর্তের দৃশ্য দেখা গেছে। ভিডিওতে পিস্তল, বোমা ও চাপাতি হাতে দুই যুবককে দৌড়ে যেতে দেখা যায়। পুলিশ জানায়, হামলাস্থল আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের সবুজবাগের একটি ভবনের ছাদে বসানো সিসি ক্যামেরায় ওই চিত্র ধরা পড়ে। হামলার দিন সকাল ৮টা ৪৩ মিনিট থেকে ওই ভিডিও ধারণ হয়েছে। ভিডিওতে প্রথমে দেখা যায়, আতঙ্কিত অবস্থায় এক তরুণ ও দুই শিশু রাস্তার একপাশ দিয়ে দৌড়াচ্ছে। এ সময় দৌঁড়ে আসতে দেখা যায় এক আনসার সদস্যকেও। সে সময় পাশ থেকে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন তিন তরুণী, যাদের গতিবিধিতেও ছিলো ভয়।

এরপরই অস্ত্র হাতে দুই তরুণের ছুটে আসার দৃশ্য ধরা পড়ে ক্যামেরায়। দুজনের পরনেই ছিলো পায়জামা-পাঞ্জাবি। একজনের মাথায় টুপিও ছিলো। এছাড়া দুজনের ডান হাতেই পিস্তল, আর টুপি মাথায় থাকা তরুণের বাঁ হাতে বোমা এবং নীল পাঞ্জাবি পরিহিত অন্যজনের বাঁ হাতে ছিলো চাপাতি। তাদেরকে দৌঁড়ে ওই জায়গা দিয়ে চলে যেতে দেখা যায়। ধারণা করা হচ্ছে নীল পাঞ্জাবি পরা ওই যুবকই আবির রহমান। যে গুলিতে মারা গেছে।

টার্গেট ছিলেন মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ!: শোলাকিয়ায় ময়দানের পাশে জঙ্গিদের হামলার ঘটনায় আসলে টার্গেট ছিলো কী? সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ যে মাঠে হেলিকপ্টারে নামেন তার পাশেই হয়েছে এই হামলা। আসলে তাকে টার্গেট করেই হামলাকারীরা এগিয়েছিলো। কিন্তু তার আসার সময়টি একটু আগে-পরে হওয়ায় পুলিশের ওপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। জঙ্গিদের এই কার্যক্রমের বিরুদ্ধে মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদই এক লাখ আলেমের স্বাক্ষর নিয়েছেন। তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছিলো আলেমদেরই একটি গ্রুপ। সংশ্লিষ্টরা এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন।

জেএমবি জড়িত- ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইজিপি: পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক গতকাল শনিবার দুপুরে জঙ্গিদের হামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি সমগ্র এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখেন। পরে তিনি হামলার সময় গুলিতে নিহত ঝর্ণা রাণী ভৌমিকের বাড়িতে যান এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান। পরে আইজিপি ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, জেএমবি সদস্যরা এই হামলার সাথে জড়িত। এরাই ঢাকার গুলশানে হোটেলে হামলা চালিয়েছিলো। গ্রেফতারকৃত একজন হামলার সাথে জেএমবির সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।

সন্দেহভাজন এক হামলাকারী মানসিক ভারসাম্যহীন: কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলাকারী সন্দেহে আজিমউদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে গ্রেফতার করা জাহিদুল হককে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি করেছে তার পরিবার। গতকাল শুক্রবার কিশোরগঞ্জ শহরের মনিপুরঘাট এলাকায় জাহিদুলের বাড়িতে গেলে তার পরিবার তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি করে। তারা বলেন, বছর দুয়েক আগে মা মারা যাওয়ার পর থেকে তিনি অসুস্থ। এক বছর আগে হঠাত পড়াশোনা ছেড়ে দেন তিনি। এরপর থেকে তিনি বাসাতেই থাকতেন। প্রায়ই বাসা থেকে কাউকে কিছু না বলে দু-এক দিনের জন্য বের হয়ে যেতেন। তিনি কিশোরগঞ্জের ওয়ালি নেওয়াজ খান কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ঢাকায় তিতুমীর কলেজে ইংরেজিতে স্নাতক (সম্মান) পড়ছিলেন। অসুস্থতার কারণে তিনি পড়াশোনায় নিয়মিত না।

জাহিদুল ছাড়াও তার এক বড় ভাই ফয়সাল আহমেদ দীর্ঘদিন একই রোগে ভুগছেন বলে দাবি করলেন তার বাবা আবদুস সাত্তার। গতকাল জাহিদুলের বড় ভাই ফয়সালকে বাসার সামনে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতে দেখা গেছে। মো. আবদুস সাত্তার দাবি করেন, জাহিদুলকেও গত তিন মাস শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতে হয়েছে। সপ্তাহ খানেক আগে একটু স্বাভাবিক আচরণ করলে বাঁধন খুলে দেয়া হয়। ঈদের নামাজ পড়তে শোলাকিয়া মাঠে গিয়েছিলো। কিন্তু সেখান থেকে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেছে। কোথায় আছে, কেউ বলছে না।

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ওদের পরিবার দাবি করেছে যে সে মানসিক ভারসাম্যহীন। তবে তারা এটাও বলেছে যে সে মাঝেমধ্যে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যেত। ফলে এটা আমরা মিথ্যাও ধরছি না, সত্যও মনে করছি না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

হামলাকারী শরিফুল আটক হয় ময়মনসিংহে: শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের পাশে বোমা হামলার ঘটনায় এক যুবককে ময়মনসিংহ থেকে আটক করেছে ৱ্যাব। সন্দেহভাজন এই যুবকের নাম আবু মুক্তাদিল ওরফে শরিফুল। তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার বাড়ি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট এলাকায়। বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ ৱ্যাব-১৪ এর লেফটেন্যান্ট কর্নেল শরীফ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আটক শরিফুল ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন।

শুক্রবার দুপুরে শ্রম ও জনশক্তি প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে তিনি নিহত গৃহবধূ ঝর্ণা রাণী ভৌমিকের বাসায় যান এবং পরিবার-পরিজনদের সান্ত্বনা দেন। এসময় তার সাথে ছিলেন রেজওয়ান আহম্মদ তৌফিক এমপি, অ্যাডভোকেট সোহরাবউদ্দিন এমপি, মো. আফজল হোসেন এমপি, জেলা প্রশাসক মো. আজিমুদ্দীন বিশ্বাস ও পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান প্রমুখ।

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ওসি মীর মোশাররফ হোসেন শনিবার বেলা একটার দিকে জানান, এই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।

আমাদের দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, শরিফুল প্রায় আড়াই বছর ধরে নিখোঁজ ছিলো। তার বাড়ি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার রানীগঞ্জ বাজারের পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ দেবীপুর গ্রামে। তার আটক হওয়ার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই পরিবারের লোকজন বাড়িতে তালা দিয়ে আত্মগোপন করেছে। তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার বাড়ি মূল ফটকে রয়েছে তালা দেয়া। তার বাবার নাম হাই প্রধান। পেশায় একজন ইলেক্ট্রনিক মিস্ত্রি। তিনি গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ে বিভিন্ন হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি এবং জামায়াতের সমর্থক। মামলা দায়েরের ঘটনার পর থেকেই তিনি পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে পলাতক রয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৱ্যাব তার চাচাতো ভাই এনামুল হককে আটক করে নিয়ে গেছে।