নৌকায় ভোট দিতে রাজি না হওয়ায় হিন্দু নারীকে পিটিয়ে হাসপাতালে

 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: নৌকায় ভোট দিতে রাজি না হওয়ায় কৌশুল্লা রানী (৪৫) নামে এক হিন্দু নারীকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা। তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ৯টার দিকে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার দক্ষিণ গোপালপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শৈলকুপা থানার ওসি মহিবুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চত করেছেন।

শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন কৌশুল্লা রানী জানান, তিনি বাড়িতে রান্নার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। গতকাল শনিবার সকাল ৯টার দিকে শৈলকুপার ১৩ নং নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী মফিজুল ইসলামের সমর্থক মানিক, রুবেল ও মুক্ত তার বাড়িতে নৌকা প্রতীকের জন্য ভোট চাইতে যান। তিনি আরো জানান, আমি নৌকার পরিবর্তে স্বতন্ত্র (আ.লীগের বিদ্রোহী) প্রার্থী ফারুক হোসেনের আনারস প্রতীকে ভোট দেয়ার ইচ্ছার কথা জানালে তারা আমাকে বেধড়কভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। যাওয়ার সময় তারা নৌকায় ভোট না দিলে দক্ষিণ গোপালপুর গ্রামের হিন্দুদের গ্রাম ছাড়া করারও হুমকি দিয়ে যায় বলে কৌশুল্লা রানী অভিযোগ করেন। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মফিজুল ইসলাম জানান, ভোট চাওয়ার সময় কৌশুল্লা রানীর ছেলেদের সাথে আমার সমর্থকদের কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় বিষয়টি থামাতে গেলে ওই নারী পড়ে আহত হন। তাকে মারধর করা হয়নি। তিনি আরো জানান, আমি খবর পেয়ে তার বাড়িতে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে এসেছি এবং চিকিৎসার জন্য এক হাজার টাকাও দিয়েছি।

এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানার ওসি মহিবুল ইসলাম জানান, ভোট না দেয়ার কারণে শৈলকুপার দক্ষিণ গোপালপুর গ্রামে এক হিন্দু নারীকে মারধর করা হয়েছে বলে শুনেছি। খবর পাওয়া মাত্র সেখানে থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই ইকবাল হোসেনকে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান। এদিকে শুক্রবার রাতে শৈলকুপার বাগুটিয়া বাজারে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারুক হোসেনের সমর্থকদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুট-পাট করা হয়েছে। নৌকার সমর্থকরা এই হামলার জন্য দায়ী বলে ফারুক অভিযোগ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন শনিবার রাতে বাগুটিয়া বাজারে হাফিজুল ইসলাম ও শিমুলের ব্যাবসা-প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। আওয়ামী লীগের প্রার্থী মফিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ করছে তার প্রতিপক্ষ।

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম হামলা ভাঙচুর প্রসঙ্গে বলছেন ১টি দোকানে ভাঙচুর হয়েছে। তবে সেখানকার নির্বাচনী পরিবেশ ভালো আছে, পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টহল দিচ্ছে। উল্লেখ্য, আগামী ৪ জুন ঝিনাইদহের শৈলকুপার ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।