টাকা জমা দেয়ায় হয়রানির শিকার সাইকেল মালিকরা : মোটরসাইকেল আটক : দামুড়হুদায় পুলিশ-গ্রামবাসী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় রেজিস্ট্রেশন বিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চলছে। জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ এ অভিযান পরিচালনা করছে। এতে গাড়ির মালিকরা চরম হয়রানির শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে মোটরসাইকেল মালিকরা বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছে। দামুড়হুদার বিষ্ণুপুরে মোটরসাইকেল চেকিং নিয়ে পুলিশ-গ্রামবাসীর মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
চুয়াডাঙ্গার যানবাহন মালিকদের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও জেলায় রেজিস্ট্রেশনের টাকা জমা দেয়ার জায়গা না থাকায় তারা টাকা জমা দিতে পারছেন না। এমনই অভিযোগ করেছেন রেজিস্ট্রেশন বিহীন গাড়ির মালিকরা।
জানা গেছে, চুযাডাঙ্গায় মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশনের জন্য টাকা জমা নেয়া হচ্ছে না কোথাও। গাড়ির মালিকদের মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মাগুরা ও যশোরে যেতে হচ্ছে টাকা জমা দিতে। কারণ হিসেবে তারা জানান, বিআরটিএ’র সাথে যে সমস্ত ব্যাংকের টাকা জমা নেয়ার চুক্তি আছে তার একটা ব্যাংকের শাখাও চুয়াডাঙ্গাতে নেই। পুলিশ গতকাল বৃহস্পতিবার রেজিস্ট্রেশন বিহীন প্রায় ২০০ গাড়ি আটক করেছে। পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, খুলনা বিভাগের প্রতিটি জেলায় এ অভিযান চলছে।
চুয়াডাঙ্গার জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) ছূফী উল্লাহ জানান, রেজিস্ট্রেশন বিহীন গাড়ির মালিকরা টাকা জমা দেয়ার জায়গা না পাওয়ায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এটা যে বিভাগ টাকা জমা নেয়ার দায়িত্বে আছে তাদের বিষয়। এক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার নেই। কারণ রেজিস্টেশনবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে। আর এ অভিযান চলছে চলবে। চুয়াডাঙ্গা বিআরটিএ সিল ম্যাকানিক জাকির হোসেন জানান, আগে চুয়াডাঙ্গায় ইউসিবিএল ব্যাংকে রেজিস্ট্রেশনের টাকা জমা দিতেন গাড়ির মালিকরা, কিন্তু বিআরটিএ’র সাথে ইউসিবিএল ব্যাংকের চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে এখন আর টাকা জমা নিচ্ছে না তারা। তবে আমরা বার বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছি। আশা করছি সামনে সপ্তাহের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে।
দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদার বিষ্ণুপুরে মোটরসাইকেল চেকিংয়ের সময় তামিম (১৫) নামের এক যুবককে চড়থাপ্পড় মারাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে গ্রামবাসীর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ৪টার দিকে বিষ্ণুপুর বাজারে ওই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার বিষ্ণুপুর পুলিশ ফাঁড়ির আইসি লুৎফর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গতকাল বিকেলে বিষ্ণুপুর বাজারের ওপর মোটরসাইকেল চেকিং করছিলেন। এ সময় ওই গ্রামের আশাদুলের ছেলে তামিম মোটরসাইকেল নিয়ে বাজারে পৌঁছুলে পুলিশ তার মোটরসাইকেলের গতি রোধ করে এবং কাগজপত্র দেখতে চাওয়ার নাম করে তাকে চড়থাপ্পড় মারে। এ সময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একই গ্রামের আলফাজের ছেলে মিরা (২৫) ঘটনাটির প্রতিবাদ করলে পুলিশ তাকেও চড়থাপ্পড় মারে। তাদেরকে চড়থাপ্পড় মারতে দেখে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন আওয়ামী লীগ নেতা মতিয়ার রহমান মতি। তিনি কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, আপনারা মোটরসাইকেল চেকিং করছেন করুন। কাগজপত্র না থাকলে গাড়ি নিয়ে যান। ওর গায়ে হাত দিলেন কেন? এ কথা বলার সাথে সাথে পুলিশ তাকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসে এবং পুলিশের ওপর চড়াও হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত সটকে পড়তে গিয়ে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে আহত হন পুলিশ সদস্য রাশেদ। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি লিয়াকত হোসেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় উত্তেজিত জনগণ আইসি লুৎফর ও আকরামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন এবং অবিলম্বে তাদের বদলির দাবি জানায়।
মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, আলমডাঙ্গার মুন্সিগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশ গতকাল বিকেলে অভিযান চালিয়ে চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা সড়ক থেকে ৬টি মোটরসাইকেল আটক করেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে আলমডাঙ্গার মুন্সিগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই রনজিত কুমার দাশ আলমডাঙ্গার মুন্সিগঞ্জ বাজারের চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা সড়কে অভিযান চালিয়ে ৬টি রেজিস্ট্রেশন বিহীন মোটরসাইকেল আটক করে। আটক মোটরসাইকেল গুলো মামলাসহ পুলিশ ফাঁড়িতে আটক রাখা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানিয়েছে।