শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নিতে গিয়ে কুষ্টিয়ায় ধর্ষণের শিকার শিক্ষিকা

মুজিবনগর আম্রকানন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুলের আত্মগোপন

 মুজিবনগর/কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: মেহেরপুর মুজিবনগরের আম্রকানন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম বিদ্যালয়েরই খণ্ডকালীন শিক্ষিকাকে ধর্ষণ করেছেন। কুষ্টিয়ায় নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নিতে গেলে একটি হোটেলে ধর্ষণের শিকার হন খ্রিষ্টান ধর্মালম্বি শিক্ষিকা। পরীক্ষার দিন সকালে ধর্ষণের শিকার হওয়ায় শিক্ষিকা পরীক্ষার কেন্দ্রের বদলে তাকে যেতে হয় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ঘটনাটি ঘটে গতপরশু শুক্রবার। ধর্ষণের শিকার খণ্ডকালীন শিক্ষিকা গতকাল শনিবার বাড়ি ফিরে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। অপরদিকে ঘটনার পর থেকেই প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম আত্মগোপন করেছেন।

কুষ্টিয়াতে নিবন্ধন পরীক্ষা দিতে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মুজিবনগর আম্রকানন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন খ্রিষ্টান ধর্মীয় শিক্ষিকা (২৫)। এ ঘটনা জানাজানি হলে অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠতে থাকে। গতপরশু শুক্রবার সকালের কুষ্টিয়ার একটি হোটেলে ধর্ষণের শিকার হলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নিতে না পেরে খণ্ডকালীন স্কুল শিক্ষিকা পরীক্ষা কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার ভবরপাড়া খ্রিষ্টান ধর্মপল্লির মেয়ে। তিনি জানান, মেহেরপুর সরকারি মহিলা কলেজে সম্মান তৃতীয় বর্ষে পড়ার সময় মুজিবনগর আম্রকানন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন ধর্মীয় শিক্ষক (খ্রিষ্টান) হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি আনার্স শেষে মাষ্টার্স করেন। নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ ছাড়ায় ৩ বছর চাকরি করেন। চলতি বছরের শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য বৃহস্পতিবার তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলামের সাথে কুষ্টিয়া যান এবং সেখানে একটি হোটেলের আলাদা আলাদা রুমে রাত্রি যাপন করেন। সকালে পরীক্ষা অংশ নিতে যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণকালে প্রধান শিক্ষক তার রুমে প্রবেশ করে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। ওই সময় তার পর্যাপ্ত রক্তক্ষরণ হলে তিনি পরীক্ষা হলে না গিয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। এদিকে শফিকুল ওই ঘটনার পর হোটেল থেকে গাঢাকা দেন। বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন।

এদিকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত নার্স লাভলী ভবরপাড়া গ্রামের মেয়ে। তার দেয়া ভয়ভীতি ও পরামর্শে ধর্ষিতা শনিবার দুপুরে নিজ গ্রাম মুজিবনগর উপজেলার ভবরপাড়া গ্রামে ফেরেন। তিনি এসব ঘটনা তার স্বজনদের খুলে বলেন। মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউপির ওয়ার্ড সদস্য ভবরপাড়া গ্রামের দিলীপ মণ্ডল জানান, প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলামকে আসামি করে একটি ধর্ষন মামলা করবেন। এছাড়া আরো চিকিৎসার জন্য পুণরায় হাসপাতালে ভর্তি করবেন। তিনি আরো জানান, এ ঘটনা মুজিবনগর থানা পুলিশে জানানো হয়েছে।

মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী কামাল হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন খবর পেয়ে তিনি ধর্ষণের শিকার শিক্ষিকার বাড়িতে গিয়েছিলেন। তাদের পরিবারকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, মামলা করলে কুষ্টিয়া করতে হবে। সেক্ষেত্রে ধর্ষণের শিকার স্কুলশিক্ষিকার পরিবারকে তিনি সব ধরণের সহযোগিতা করবেন।

ধর্ষক শরিফুল ইসলাম ভবরপাড়া গ্রামের রহমান মোল্লা ওরফে ন্যাড়া মোল্লার ছেলে। মোবাইলফোনে তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।