চুয়াডাঙ্গার তিতুদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য নির্বাচনের বাকি ৭ দিন : দুটি প্যানেলে ৫টি পদের বিপরীতে প্রার্থী ১০

স্টাফ রিপোর্টার: আগামী ২২ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চুয়াডাঙ্গা সদার উপজেরার তিতুদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য পদের নির্বাচন। ৫টি পদের বিপরীতে আ.লীগের ১০ জন প্রার্থী দুটি প্যানেলে বিভক্ত হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছে। দুটি প্যানেলের নেতৃত্বে রয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী আ.লীগের দু নেতা। বিজয়টি নিজের রাজনৈতিক অস্তিত্বের লড়াই মনে করছেন তারা। তবে এ নির্বাচনকে ঘিরে স্থানীয় রাজনীতি বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।

নির্বাচনী তফশিল ও এলাকা সূত্রে জানা গেছ, গত ৩০ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিয়মিত ম্যানেজিং কমিটি গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচনী তফশিল ঘোষণা করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সেই লক্ষ্যে ৩ মে থেকে ৫ মে ছিলো মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও জমাদানের দিন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে ৫টি পদের বিপরীতে মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে ১০টি। এর মধ্যে ৪ জন পুরুষ অভিভাবক সদস্যের জন্য মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ৮ জন এবং ১ জন সংরক্ষিত মহিলা সদস্যের জন্য মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ২ জন। ভোটার সংখ্যা ৫৪৫ জন। অন্যদিকে দুজন পুরুষ শিক্ষক প্রতিনিধির জন্য মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন দুজন এবং একজন মহিলা শিক্ষিকা প্রতিনিধির জন্য একজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। গত ৮ মে ছিলো মনোনয়নপত্র বাছাই, ১০ মে প্রত্যাহার ও প্রতীক বরাদ্দ এবং আগামী ২২ মে নির্বাচনের দিন ধার্য করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন সিলেকশনের মাধ্যমে একজনই সভাপতিত্ব করে আসছিলেন। স্থানীয়ভাবে ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে গ্রুপিং থাকায় বিদ্যালয়টি কেন্দ্র করে রাজনীতি দানা বেঁধে ওঠে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ৫টি পদের বিপরীতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ১০ জন প্রার্থী। স্থানীয়ভাবে ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে গ্রুপিং থাকায় ১০ জন প্রার্থী দুটি প্যানেলে প্যানেল ভুক্ত হয়ে হ্যান্ডবিল তৈরি করে ভোটারদের নিকট ভোট প্রার্থনা করছেন। আ.লীগ নেতা চেয়ারম্যান প্রার্থী শুকুর আলীর নেতৃত্বে প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন তসলিম আহমেদ (মাছ), আজমুল হোসেন (ফুটবল), ছাইদুর রহমান (আম), আসাদুল হক (হাতপাখা) এবং পাপিয়া খাতুন (বই) মার্কা। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা আ.লীগের যুগ্মসাধারণ  সম্পাদক চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান টিপু সমর্থিত প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন আইনাল হক (আনারস), আবু কালাম (চেয়ায়ার), আবুল বাসার (মোরগ), হাফিজুর রহমান (মই) এবং সাহেরা খাতুন (কলস) মার্কা।

বিদ্যালয়টিতে অভিভাবক ভোটার রয়েছেন ৫৪৫ জন। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় পুরুষ শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে সহকারী শিক্ষক শাজাহান আলী ও ইনছান আলী এবং মহিলা শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে তাছলিমা বেগম নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনী প্রতীক হাতে নিয়ে দু প্যানেলের প্রার্থীরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। প্রার্থীদের পাশাপাশি স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীরা প্যানেলের জন্য ভোট প্রার্থনা করছেন। একটি প্যানেলের নেতৃত্বে থাকা আ.লীগ নেতা শুকুর আলী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠন পবিত্র জায়গা। যেখানে আমাদের সন্তানেরা লেখাপড়া করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে রাজনীতি করা ভালো কাজ না। এলাকাবাসীর মতামতকে উপেক্ষা করে একটি মহল দীর্ঘদিন ক্ষমতা আটকে রেখেছিলো যা সুষ্ঠু লেখাপাড়ার ক্ষেত্রে অন্তরায় ছিলো। যাদের সন্তানেরা লেখাপাড়া করে তারা নির্ধারণ করবেন তাদের নেতৃত্ব। আর সেটি যেন গণতন্ত্র উপায়ে নিরেপেক্ষভাবে হয় সে জন্য একটি পক্ষ অবলম্বন করেছি। কোনো অসৎ উদ্দেশে না।

অপর প্যানেলের নেতৃত্বে থাকা মিজানুর রহমান টিপু বলেন, ভোটাররা যোগ্য ব্যক্তিকে তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচিত করবেন এটাই স্বাভাবিক। সেই স্বাভাবিক বিষয়টি যেন অস্বাভাবিক না হয় তার জন্য একটি পক্ষকে সমর্থন করা। এর পেছনে খারাপ কোনো উদ্দেশ্য নেই।

সচেতন মহল মনে করছে সকল প্রকার নির্বাচনে কারো না কারো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থনে থাকে। তিতুদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও তাই হবে। তবে নিজের পছন্দের প্যানেলকে বিজয়ী করতে আ.লীগের প্রভাবশালী এ দু নেতা কষছেন নানা হিসাব-নিকাশ। কারণ নির্বাচনে বিজয়ের সাথে জড়িয়ে আছে আগামী দিনের রাজনৈতিক অস্তিত্ব।