নিজামীর ফাঁসির প্রতিক্রিয়ায় তুরস্কের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার

স্টাফ রিপোর্টার: জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের প্রতিবাদে বাংলাদেশ থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে তুরস্ক। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এই প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স, এপিসহ বিদেশি গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হলেও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সরকারকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের বিষয়ে তুরস্ক কিছু্ই জানায়নি।’

সূত্র জানিয়েছে, বুধবার তুর্কি দূতাবাস এক চিঠিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছে যে, বৃহস্পতিবার থেকে রাষ্ট্রদূত ছুটিতে যাচ্ছেন। গতকালই তুরস্কের রাষ্ট্রদূত ডেভরিম ওসতুর্ক আঙ্কারার আদেশ পেয়ে নিজ দেশে ফিরে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত মঙ্গলবার রাতে নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। পর দিন তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিজামীর ফাঁসি দেয়ায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিও প্রকাশ করে। এর প্রতিবাদে তুরস্কে কয়েকটি বিক্ষোভও হয়। গতকাল বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, নিজামীর ফাঁসি কার্যকরে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। বৃহস্পতিবার আঙ্কারায় দেয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, ফাঁসি কার্যকরের প্রতিবাদে বাংলাদেশ থেকে রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ভাষণে তিনি ইউরোপের দেশগুলোর নেতৃবৃন্দের সমালোচনা করে বলেন, এই ফাঁসির বিষয়ে তারা কোনো কথা বলেনি। এর কারণ যাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে তিনি একজন মুসলিম ছিলেন। আমরা এই ফাঁসির বিরুদ্ধে।

এদিকে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদলু এজেন্সির এক খবরে বলা হয়েছে, ঢাকায় তুরস্কের রাষ্ট্রদূত ডেভরিম ওসতুর্ককে আলোচনার জন্য আঙ্কারায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কূটনৈতিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে ওই খবরে বলা হয়, রাষ্ট্রদূত ডেভরিম ওসতুর্ক গতকাল বৃহস্পতিবার আঙ্কারায় পৌঁছুবেন বলে আশা করা হচ্ছে। রাষ্ট্রদূত ডেভরিম ওসতুর্ক ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকায় দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

তুরস্ক আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানায়নি: তুরস্কের রাষ্ট্রদূত ডেভরিম ওসতুর্ককে ঢাকা থেকে প্রত্যাহারের ব্যাপারে বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানানো হয়নি। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম গত রাতে জানান, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত ওসতুর্ক সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এক চিঠি দেন। এতে জানানো হয়, ১২ মে তিনি ঢাকার বাইরে যাচ্ছেন। তার অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত অন্য এক কূটনীতিক দায়িত্ব পালন করবেন। কোনো দেশ তার রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করলে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর কথা। তুরস্ক তেমন কিছু বাংলাদেশকে জানায়নি। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, তুরস্কের সাথে বন্ধুত্ব বেশ ঘনিষ্ঠ। তুরস্ক নিজামীর ফাঁসির পর যে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে অতীতে এ ধরনের কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে তুরস্কের ব্যাপারে আমরা নজর রাখছি।