কুষ্টিয়ার তালবাড়িয়া জলমহাল ইজারায় অনিয়ম

বিভাগীয় কমিশনারের আদেশ অমান্য করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের পদক্ষেপ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: খুলনা বিজ্ঞ অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রা.) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমানের আদেশ অমান্য করে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার তালবাড়িয়া জলমহাল ইজারা দেয়া নিয়ে এ অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, ১৪২৩-১৪২৫ বাংলা সনে জন্য দরপত্র আহ্বান করে কুষ্টিয়া জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি। সেখানে সরকারী ইজারা মূল্য ধার্য করা হয় ৫৪ হাজার ৬০০ টাকা। সেই দরপত্রে এই জলমহালটি ইজারা নেয়ার জন্য তালবাড়িয়া বিল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার ও শাপলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি ৫ লাখ ৫৩ হাজার ৯৫০ টাকা দরপত্র জমা দেয়। সেখানে দরপত্রে উল্লেখ ছিলো সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশি টাকা যে সমিতি দরপত্র দেবে তাকেই জলমহালটি দেয়া হবে। এখানে তালবাড়িয়া বিল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি শাপলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি চেয়ে অধিক টাকা বেশি দরপত্র আহ্বান করে। তবে বেশি টাকার দরপত্র আহ্বান করা সত্বেও আজ পর্যন্ত এ জলমহালটি তারা পায়নি।

এ ব্যাপারে জেলা জলমহাল কমিটির বিরুদ্ধে একটি মামলা করে তালবাড়িয়া বিল মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি। এই মামলার প্রেক্ষিতে খুলনা বিজ্ঞ অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রা.) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি আদেশ প্রদান করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন কুষ্টিয়া জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির ১০-০২-২০১৬ খ্রিঃ তারিখের সভায় তালবাড়িয়া জলমহালটির পুনঃটেন্ডার আহ্বানের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হলো। প্রথম দফায় দরপত্র দুটি জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির নীতিমালার আলোকে বিচার বিবেচনা পূর্বক যোগ্য সংগঠন/সমিতি অনুকূলে ইজারা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করার আদেশ দেন। তবে যোগ্য মৎস্যজীবী সংগঠন/সমিতি না পাওয়া গেলে সেক্ষেত্রে পুনঃদরপত্র আহ্বানের ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে এবং সেই সাথে অত্র আদালতের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হলো।

বিভাগীয় কমিশনারের এ নির্দেশকে উপেক্ষা করে গত ১৩ এপ্রিল  বুধবার কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবু হেনা মুস্তাফা কামাল ০০.০০.৫০০০.০০৫.৫৫.০০১.২০১৪-৫১১ স্মারকে একটি পত্র জারি করে। এতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দৌলতপুর কুষ্টিয়াকে এই জলমহালটি শাপলা মৎস্যজীবী সমিতির নিকট ইজারা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। তারপরে ১৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার জলমহালটি শাপলা মৎস্যজীবী সমিতির নিকট হস্তান্তর করে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌফিকুর রহমান ও নির্বাহী কমিশনার (ভূমি) নাহিদা আক্তার।

বিভাগীয় কমিশনারের এ নির্দেশকে উপেক্ষা করে কোন আইনে জলমহালটি শাপলা মৎস্যজীবী সমিতিকে ইজারা দেয়া হয়েছে তা কারো বোধগম্য নয়। এ জলমহাল হস্তান্তর নিয়ে বর্তমানে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।