আরও কয়েকদিন দাবদাহের পর স্বস্তির পূর্বাভাস

স্টাফ রিপোর্টার: খুলনা ও রাজশাহী বিভাগসহ টাঙ্গাইলের ওপর দিয়ে প্রবাহমান দাবদাহ আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এরকমই পূর্বাভাস দিয়ে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা আশার বাণী শুনিয়ে বলেছেন, তিন দিনের মাথায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

শুরু হয়েছিলো চুয়াডাঙ্গা দিয়ে ৬ এপ্রিল। ওই দিন চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়ে ৪০ এর দিকে ঝুঁকতে থাকে। এর পর দাবদাহের দাপট সিলেট ছাড়া ঘুরে প্রায় সারাদেশের মানুষকে কষ্ট দিয়েছে। চলতি মরসুমের এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি পর্যন্তই রয়েছে। গতকাল চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ঈশ্বরর্দীতে ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো রংপুরে ২১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে টানা দু সপ্তাহ ধরে দাবদাহ। দিনে প্রচণ্ড খরতাপে জনজীবন অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, উত্তাপের ভোগান্তি থেকে দু একদিনের মধ্যে রেহাই মিলছে না। তবে দুই-তিন দিনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়ে তাপমাত্রা কমে আসতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসেবে, বাংলাদেশের তাপপ্রবাহগুলো সাধারণত তিন থেকে সাত দিন স্থায়ী হয়ে থাকে। বিশেষ করে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে দাবদাহ শুরু হয়। তবে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে অর্থাৎ বোশেখের শুরুতে কালবোশেখি ঝড় হয়। সাথে আসে স্বস্তির বৃষ্টি। ফলে দাবদাহের দাপট কমে আসে। এপ্রিল ও মে মাসে বড়জোর তিন থেকে সাত দিন ওই দাবদাহের দাপট থাকে। কিন্তু চলতি বছর মার্চে দুটি কালবোশেখি ঝড় হলেও এপ্রিলে এখনো কালবোশেখির দেখা মেলেনি। অর্থাৎ কালবোশেখি আগে-ভাগে এসে হানা দিয়ে গেলেও তার যে সময়ে আসার কথা অর্থাৎ বোশেখে তার দেখা মিলছে না। ফলে দাবদাহের দাপটও এবার গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে। টানা ১৫ দিনের দাবদাহের দাপটে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে।

এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, দাবদাহটি মাঝখানে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছিলো। গত দুই দিন ধরে এটি আবার শক্তিশালী হয়ে উঠছে। তবে আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়ে তাপমাত্রা কমে আসতে পারে।

এদিকে গত চার দিন ধরে সারা দেশের আবহাওয়ার উল্টো চিত্র ছিলো সিলেটে। দুই দিন ধরে ওই জেলার বৃষ্টিপাত ধীরে ধীরে কমে আসছিলো। তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টার পর তিন ঘণ্টায় আবার ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সিলেটসহ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাওর এলাকার কৃষকদের জন্য অবশ্য এই বৃষ্টি পাকা ধান নষ্ট হওয়ার নিয়ে ভয় আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে তাপমাত্রা ছিলো ৩৫ দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শেষ দিন হওয়ায় রাজধানীতে যানজটও ছিলো বেশি। যানজট আর গরম-দুইয়ে মিলে নগরবাসীর ভোগান্তি ছিলো অসহনীয়।

গতকালের আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় এবং ঢাকা, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ অঞ্চলসমূহে অস্থায়ী দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজধসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। টাঙ্গাইল ও দিনাজপুর অঞ্চলসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।