রুখতে হবে সন্ত্রাস

 

চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের কুতুবপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় একাধিক ছিঁচকে চাঁদাবাজ গ্যাং গ্রুপ ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। এরা মোবাইলফোনে পার্টি চালানোর নামে চাঁদা দাবি করছে। চাঁদা না দিলে খুনের হুমকি দেয়া হচ্ছে। গতকাল এ বিষয়ে দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় কুতুবপুর ইউনিয়নেরই মহাম্মদজমা গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রীর নিকট চাঁদা দাবিতে খুনের হুমকি দেয়ার খবর ছাপা হয়েছে। বিষয়টিকে কোনোভাবেই খাটো করে দেখা উচিত হবে না। যে জনপদে চাঁদা চেয়ে না পেয়ে প্রবাসীর শিশু সন্তানকে অপহরণের পর নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়, সেই জনপদেই অপর এক প্রবাসীর স্ত্রীকে চাঁদার দাবিতে খুনের হুমকির বিষয়টিকে খাটো করে দেখা কোনোভাবেই উচিত হবে কি?

এক সময়ের রক্তাক্ত জনপদ হিসেবে চিহ্নিত জনপদ অবশ্যই বহুদিন ধরে ভালো আছে। এখন আর তখনকার মতো প্রতিরাতেই মানুষের রক্তে জনপদের মাটি অতোটা ভেজে না। ভীত সন্ত্রস্ততা থেকে কিছুটা হলেও মুক্ত হয়ে তথা আতঙ্ক কাটিয়ে এখন অনেকেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের মাঠপর্যায়ের কর্তাদের কানে খবর দিতেও আগ্রহী। এক সময় এরকম সাহসী মানুষ দূরাস্ত, গ্রাম ছেড়ে শহরে আশ্রয় নেয়ার তালেই থাকতেন সামর্থ্যরা। নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না, সেই ভীতিকর অস্ত্রের ঝনঝনানি নেই। আছে মোবাইলফোন আর বোমা মেরে খুনের হুমকি ধামকি দিয়ে অর্থ আদায়ের অপতৎপরতাসহ সুযোগ বুঝে অপহরণ ও খুন। কয়েক মাস আগেই চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের কুতুবপুরের এক প্রবাসীর শিশু সন্তানকে অপহরণ করে হত্যার পর পার্শ্ববর্তী গলাকাটা মাঠের একটি ক্ষেতে ফেলে রাখা হয়। মামলা হলেও আসামিদের অব্যাহত হুমকির চোটে স্বামীর ভিটে ছেড়ে পিতার বাড়িতে ফিরতে হয়েছে প্রবাসীর সন্তানহারা স্ত্রীকে। এরপর যখন একই এলাকার এক প্রবাসীর স্ত্রীর কাছে টাকা দাবি করে খুনের হুমকি দেয়া হয় তখন তার নিরাপত্তাসহ হুমকিদাতাদের শনাক্ত করে দ্রুত ধরে আইনে সোপর্দ করার বিষয়টি পুলিশের দ্রুত আমলে নেয়া উচিত। মনে রাখতে হবে, আমাদের দেশের অর্থনীতিকে এখনও চাঙ্গা রেখেছে প্রবাসে শ্রমবিক্রি করাদের অর্থে। তাছাড়া সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা রুখতে অবহেলা মানেই তাদের ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার সুযোগ দেয়া। সেই রক্তাক্ত জনপদে ফিরে যাওয়া। যা হবে আত্মঘাতী।

যখন যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাপ ছিলো তখন না হয় প্রত্যন্ত অঞ্চলে অস্ত্রধারীদের ধরতে বেগ পেতে হতো। এখন? যোগাযোগ ব্যবস্থার যেমন উন্নতি হয়েছে, তেমনই যে মোবাইলফোন দিয়ে চাঁদাদাবি ও খুনের হুমকি দেয়া হয়, হচ্ছে তার অবস্থান চিহ্নিত করে চাঁদাবাজ শনাক্তের উপযুক্ত প্রযুক্তি রয়েছে। এরপরও চাঁদাবাজ, গ্যাং গ্রুপের অপতৎপরতা স্থায়িত্ব পায় কীভাবে? অবশ্যই কোথাও না কোথাও দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে। মাঠপর্যায়ে কর্মরত পুলিশ কর্তাদের কতর্ব্য পরায়ণতাই পারে উঠতি চাঁদাবাজ খুনি ও অপহরকচক্রের অপতৎপরতা রুখে তাদের আইনে সোপর্দ করতে। এজন্য দরকার পদস্থ কর্তার বাড়তি তদারকিসহ এলাকাবাসীকে সন্ত্রাসবিরোধী ঐক্যবদ্ধতা।