মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ সারাদেশে নেচে গেয়ে গোটা জাতি বরণ করেছে বঙ্গাব্দ ১৪২৩। গতপরশু ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে উত্সবে মেতে ওঠে জাতি। স্বাগত জানায় ১৪২৩। জীবন হোক ভয়হীন, চলাচল হোক উন্মুক্ত, স্বাধীন। এবারও চুয়াডাঙ্গায় পয়লা বোশেখ রঙ ছড়িয়েছে বাঙালির মনে-গানে, কবিতায়, শোভাযাত্রার উচ্ছ্বলতায়। তবে প্রচণ্ড খরতাপে রাস্তায় তেমন পরিলক্ষিত হয়নি রঙিন সাজ, শাড়ি-পাঞ্জাবির বাহারি ডিজাইন, বর্ণিল পোশাকে শিশুদের মুখের চিরো চেনা আনন্দের হাসি। তবে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা দৃষ্টি কাড়ে সকলকে।
চুয়াডাঙ্গার বিশাল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার অগ্রভাগে ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস, পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান, চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপুসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও এনজিও নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণির পেশাজীবী নিতৃবৃন্দও। এর আগে ঝিনুক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রতিবারের মতো মুকুল ফৌজের বর্ষ বরণের আয়োজনে অতিথিরা অংশ নেন। শোভাযাত্রা শেষে সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা প্রশাসকের বাসা প্রাঙ্গণে পান্তা ভোজে অংশ নেন আন্ত্রিত অথিতিরা। বিকেলে চুয়াডাঙ্গা ভি.জে স্কুলমাঠ চাদমারী মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার, রশীদুর হাসান। পৌরসভার আয়োজনে পৌর বোশেখি মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পৌর মেয়র। সার্বিক তত্ত্বাবধনে ছিলেন পৌর সচিব কাজী শরিফুল ইসলামসহ পৌর কাউন্সিলররা। উদ্বোধন দিন রাত ৮টায় মেলার প্রসারীগুলো বন্ধ করে দেয়া হলেও গতকাল থেকে পুরো দমে মেলা চলছে। চলবে কয়েকদিন। চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ প্রাঙ্গণে ‘নব আনন্দে জাগো’ শীর্ষক বোশেখি অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টায় চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ চত্বরে আবৃত্তি পর্ষদ, চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ ও উদীচী চুয়াডাঙ্গার সম্মিলিত উদ্যোগে ‘নব আনন্দে জাগো’ শীর্ষক বাংলা নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়। অতিথি ছিলেন অধ্যাপক এম এ মুহিত, অ্যাড. বজলুর রহমান প্রমুখ। দ্বিতীয় পর্বে চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের পক্ষে স্বরচিত বোশেখি কবিতা পাঠ করেন, অমিতাভ মীর, আনছার আলী, শওকত আলী, কালুব বারী মাস্টার, শাহাদাৎ সুমন, আব্বাস উদ্দীন, উদীচীর পক্ষে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন হাবিবি জহির রায়হান ও শাহীন সুলতানা মিলি এবং আবৃত্তি পর্ষদের পক্ষে শিশু আবৃত্তিকার প্রাচী ও তার দল বোশেখি কবিতা আবৃত্তি করে শোনায়। অনুষ্ঠানের তৃতীয় পর্বে উদীচী চুয়াডাঙ্গার সঙ্গীত শিল্পীবৃন্দ যথাক্রমে আদিল হোসেন, ডালিয়া, আরিফ (১), ফরিদ, সেলিম, জুয়েল, আরিফ (২) প্রমুখ মনোজ্ঞ সঙ্গীত পরিবেশন করেন। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন উদীচী চুয়াডাঙ্গার সম্পাদক হাবিবি জহির রায়হান।
অপরদিকে চুয়াডাঙ্গার তিতুদহের ছোট সলুয়ায়ায় বোশেখি মেলার আয়োজন করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নের গাইদঘাট প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত মেলায় জুয়া ও ভেরাইটি শোর আয়োজন করা হলে ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে। পরে অবশ্য স্থানীয় সচেতন যুবকদের বিশেষ তৎপরতায় মেলা ভেস্তে দেয়া হয়।
ডিঙ্গেদহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, পহেলা বোশেখ উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা সদরের শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নে র্যালি ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৮টায় ডিঙ্গেদহ বালিকা বিদ্যালয়, সোহরাওয়ার্দ্দী স্মরণী বিদ্যাপীঠ ও উদীচির বর্ণাঢ্য র্যালি ডিঙ্গেদহ বাজার প্রদক্ষিণ শেষে সকাল ৯টায় বালিকা বিদ্যালয়ে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরীফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন শঙ্করচন্দ্র ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক শাহাদত হোসেন, ইউপি মেম্বার শওকত আলী, এসএমসি সদস্য সাইফুদ্দিন, আব্দুস ছাত্তার, রোকমান হোসেন প্রমুখ। অপরদিকে বেলা ২টা থেকে ডিঙ্গেদহ বাজারে উদীচি ডিঙ্গেদহ শাখার উদ্যোগে বাউল সঙ্গীতের আসর বসে। অনুষ্ঠানে এলাকার বাউল শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করে দিনটিকে মাতিয়ে তোলে।
বদরগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বদরগঞ্জ বাজারে পৃথকভাবে ২টি স্থানে ভালোবাসার বোশেখ উৎসব নামক কর্র্মসূচি পালন করা হয়েছে। কুতুবপর ইউনিয়ন যুলীগের উদ্যোগে বদরগঞ্জ পানের হাটে অনুষ্ঠিত নতুন বছরকে বরণ করে নিতে আয়রে চলে আয়! এক আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। কুতুবপুর ইউপি যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামের সৌজন্যে অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন কুতুবপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হাজি শাখাওয়াত হোসেন টাইগার।
অপরদিকে বদরগঞ্জ পশুহাট নামক স্থান, মিন্টু মিয়ার পুকুর পাড় নামক স্থানে সকাল ১০থেকে বিকেল পযর্ন্ত বোশেখ উৎসব উদযাপন করার পাশাপাশি নব প্রতিষ্ঠিত যুব ঐক্য পরিষদের উদ্বোধন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থেকে কুতুবপুর ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আলী হাসানুজ্জামান মানিক প্রতিষ্ঠানটির উদ্বোধন করেন। এ সময় যুব ঐক্য পরিষদ ও বদরগঞ্জ বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টুসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া প্রতি বছরের মতো কুতুবপুর ইউপির বিভিন্ন স্থানে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে উৎসব মেলা বসলেও এলাকার প্রতারকর চক্ররা কৌশলে বিভিন্ন আস্তানার উন্নয়নের নাম ভাঙিয়ে মেলায় বসা মিষ্টি ও চুরি মালার দোকানগুলো থেকে টাকা উত্তোলন করার পাশাপাশি জুয়া খেলার আসর বসায়। কিন্তু মেলার শেষে এসব আস্তানার আর কোনো উন্নয়ন হয়না।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গায় নানা আয়োজন উৎসব ও আনন্দঘন পরিবেশে পালিত হয়েছে বাঙালি জাতির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। সকাল ৮টায় উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে একটি বর্ণাঢ্য বোশেখি শোভাযাত্রা বের হয়। উপজেলা নিবাহী অফিসার আহমেদ কামরুল হাসানের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য বৈশাখী শোভাযাত্রা ও আলোচনাসভায় উপস্থিত ছিলেন মীর আব্দুল হামীদ চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক ডা. সাহাবুদ্দিন আমদেন সাবু, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইয়াকুব আলি মাস্টার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মজিবর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক কাজী রবিউল, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী খালেদুর রহমান অরুন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীম আরা, শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মিলিত হয়।
অপরদিকে, আলমডাঙ্গা গোবিন্দপুর একাদশ বর্ণাঢ্য মঙ্গল শুভযাত্রা করেন। র্যালিতে ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর একাদশ ক্লাবের সভাপতি মতিয়ার রহমান ফারুক সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন পৌর মেয়র উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান কাদির গনু। এরপর, আলমডাঙ্গা নওদা বণ্ডবিল এশিয়া স্পোটিং ক্লাবও বর্ষবরণ উপলক্ষে নানা আয়োজনে রঙ বেরঙে সেজে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করেন। র্যালিটি আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আশরাফুল হক ও ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।
এছাড়াও পহেলা বোশেখ, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ নতুন বছরকে বরণ উপলক্ষে আলমডাঙ্গা মোহনা বন্ধু সমিতি এক বর্ণাঢ্য র্যালিসহকারে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। আলোচনাসভায় সমিতির সভাপতি আচিচুল হক সোমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বহুমুখী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান। সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান সাবুর পরিচালনায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন সমিতির উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্য আনসার আলী, রাজাবুল ইসলাম, সহসভাপতি বোরহান উদ্দিন, বাবুল আক্তার, মানোয়ার হোসেন, কোষাধ্যক্ষ তোফাজ্জেল হোসেন তোতা, আব্দুল হান্নান, সিরাজুল ইসলাম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মাও. আনিচুর রহমান, রেজাউল ইসলাম, শফি, মনিরুজ্জামানসহ অন্যন্যা সদস্যবৃন্দ।
এদিকে পহেলা বোশেখ উপলক্ষে প্রতিবারের ন্যায় আলমডাঙ্গা ফরিদপুরে কুতুব নগরে বোশেখি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলাটি কুতুব শাহ’র নাম অনুসারে গত ১২ বছর ধরে হয়ে আসছে। মেলায় প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বেলা পড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে ভিড় জমায়।
অপরদিকে আলমডাঙ্গার এম সবেদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নববর্ষ উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিদ্যালয়ের সভাপতি জেলা জাসদ সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম সবেদ আলীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন শান্তিনিকেতন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও সাহিত্যরশিক মকবুলার রহমান। প্রধান বক্তা ছিলেন যশোর এমএম কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফিরোজুল ইসলাম। সন্ধ্যায় আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ মঞ্চে ‘আমাদের পঞ্চপাণ্ডবের ভবের হাট’ নামক বাউল গানের আয়োজন করা হয়। একুশে পদকপ্রাপ্ত খোদাবক্স শাহ, বেহাল শাহ, ইউনুস ওরফে উদাস বাউল, শ্রীনাথ গোসাই ও আবু বাক্কা শাহসহ আলমডাঙ্গা এলাকার ৫ মহতের গান পরিবেশন করা হয়। কলেজিয়েট স্কুলের উপাধ্যাক্ষ শামীম রেজার উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত এ সঙ্গীতানুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- আলমডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আফম সিরাজ সামজী, গল্পকার পিন্টু, আলমডাঙ্গা প্রেসক্লাবের একাংশের সভাপতি শাহ আলম মন্টু, অপরাংশের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার রশিদ সাগর, এরপূর্বে দেশব্যাপী চলমান ‘উই ফর অল’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও স্বপ্নঘর ফাউন্ডেশনের স্বপ্নদ্রষ্টা আব্দুল্লাহ আল মামুন, শিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রভাষক ডাক্তার সামিনা আক্তার তন্বী, স্বপ্নঘর-২’র প্রকল্প কর্মকর্তা সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম রোকন, তৌহিদুর রহমানের নেতৃত্বে স্বপ্নঘরের কচিকাচারা সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শহরে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করে।
দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদায় গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পাদদেশে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা বর্ষবরণ গানের মধ্যদিয়ে বোশেখকে বরণ করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয় এবং শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শেষ হয়। শোভাযাত্রা শেষে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান মাও. আজিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল হালিম, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছালমা জাহান পারুল, আব্দুল ওদুদ শাহ ডিগ্রি কলেজের প্রিন্সিপাল কামাল উদ্দীন, উপজেলা কৃষি অফিসার সুফি রফিকুজ্জামান, উপজেলা প্রকৌশলী ইলিয়াস হোসেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসার নূর জাহান, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ কুমার সাহা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ, দামুড়হুদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এম নুরনবী, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজু আহম্মেদ রিংকু প্রমুখ। আলোচনা শেষে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরের তত্বাবধানে লাঠিখেলা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন নাজির হামিদুল ইসলাম। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন উপজেলা আইসিটি টেকনিশিয়ান খাইরুল কবির দিনার।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, পহেলা বোশেখ উপলক্ষে জীবননগরে নেচে গেয়ে ও বর্ণাঢ্য র্যালি করা হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল, ইউএনও নূরুল হাফিজ ও পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিতে পৌরসভা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ক্লাব ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা রঙে সেজে অংশগ্রহণ করে। র্যালি শেষে পান্তা ভাত পরিবেশন করা হয়। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ৭ দিনব্যাপী বোশেখি মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
জীবননগর পৌরসভার উদ্যোগে বাংলা নববর্ষ বরণ করা হয়। এ উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন। জীবননগর মোটরশ্রমিক ইউনিয়ন, লক্ষ্মীপুর যুবসমাজ, আলীপুর ক্লাবসহ বিভিন্ন ক্লাব ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে বর্ষবরণের আয়োজন করা হয়।
দর্শনা অফিস জানিয়েছে, পহেলা বোশেখ উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এ বছরো দর্শনা অনির্বান থিয়েটারের আয়োজনে যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতামূলক বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। পহেলা বোশেখ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে দর্শনা কলেজমাঠ থেকে র্যালির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে অনির্বাণ থিয়েটার কর্তৃপক্ষ। পহেলা বোশেখের প্রথম প্রভাত র্যালিতে অংশ নেয় বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে সিডিএল, মেমনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, লিটিল এনজেলস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, দক্ষিণচাদপুর বিদ্যালয়, দর্শনা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, চিরন্তন দর্শনা, রামাযুস, জেসিডি, শান্তিনগর সংগঠন, দর্শনা প্রেসক্লাব, কেয়াম মেটাল, লালন সংঘ, বন্ধু মহল, সজিব সংগঠন, ওয়েভ ফাউন্ডেশন, প্রত্যয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বে-সরকারি প্রতিষ্ঠান। পরে সন্ধায় অনির্বাণ থিয়োটারের আয়োজনে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
ভালাইপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মুছে যাক সব হিতাহিত নতুন বছর কাটুক ভালো এই স্লোগানে গোকুলখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান পালন করা হয়েছে। অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাকের সভাপিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যালয়ের ম্যনিজিং কমিটির সভাপত্বি আমির হোসেন। উপস্থিত ছিলেন সহকারী প্রধান শিক্ষক ইসপিয়ারা খাতুন, সহকারী শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুস, নাসির হোসেন, শফিউদ্দিন টিটু, বেলাল হোসেন, শহিদুর রহমান সহ অন্যান্য শিক্ষক বৃন্দ।
আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আন্দুলবাড়িয়া নবাই সন্যাসীর নবদুয়া ও নুড়ি তলায় আয়োজক কমিটির উদ্যোগে দিনভর নানা অনুষ্ঠান হয়েছে। নবদুয়ায় নবাই সন্যাসীর ২য় তম মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি শেখ হাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মোল্লা আলী আহম্মদের উদ্যোগে বাউল সঙ্গীতসহ নৌকা ভ্রমণে ছিলো উপচে পড়া ভীড়। নুড়ি তলা আয়োজক কমিটির সভাপতি মির্জ্জা শাহাজান ও আনার ফকিরের উদ্যোগে ওয়াজ মহাফিল অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় এলাকার শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতি অনুষ্ঠান মাতিয়ে তোলে।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে মেহেরপুরে বাংলা নববর্ষ পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহরের শহীদ ড. সামসুজ্জোহা নগর উদ্যান থেকে একটি বর্নাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক ফরহাদ হোসেনের নেতৃত্বে শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। র্যালিতে অন্যান্যের মধ্যে অংশগ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ, জেলা পরিষদ প্রশাসক অ্যাড. মিয়াজান আলী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খায়রুল হাসান, (রাজস্ব) হেমায়েত হোসেন, গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উল্লাহ, জেলা জজ আদালতের পিপি অ্যাড. পল্লব ভট্টাচার্য, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বশির আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আলহাজ আসকার আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল হালিম, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ গোলাম রসুল, মেহেরপুর ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক হাসানুজ্জামান মালেক, জেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদিকা লাভলী ইয়াসমিন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বারিকুল ইসলাম লিজন সহবিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। পরে একই স্থানে পান্তা ভাতের ও মনোজ্ঞ সঙ্গীত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় শিল্পী ও শিশু শিল্পীরা এতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এদিন সকাল ৯ টায় মেহেরপুর জেলা কারাগারে ও শিশু পরিবারে বাঙালি খাবার পরিবেশন করা হয়। বেলা ১০টায় মেহেরপুর স্টেডিয়ামমাঠে গ্রামী খেলা লাঠি খেলা ও কাবাডি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা কারাগারে বেলা ১১ টায় কারাবন্দীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বিকেল ৪টায় ছাত্র-ছাত্রীদের শিশু আনন্দ মেলা ও চিত্রাংক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
অপরদিকে এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী মেহেরপুর জেলা মৎস্য উৎপাদন কেন্দ্রে (আটপুকুর) বস্ত্র বিতরণ, আর্থ সামাজিক উন্নয়নে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাছচাষ সম্পর্কিত আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মেহেরপুরের বিশিষ্ট মৎস্যচাষি শেখ আব্দুল মহিদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা শিল্প ও বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ গোলাম রসুল। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সাজ্জাদুল আনম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের আহ্বায়ক মাহফিজুর রহমান পোলেন। বিশিষ্ট মাছব্যবসায়ী খামশেদ আলীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং বিশিষ্ট মাছব্যবসায়ী ও মৎস্যচাষী রুহুল আমিনের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মৎস্যলীগের খুলনা বিভাগীয় সাংগাঠনিক সম্পাদক লিজন ইসলাম, মেহেরপুর বড়বাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, মৎস্যচাষি শমরেশ হালদার, নূরুল ইসলাম খান মলয় প্রমুখ।