চুয়াডাঙ্গায় আবারও ইউনাইটেড ক্লিনিকে রোগীর মৃত্যু : ভাংচুর

হাটতে হাটতে বাড়ি থেকে বের হয়ে বেলা ঘুরতে না ঘুরতেই লাশ হয়ে ফিরলো রেহেনা খাতুন

স্টাফ রিপোর্টার: হেঁটেই ক্লিনিকের সিঁড়ি মাড়িয়ে ওপরে ওঠেন রোগী রেহেনা খাতুন (৪০)। বিকেলে অপারেশন করা হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে রোগীর মৃত্যু হলে রোগীর দু বোনসহ নিকটজনেরা সান্ত্বনা খুঁজে না পেয়ে দুষতে থাকেন ভাগ্যকে। অবশ্য স্থানীয়রা ভুল অপারেশনের কারণে মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণ আর ঘুমের ওভারডোজ ইনজকেশনের কারণে মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে অভিযোগ তোলেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাড়তে থাকে ক্ষোভ। এক পর্যপায়ে শুরু হয় ভাঙচুর।

রেহেনা খাতুন চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের মজলিশপুর গ্রামের সানোয়ার হোসেনের স্ত্রী। এক সন্তানের জননী রেহেনা খাতুনের দু বোন শাহিনুর ও সাহেলা খাতুন বলেন, গতপরশু মঙ্গলবার ডা. নয়নের কাছে দেখাতে আনি। ডা. নয়ন দেখে বলেন অপারেশন করতে হবে। কথামতো বুধবার দুপুরে বোন রেহেনা খাতুনকে ভর্তি করানো হয় চক্ষু হাসপতালের নিকটস্থ ঝণ্টুর ইউনাইটেড ক্লিনিকে। বিকেল আড়াইটার দিকে শুরু হয় অপারেশন। বিকেল ৪টার দিকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করা হয়। তখন অনাবরত রক্তক্ষরণ হচ্ছিলো। বেডে শোয়ানোর পর রক্তে ভরে যেতে থাকে পাইপ লাগানো ব্যাগ। পরে নাক দিয়েও রক্ত বের হতে থাকে। সন্ধ্যায় দেয়া হয় ইনজেকশন। ওই ইনজেকশ দেয়ার পর আমাদের বোন রেহেনা খাতুন আর জাগলো না। একেতো অপারেশনে ভুলের কারণে রক্তক্ষরণ, তার ওপর ঘুমের ওষুধেই ঝরে গেলো প্রাণ। অবশ্য সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. ওয়ালিউর রহমান নয়ন বলেছেন, অপারেশনে ভুলের কারণে নয়, সমস্যা হয়েছে ইনজেকশনসহ হঠাত শ্বাস কষ্ট দেখা দেয়া। আমরা চেষ্টা করেও রোগীকে শেষ পর্যন্ত বাঁচাতে পারেনি।

অপরদিকে ভুল অপারেশনে ঝন্টুর ক্লিনিকে রোগীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা দানা বাধে। ওই ক্লিনিকে ক’দিন আগেও রোগীর মৃত্যু হয়। ফলে স্থানীয় জনগণের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। বেশ কিছু ব্যক্তি রাত ১১টার দিকে ক্লিনিকে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। ক্লিনিকের মালিক ঝণ্টু অভিযোগ করে বলেন, ফার্মপাড়ার কিছু চিহ্নিত ব্যক্তি উদ্দেশ্যে প্রণোদিত হয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করার পাশাপাশি আয়াকেও মারধর করেছে।

ভাঙচুরের পর রেহেনা খাতুনের মৃতদেহ তার নিজগ্রামে নেয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় দাফন সম্পন্ন করা হবে। তবে রোগীর লোকজন চিকিৎসক বা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লিখিত কোনো অভিযোগ বা নালিশ করবেন কি-না তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি।