স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহে তর তর করে চড়ছে তাপমাপা যন্ত্র ব্যারোমিটারের পারদ। ঘরে বাইরে প্রচণ্ড খরতাপ। বয়ে যাচ্ছে যেন লুহাওয়া। গতকাল চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। যা চলতি মরসুমের গতকাল পর্যন্ত সর্বোচ্চ। যদিও আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস, আজ ও কাল তাপমাত্রা আরো এক থেকে দু ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পেয়ে ৪২ ডিগ্রিতে পৌঁছে যেতে পারে। এদিকে তীব্র খরায় ভুগর্ভের পানিও নেমে যাচ্ছে নিচে। শিশুদের সুস্থ রাখাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত কয়েকদিনের ভ্যাপসা গরমে হাঁপিয়ে উঠেছে মানুষ। ঝড়ে বিদ্যুত সরবরাহ ব্যবস্থা লণ্ডভণ্ড হওয়ায় যেমন শহর, শহরতলী ও গ্রাম বাংলায় অসহনীয় দুর্ভোগ পাহাতে হয়েছে। গতকাল পর্যন্তও অনেক এলাকায় বিদ্যুত সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে কাঠফাটা প্রচণ্ড রোদ আর গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। চৈত্রের খরতাপে তেতে উঠছে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ পুরো খুলনা বিভাগ। সেই সাথে সারাদেশেই বাড়ছে তাপ। তাপমাত্রার পারদ কেবল ওপরেই উঠছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, চৈতালী বৃষ্টি আর থাকছে না। নববর্ষেও থাকবে চড়া রোদ, আর গা-জ্বলা গরম। গ্রীস্মের খরতাপ নিয়েই শেষ হবে চৈত্র, শুরু হবে বোশেখ। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গতকাল চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো দিনাজপুরে ২০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদফতর পূর্বাভাস বলছে, ১১ ও ১২ এপ্রিল তা উঠে যাবে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রিতে। ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আরও অন্তত দুদিন এই ৪১ ডিগ্রির খরতাপে পুড়বে চুয়াডাঙ্গাসহ সারাদেশের বিভিন্ন এলাকা। ২০১৪ সালের ২৪ এপ্রিল দেশে রেকর্ড ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি তাপমাত্রা অনুভূত হয়েছিলো, যা ছিলো এর আগে ৫৪ বছরের রেকর্ড। এর আগে ১৯৬০ সালে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ঢাকায়। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, পয়লা বোশেখের পরে ১৫ এপ্রিল আকাশে মেঘ আসার, এমনকি বোশেখি ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। ময়মনসিংহ অঞ্চলসহ সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীয় দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সাথে কোথাও কোথাও শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। কুষ্টিয়া অঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং রংপুর, দিনাজপুর, সৈয়দপুর, ঢাকা, টাঙ্গাইল ও ফরিদপুর অঞ্চলসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকতে পারে এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিস্তার লাভ করতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এদিকে চৈত্রের শেষ সপ্তাহে গত ৪ দিন ধরে তাপদাহে পুড়ছে কুষ্টিয়ার পথঘাট-প্রান্তর। ভ্যাপসা গরম বাতাসের হাওয়ায় মানুষের শরীর পুড়ে যাওয়ার উপক্রম। চৈত্রের খরতাপে মানুষের পাশাপাশি পশুপাখিকূলেও নেমে এসেছে অস্থিরতা। কুষ্টিয়া প্রতিনিধি এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, গতকাল রোববার কুষ্টিয়াতে মরসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।