কেএ মান্নান: আলমডাঙ্গা জামজামির মধুপুরে পরশু মধ্যরাতে কয়েকজনের একদল অস্ত্রধারী মুকুল হোসেন নামের এক দিনমজুরকে অপহরণ করেছে। অপহরণের ১৪ ঘণ্টার মাথায় মোবাইলফোনে ২ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করা হয়েছে। এদিকে অপহরণের আড়ালে নির্বাচনী বিরোধ লুকিয়ে আছে কি-না তা নিয়ে নানামুখী গুঞ্জন উঠেছে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার জামজামি ইউনিয়নের মধুপুর দাশপাড়ার মৃত মজিবর রহমানের ছেলে ইটভাটা শ্রমিক মুকুল হোসেন (৪০) পরশু রাতে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। স্ত্রী হাজেরা খাতুন এ তথ্য দিয়ে জানান রাতে ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের পক্ষে নৌকা প্রতীকে ভোটের ক্যানভাস শেষে বাড়ি ফিরে স্বামী মুকুল। গরমে বাড়ি ফিরলে হাত পাখা দিয়ে বাতাস করতে থাকি। ঘুমিয়ে পড়ি। মধ্যরাতে ২/৩ জনের একদল দুর্বৃত্ত বাড়ি ঢুকে মুকুল হোসেনকে নামধরে ডাকতে থাকে। ঘুম থেকে জেগে উঠি। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুর্বৃত্তচক্র মুকুলকে টেনে হেচড়ে বিছানা থেকে উঠানে নামিয়ে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। স্ত্রী
বাঁধা দিলে দুর্বৃত্তদল জানায় এ গ্রামের চৌকিদার জাফিরুলের বাড়ি দেখিয়ে সে ফিরে আসবে। স্ত্রী হাজেরা খাতুন আরো বলেন, আমি যখন ছাড়তে চাইনি তখন ধারালো অস্ত্র উচিয়ে খুন করবে বলে ভয় দেখায়। চিৎকার করলে বোমা মেরে উড়িয়ে দেবো বলে জানায়। এর পর বাড়ির বাইরে চলে যায়। এ সময় মুকুলের বৃদ্ধ মা রিজিয়া খাতুন ও ঘরের বারান্দা থেকে বলতে থাকেন ওরে সোহরাব তুই আমার ছেলে তুলে নিয়ে গেলি। এ সময় পরিবার স্বজনদের চিৎকারে গ্রামবাসী ছুটে যায়। ততোক্ষনে অপহরকচক্র লাপাত্তা। খবর পেয়ে স্থানীয় জামজামি ফাঁড়ি পুলিশের এএসআই জুলহাস হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে শুরু করেন অভিযান। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অপহৃত মুকুলকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
অপরদিকে স্থানীদের কেউ কেউ অপহরণের আড়ালে ইউপি চেয়ারমান নির্বাচন নিয়ে বিরোধের জের বলেও মন্তব্য করতে থাকেন। চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবলু চৌধুরীর লোকজনের কাজ বলেও গুঞ্জন ওঠে। অবশ্য এ গুঞ্জনকে পরিকল্পিত অপপ্রচার চালিয়ে পানি ঘোলা করার পায়তারা বলেও মন্তব্য করেন অনেকে। বাবলু চৌধুরীর লোকজনকে নিয়ে গুঞ্জনের প্রেক্ষিতে বাবলু চৌধুরী বলেন, অপহৃত মুকুল একজন দিনমজুর, খেটে খাওয়া মানুষ তাকে অপহরণ শুধু ন্যাক্কারজনকই নয়। খুবই দুঃখজনক। দ্রুত তার মুক্তি কামনা করছি। এদিকে অপহরণের ১৪ ঘন্টা পর শুক্রবার দুপুরে
দুর্বৃত্তচক্র অপহৃতের পরিবারের মোবাইলেফোনে ২লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় নানা প্রশ্ন দানা বেধেছে। এলাকায় নতুন করে অপহরণ আতঙ্ক ছড়িয়েছে।