প্রধান শিক্ষক মিনাজ উদ্দিনকে সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত

 

স্টাফ রিপোর্টার: দীর্ঘ তিন বছর পর চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার বলেশ্বরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিনাজ উদ্দিনকে সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রমেন্দ্রনাথ পোদ্দার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মিনাজ উদ্দিন আইঁলহাস ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

খুলনা বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা উপপরিচালক একেএম গোলাম মোস্তফা স্বাক্ষরিত ৯ মার্চের এক চিঠিতে এ তথ্য জানা গেছে। তার বরখাস্ত ২০১৩ সালের ৪ জুন তারিখ থেকে কার্যকর হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, মিনাজ উদ্দিন কোনো প্রকার ছুটি ব্যতীত অননুমোদিতভাবে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় এবং প্রধান শিক্ষক পদ থেকে অব্যাহতি না নিয়েই মূল দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে ২০১৩ সালের ৪ জুন থেকে বিধি বহির্ভূত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করার কারণে তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার ৩ (বি) ও ৩ (ডি) ধারা মোতাবেক অসাদাচরণ ও দুর্নীতির দায়ে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়।

আলমডাঙ্গার জাতীয়করণকৃত বলেশ্বরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইলহাঁস ইউপি চেয়ারম্যান মিনাজ উদ্দিনকে বিলম্ব না করে দুটি পদের যেকোনো একটি বেছে নিতে নির্দেশ দেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। এরপরও মিনাজ উদ্দিন সিদ্ধান্ত না নেয়ায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ২০১৫ সালে খুলনা বিভাগীয় উপপরিচালককে বিষয়টি লিখিতভাবে জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিনাজ উদ্দিন বলেশ্বরপুর রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৯৮৫ সালের ১ আগস্ট থেকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি তারিখ থেকে রেজিস্টার্ড বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করণ করা হয়। এরমধ্যে স্থানীয় ইউপি নির্বাচন চলে এলে মিনাজ উদ্দিন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেন। রিটার্নিং অফিসার মিনাজের মনোনয়নপত্রটি বাতিল করেন শিক্ষকতা করার কারণে। এই আদেশের বিরুদ্ধে মিনাজ উদ্দিন উচ্চ আদালতে আপিল করলে তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ জন্য পান। এরপর ২০১৩ সালের ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মিনহাজ জয়লাভ করেন এবং ৪ জুন চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ গ্রহণ করে পরিষদের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

সরকারি দুটি দপ্তরের প্রধানের দায়িত্ব পাওয়ার পর যে কোনো একটি ছেড়ে দেয়ার সরকারি বিধান থাকলেও মিনাজ উদ্দিন তা করেননি। উপরন্তু কীভাবে সময়ক্ষেপণ করা যায় সে পথে হেঁটেছেন। অবশেষে মিনাজ উদ্দিন আবেদন করেন ২০১৩ সালের ১ জুন থেকে অক্ষমতাজনিত কারণে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের। আলমডাঙ্গা উপজেলার তৎকালীন শিক্ষা কর্মকর্তা আবু হাসান বিষয়টি সিদ্ধান্তের জন্য ২০১৪ সালের ২৬ অক্টোবর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে পাঠান। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রমেন্দ্রনাথ পোদ্দার বিষয়টি জানতে পেরে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আবেদনটি পাঠিয়ে দেন। তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের সভাপতি ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল ইসলাম। ওই মেডিকেল বোর্ড গত বছরের ১৫ এপ্রিল মিনাজ উদ্দিনকে অক্ষমের পরিবর্তে সক্ষম বলে মতামত দেয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রমেন্দ্রনাথ পোদ্দার বলেশ্বরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিনাজ উদ্দিনের চাকরি থেকে বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।