জহির রায়হান সোহাগ: ‘দেশের উন্নয়নের অন্তরায়ের অন্যতম প্রধান কারণ বাল্যবিয়ে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্থভাবে বেড়ে উঠা এবং সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতেও বাল্যবিয়ে একটি বড় বাধা। নারীর ক্ষমতায়নে প্রধানতম বাধা হিসেবেও বাল্যবিয়েকে চিহ্নিত করা যায়। বাল্যবিয়ের শিকার ছেলে বা মেয়ে উচ্চশিক্ষা এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিশুশিক্ষা থেকেও বঞ্চিত হয়। ফলে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত শিশু, কিশোরী এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিশোররাও উন্নত জীবন ব্যবস্থা ও আধুনিক প্রযুক্তিগত তথ্যপ্রবাহ থেকে বঞ্চিত।’
গতকাল রোবাবার সকাল ১০টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির মুক্তমঞ্চে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে ইমাম, মুয়াজ্জিন, কাজি, গ্রামপুলিশ, শিক্ষক, স্বাস্থ্যকর্মী, জনপ্রতিনিধি ও সুধীজনদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন জাতীয় সংসদের হুইপ জেলা আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত সামাজিক ব্যাধি বাল্যবিয়ের কূফল সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে হবে। বাল্যবিয়ের উদ্বেগজনক পরিণতি পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। তাই এটি অবশ্যই বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। বাল্যবিয়ে রোধ করতে শুধু মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের অবহিত করলে হবে না, সমাজে বসবাসকারী সকল ধর্মের অনুসারীদের তা অবহিত করতে হবে। সমাজের সকল স্তরের মানুষ এবং প্রশাসনকে এ ব্যাপারে পথপ্রদর্শক বা সংস্কারকের ভূমিকা রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনজুমান আরার সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ জেলা আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান, জেলা পরিষদ প্রশাসক মাহফুজুর রহমান মনজু, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস, পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক। অতিথি ছিলেন জেলা রেজিস্ট্রার আবুল কালাম আজাদ ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক এবিএম রবিউল ইসলাম। সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কেএম মামুন উজ্জামান।
চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুন্সি আবু সাঈফের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হক হযরত, জেলা জাতীয় মহিলা সংস্থার সভানেত্রী নুরুন নাহার কাকলী, জেলা ব্র্যাক প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম, শঙ্করচন্দ্র ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাহমান, নিকাহ রেজিস্ট্রার মাও. মো. সামসুল হক, তিতুদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান প্রমুখ। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সুধীজন, মসজিদের ইমামসহ বিভিন্ন শ্রেণির-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে উপস্থিত সকলে ‘বাল্যবিয়েকে লাল কার্ড’ সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে শপথ করেন। শপথ বাক্য পাঠ করান জাতীয় সংসদের হুইপ জেলা আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি। এ সময় উপস্থিত সকলে তাদের হাত থাকা প্ল্যাকার্ডটি উচিয়ে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করেন।