লড়াই করেও এক রানে হারলো বাংলাদেশ
মাথাভাঙ্গা মনিটর: ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টিতে ভারতের কাছে এক রানে হারলো বাংলাদেশ। গতকাল বুধবার ব্যাঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ভারতের দেয়া ১৪৭ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৪৬ রানে গিয়ে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। কয়েকবার আশা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত জয় থেকে মাত্র এক রান দূরে থামে বাংলাদেশ। কিন্তু জয়ের জন্য যে এক রানও অনেক। বারবার রং পাল্টানো ম্যাচে বেশ কয়েকবারই লাগাম ছিলো টাইগারদের হাতে। কিন্তু ইনিংসের শেষ ওভারে পরপর দুই বলে আউট হন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কার্যত তখনই শেষ হয় বাংলাদেশের স্বপ্ন। তবু আশা ছিল শেষ বলে এক রান নিতে পারলে সুপার ওভারে যাওয়ার। তবে মহেন্দ্র সিং ধোনির রানআউটের শিকার হন শুভাগত। এর আগে ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টিতে ভারতের দেয়া ১৪৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১৪ ওভারেই শতক পূর্ণ করলো টাইগাররা। ওপেনার তামিম ইকবালের ৩৫ আর সাব্বির রহমানের ঝড়ো ২৬ রানের উপর ভর করে এই সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। এছাড়া সাকিব করেন ২২ রান।
তবে দুজন ব্যাটসম্যানই স্টাম্পিয়ের শিকার হন। ইনিংসের ৮ম ওভারে জাদেজার বলে স্টাম্পিং হওয়ার আগে পাঁচটি বাউন্ডারিতে ৩২ বলে ৩৫ রান করেন তামিম।তামিম ইকবালের পর স্টাম্পিংয়ের শিকার হলেন সাব্বির রহমান।সুরেশ রায়নার বলে আউট হওয়ার আগে ১৫ বলে ২৬ রান করেন তিনি।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে পাওয়ার প্লে’র ছয় ওভারে ৪৫ রান করেছে বাংলাদেশ। তামিমের ৩২ রানের উপর ভর করে এই সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। তবে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের শুরুতেই হোচট খায় বাংলাদেশ। ব্যক্তিগত এক রানেই প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেন ওপেনার মোহাম্মদ মিঠুন। অশ্বিনের বলে লংঅনে ছক্কা মারতে গিয়ে হার্ডিক পান্ডিয়ার হাতে ধরা পড়েন তিনি।
ইনিংসের ১৩ম ওভারে সাকিবকে হারায় বাংলাদেশ। হার্ডিক পান্ডের বলে রায়নার হাতে তালুবন্দি হওযার আগে ১৫ বলে ২২ রান করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। এর আগের ওভারেই বোল্ড আউট হন মাশরাফি। ব্যাটিং লাইনআপে চমক দেখিয়েছিলেন টাইগার দলপতি মাশরাফি। নিজেই নেমে গিয়েছিলেন ৪ নম্বরে। একটি ছক্কা মেরে চমকের আভাসও দিয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত পারলেন না। জাদেজার বলে বোল্ড হয়ে বিদায় নিতে হলো তাকে। আউট হওয়ার আগে ৫ বলে ৬ রান করেন তিনি। এরপর দলীয় ১২৬ রানের মাথায় আউট হলেন সৌম্য সরকার। নেহরার বলে কোহলির হাতে তালুবন্দি হওয়ার আগে ২০ বলে ২১ রান করেন তিনি। জয়ের জন্য তখন বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৩ বলে ২১ রান।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশকে ১৪৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছে ভারত। সুরেশ রায়নার ৩০ ও হার্ডিক পান্ডিয়ার ২৪ রানের উপর ১৪৬ রান সংগ্রহ করে মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। বাংলাদেশের পক্ষে দুইটি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজ ও আল-আমিন।
বাংলাদেশের হয়ে প্রথম আঘাত হানেন মুস্তাফিজ। ইনিংসের ৬ষ্ঠ ওভারে মুস্তাফিজের বলে ক্যাচ আউট হন ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মা। আউট হওয়ার আগে এক চার ও এক ছক্কায় ১৬ বলে ১৮ রান করেন রোহিত। মুস্তাফিজের বলে সাব্বির রহমানের হাতে ধরা পড়েন তিনি। এরপর ইনিংসের ৭ম ওভারে শিখর ধাওয়ানকে আউট করেন বাংলাদেশি স্পিনার সাকিব আল হাসান। আউট হওয়ার আগে ২ চার ও এক ছক্কায় ২২ বলে ২৩ রান করেন ধাওয়ান। পরে তাকে এলবিডব্লিউ এর ফাঁদে ফেলেন সাকিব।
এরপর বিরাট কোহলিকে বোল্ড আউট করেন আরাফাত সানির বদলে দলে ঢোকা স্পিনার শুভাগত হোম। আউট হওয়ার আগে ২৪ বলে ২৪ রান করেন কোহলি। ইনিংসের ১৬ তম ওভারে জোড়া আঘাত আনে আল-আমিন হোসেন। নিজের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই সুরেশ রায়নাকে আউট করেন তিনি। এর পরের বলেই আউট করেন হার্ডিক পান্ডিয়াকে। হ্যাটট্রিকের সুযোগ থাকলেও তুলে নিতে পারেননি এই পেসার।
ইনিংসের শেষ ওভারে আবারও আঘাত আনেন মুস্তাফিজ। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে জাদেজাকে বোল্ড করেন তিনি। ব্যাট করতে নেমে ১৪ ওভারে শতক পূর্ণ করে ভারত। সুরেশ রায়নার অপরাজিত ২২ বলে ৩০ রানের ইনিংসের উপর ভর করে এই রান করে ভারত।