মুজিবনগর প্রতিনিধি: মেহেরপুর জেলায় আবারো সক্রিয় তক্ষক সাপ প্রতারকচক্র। গত কয়েক বছর ধরে মেহেরপুর জেলাসহ আশেপাশের জেলায় প্রতারক চক্রের আনাগোনার রয়েছে। গতরাতে মুজিবনগর উপজেলার রসিকপুর গ্রাম থেকে তক্ষক সাপ পাচারকারী চক্রের দুই হোতাকে দুটি তক্ষক সাপসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- রসিকপুর গ্রামের মৃত আজাহার আলীর ছেলে আব্দুল খালেক (৪০) ও কুষ্টিয়ার ইবি থানার পুর্ব আব্দালপুর গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে বশির আহম্মেদ। দুটি তক্ষক ভারতে পাচারের প্রস্তুতির সময় তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। তক্ষক বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা মেলে এমন প্রলোভনে এলাকার অনেকেই নিঃস্ব হয়েছে। গ্রেফতার দুজন ওই প্রতারক চক্রের সদস্য বলে জানায় মুজিবনগর থানা পুলিশ।
মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী কামাল হোসেন জানান, একটি প্রতারক চক্র বিলুপ্ত প্রায় তক্ষক সাপ ভারতে পাচার করে আসছিলো। গতকাল তারা দুটি তক্ষক সাপ ভারতে পাচারের প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রসিকপুর গ্রামে আব্দুল খালেকের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় দুটি তক্ষক সাপসহ খালেক ও বশির আহম্মেদকে আটক করা হয়। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে আটক দেখিয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে দুজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করা হবে। আটক দুনজকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে ওসি আরো জানান, এর আগেও কয়েক দফা তক্ষক সাপ ভারতে পাচার করেছে খালেক ও বশির। মঙ্গলবার কুষ্টিয়া এলাকা থেকে তক্ষক দুটি ক্রয় করে রসিকপুর গ্রামে খালেকের বাড়িতে পৌঁছে বশির। স্থানীয় পাচারকারী ও ভারতীয় পাচারকারীদের সাথে যোগাযোগ করছিলেন তিনি। কিন্তু সুযোগ না পেয়ে ভারতে পাচার করতে বিলম্ব হয়। পরে খবর পৌঁছে যায় পুলিশের কাছে। পুলিশ সূত্রে আরো জানা গেছে, দেশ থেকে প্রায় বিলুপ্ত তক্ষক সাপ জাতীয় সরীসৃপ প্রাণী। প্রতারক চক্রের সদস্যরা এই সাপ নিয়ে ধান্দাবাজির নতুন ফন্দি বের করে। বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় তক্ষক সাপে অনেক টাকা। এমন খবরে গত বছর বিভিন্ন স্থানে তক্ষক সাপ ধরতে কতোইনা ঘটনা পত্রিকার পাতায় প্রকাশ পেয়েছে। আসলে তক্ষক সাপ বিক্রির প্রলোভনে ফেলে আগ্রহী ক্রেতাদের ফাঁদে ফেলা হয়। সাপ দেয়ার নাম করে হাতিয়ে নেয়া হয় কোটি কোটি টাকা। এমন ফাঁদে পড়ে মেহেরপুর জেলার অনেকেই নিঃস্ব হয়েছেন। কিন্তু তক্ষক সাপ নামক সোনার হরিণ বিক্রি করার টাকা মেলেনি কারো ভাগ্যে।