কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পানবরজে আগুন : ৭ হাজার পিলি পান ভস্মীভূত

 

 

প্রায় ৪ কোটি টাকার ক্ষতি : চাষিরা সর্বস্বান্ত

ভেড়ামারা  প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পানের বরজে আগুন লেগে প্রায় ৭ হাজার পিলি পান ভস্মীভূত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের জামালপুর মাঠে গমের নাড়া পোড়ানোর ফলে এ অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয় বলে জানা গেছে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৪কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে প্রায় ২শ পানচাষি সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ক্ষতিগ্রস্ত চাষিসূত্রে জানা গেছে, ভেড়ামারা উপজেলার মোকারিমপুর ইউনিয়নের ফকিরাবাদ, বাগগাড়ীপুল মাঠ, বাহাদুরপুর ইউনিয়নের জামালপুর ও জুনিয়াদহ ইউনিয়নের পরানখালী মাঠের বিশাল এলাকার অধিকাংশ স্থান জুড়েই রয়েছে পানবরজ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে জামালপুর মাঠে গমের নাড়া পোড়ানো ফলে পানবরজে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে বাতাসে এই আগুন ৩টি ইউনিয়নের মাঝে অবস্থিত মাঠে আবাদকৃত পানবরজে ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রায় ৭ হাজার পিলি পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৪কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এতে ২ থেকে ৩শ কৃষক সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন। এছাড়াও গমের ক্ষেতও পুড়ে গেছে। ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পরে কৃষকরা মাঠের সেচযন্ত্রগুলো চালু করে দেন। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ক্ষতিগ্রস্ত পানচাষিদের মধ্যে আকছেন আলীর ২০০ পিলি, সামছুলের ১৫০ পিলি, আক্কাচের ২০০ পিলি, মোয়াজ্জেমের ১৫০ পিলি, করিম শেখের ১৫০ পিলি, পলুর ১৫০ পিলি, আসাদের ১৫০ পিলি, খেদের আলীর ২৫০ পিলি, মিজানের ২০০ পিলি, মেঘা প্রামানিকের ২৫০ পিলি, মিন্টুর ৩০০ পিলি। এছাড়াও প্রায় ২০০ কৃষকের সর্বনিম্ন ৫০ পিলি থেকে ৫০০ পিলি পর্যন্ত পুড়ে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত পানচাষি আক্কাচ আলী বলেন, আমার ২০০পিলি পানের বরজ পুরোটাই পুড়ে গেছে। অপর ক্ষতিগ্রস্ত পানচাষি মেঘা প্রামানিক বলেন, আমার বরজ ভরা পান ছিলো, সবেমাত্র বিক্রি করতে শুরু করেছি। এমন সময় আমার এ সর্বনাশ হলো। এক পিলি পান বরজ করতে এবং সেই বরজে পান ধরলে খরচ ও পানের দাম দিয়ে পিলি প্রতি ৫ হাজারের ও বেশি মূল্য দাড়ায়। এতে করে প্রায় ৭হাজার পিলি পানের বরজ পুড়ে প্রায় ৪কোটি টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পান চাষিরা।

ভেড়ামারা পানচাষি সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, মাঝে মধ্যেই পানবরজে এমন ঘটনা ঘটে। চাষিরা সর্বশান্ত হয়। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের পাশে সরকার দাঁড়াবে এমনটাই আশা করছি। পান চাষের ওপর কোনো বীমা নেই, বীমার নিয়ম থাকলে চাষিরা ক্ষতির হাত রক্ষা পেতো। তাই আমরা বীমা চালু করার দাবি রাখছি।

ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মোজাহারুল ইসলাম বলেন, বিশাল এলাকাজুড়ে পানবরজে অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি মাঠে অবস্থিত সেচ যন্ত্রগুলো কৃষকদের সহযোগিতা নিয়ে চালু করে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়। ক্ষতির পরিমাণ এখনো পরিমাপ করা হয়নি। স্থানীয় পান চাষিদের সাথে কথা বলে সেটা নিরুপন করা হবে।