আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো বিএনপি জামায়াতকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে

 

মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুরসহ সারাদেশেই ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নানা কর্মসূচি হাতে নেয়। এরই অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গায় সকালে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, বিকেলে আলোচনাসভাসহ শহীদ হাসান চত্বরে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ ও দেশত্ববোধক সঙ্গীত পরিবেশনের আয়োজন করা হয়। মেহেরপুরে আলোচনাসভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের খবর পাওয়া গেছে। জীবননগর ও ঝিনাইদহের মহেশপুরেও অভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগ গতকাল সোমবার সকাল ৬টায় কবরী রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে দিবসের কর্মসূচি পালনে সূচনা করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান। পরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পন করা হয়। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিকেল ৪টায় শুরু হয় আলোচনাসভা। সভায় সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস। আলোচনাসভায় জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বক্তৃতায় বলেন, বিএনপি নেত্রী জনগণের জন্য বিভিন্ন মিডিয়ায় ভালো ভালো কথা বলেন। আবার সাধারণ জনগণকে পেট্রোল বোমা মেরে হত্যা করছেন। বিএনপি জামায়াতকে অবশ্যই মানুষ পোড়ানোর রাজনীতি পরিহার করতে হবে। ‘বাংলাদেশে যরা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারছে বর্তমান সরকার তাদেরকে শায়েস্তা করার জন্যই আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীণতা ও মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব, দলের নেতৃত্ব দিয়ে এদেশের গণমানুষের সংগঠনে পরিনত, হয়েছে। এজন্য আমাদের সামনের দিনে বিএনপি ও যুদ্ধাপরাধী জামায়াত শিবিরের দেশব্যাপি হরতাল, নৈরাজ্য, তাণ্ডব ও ধংস্বাত্বক কর্মকান্ড, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ এবং ষড়যন্ত্র প্রতিরোধে রাজপথে আমাদেরকেই থাকতে হবে। জেলা আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক শওকত আলী বিশ্বাসের উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, চুযাডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, নাসির উদ্দিন, আব্দুল মালেক, শ্রমিক লীগের সভাপতি আফজালুল হক, যুবলীগ নেতা আব্দুল কাদের, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আশিক ইকবাল স্বপন, সাধারণ সম্পাদক তারিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, ৭ মার্চ উপলক্ষে গতকাল সোমবার দুপুরে মেহেরপুরে আলোচনাসভা করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে তার নিজ বাসভবনে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন ও বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক, সহসভাপতি আব্দুল হালিম, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ইব্রাহীম শাহীন, দফতর সম্পাদক মোখলেছুর রহমান খোকন, কোষাধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম, আমদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুবক্কর, আমঝুপি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান, সাধারণ সম্পাদক খোকন মিয়া, সদর উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি জাফর ইকবাল প্রমুখ।

জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, জীবননগরে উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ পালিত হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পন ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুন্সী নাসির উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক আলী আহম্মদ, সাংগঠনিক সম্পাদক খলিলুর রহমান, বাঁকা ইউপির যুগ্মসম্পাদক শাহিনুর মাস্টার, আন্দুলবাড়িয়া ইউপির সাংগঠনিক সম্পাদক মখলেছুর রহমান, সীমান্ত আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন, উথলী আওয়ামী লীগ নেতা আফজালুর রহমান ধীরু, উপজেলা যুবলীগ নেতা শামীম ফেরদৌস, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ও যুবলীগ নেতা অ্যাড. আকিমুল ইসলাম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মির্জা হাফিজুর রহমান লিটন, সবদুল, রফিক, ছাত্রলীগ নেতা শামসুজ্জোহা ও হেলাল প্রমুখ।

মহেশপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মহেশপুর কলেজ বাসস্ট্যান্ডে আ.লীগের অফিস কক্ষে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে এ আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মহেশপুর পৌরসভার কমিশনার আতিয়ার রহমান আতির সভাপতিত্বে দোয়া ও আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন আ.লীগ নেতা শরিফুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগের যুগ্মআহ্বায়ক ইয়াকুব আলী, মহেশপুর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আমিনুর রহমান প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন এসবিকে ইউপি চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল ইসলাম সাজ্জাদ, সাবেক উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জান আলিম, হাশেম আলী পাঠান, আব্দুল জলিল, শেখ রাসেল স্মৃতি সংঘের সভাপতি সেলিম রেজা, আলমগীর কবিরসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, ছাত্র, শিক্ষক, সাংবাদিক ও  এলাকাবাসী। বক্তারা তাদের আলোচনায় ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের তাৎপর্য তুলে ধরেন।

আমাদের ঢাকা অফিস জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে পুনরায় নির্বাচিত করার ঘটনাকে নাটক আখ্যায়িত করে বলেছেন, নাটকটা বেশ ভালই হয়েছে। নির্বাচিত হয়েছেন দুই আসামি। এর মধ্যে একজন (খালেদা জিয়া) এতিমের টাকা মেরে দেয়া এবং অপরজন (তারেক রহমান) মানুষ হত্যা, অর্থ পাচার, গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন মামলার আসামি। এই দুজনের মধ্যে একজন আবার ইন্টারপোলে ওয়ান্টেড আসামির তালিকায় রয়েছেন। এরা জনগণকে কী দেবে? ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে গতকাল সোমবার রাজধানীতে আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় তিনি আরো বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। তার ক্ষমতা দখলকে হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণা করেছে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী কর্তৃক গঠিত রাজনৈতিক দল মানুষের জন্য কী করবে? এরা দেশের রাজনীতিকে কলুষিত করেছে।

ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ এ জনসভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সংসদের উপনেতা এবং আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। বিপুল মানুষের সমাগমে জনসভাটি জনসমুদ্রে রূপ নেয়। দুপুর ১২টার পর থেকে মহানগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড-পাড়া-মহল্লা থেকে আওয়ামী লীগ ছাড়াও সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসতে থাকেন। দুপুর ২টার মধ্যে জনসভাস্থল লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্থাপিত সুবিশাল মঞ্চ থেকে জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের বজ্রনির্ঘোষ ভাষণ ছাড়াও দেশাত্মবোধক গান বাজানো হয়। বেলা পৌনে ৩টার দিকে ধর্মগ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের জনসভার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বিকেল পৌনে ৪টায় প্রধানমন্ত্রী জনসভাস্থলে আসার আগেই মানুষের স্রোতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাপিয়ে আশপাশের পুরো এলাকা ভরে যায়। মাঠে স্থান সংকুলান না হওয়ায় হাজার হাজার মানুষকে শাহবাগ থেকে টিএসসি হয়ে দোয়েল চত্বর এলাকা পর্যন্ত দীর্ঘ রাস্তায় দাঁড়িয়ে মাইকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতে দেখা যায়।

 

 

 

Leave a comment