২ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি : দিশেহারা চাষি

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার জয়রামপুর বাটকেমারী মাঠের ৪ বিঘা জমির ফলন্ত ভুট্টাগাছ রাতের আঁধারে কে বা কারা কেটে দিয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ওই জমির মালিক বলে দাবিদার প্রতিপক্ষ ফকির পাড়ার লিয়াকত মাস্টার গং ওই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত চাষি ইদ্রিস আলী সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। সেই সাথে তার ২ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও জানিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা জয়রামপুর কলোনীপাড়ার মৃত নূর হোসেনের ছেলে ইদ্রিস আলী (৫০) মাস দুয়েক আগে জয়রামপুর বাটকেমারী মাঠের ৪ বিঘা জমিতে ভুট্টার বীজ বপন করেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে কে বা কারা ওই ৪ বিঘা জমির সমস্ত ভুট্টাগাছ কেটে বিনষ্ট করে দেয়। পরদিন সকালে চাষি ইদ্রিস আলী বিষয়টি জানতে পেরে জমিতে যান এবং ফলন্ত ভুট্টাগাছ কাটা অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। ওই অবস্থা দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েন দরিদ্র চাষি ইদ্রিস আলী।
ক্ষতিগ্রস্ত চাষি ইদ্রিস আলী বলেন, ১৯৭৪ সালে রিফিউজি কার্ডের সম্পত্তি হিসেবে ওই জমি আমার পিতার নামে সরকার বন্দোবস্ত দেয়। কিন্ত একই উপজেলার ফকিরপাড়ার মৃত ইউসুফ আলী ওই জমির ভুয়া দলিল তৈরি করে জোরপূর্বক দখল নেয়। আমার পিতা প্রায় ২০ বছর আগে মারা যান। পিতা মারা যাওয়ার পর জমির কাগজপত্র ঘেটে দেখা যায় ওই জমির প্রকৃত মালিক আমরা। এসএ রেকর্ডও আমাদের নামে। পরবর্তীতে বিষয়টি দামুড়হুদা উপজেলা ভূমি অফিসে যোগাযোগ করি। তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফরিদ হোসেন বিষয়টি আমলে নেন এবং উভয়পক্ষকে ডেকে শুনানি শেষে তিনি আমাদের পক্ষে রায় দেন। যেহেতু ওই জমির প্রকৃত মালিক আমরা তাই তিনি প্রতিপক্ষ লিয়াকত গংদের ওই জমিতে যেতে সম্পূর্ণরূপে নিষেধ করেন। তারপর থেকে অর্থাৎ ২০১৪ সাল থেকে আমি ওই জমি দখলে নিই এবং চাষাবাদ করতে থাকি। মাস দুয়েক আগে ওই ৪ বিঘা জমিতে ভুট্টা লাগাই। নিড়ানি, সার, সেচসহ প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। গাছও খুব ভাল হয়েছিলো। প্রতিটি গাছেই মোচা ধরা শুরু হয়েছিলো। গত বৃহস্পতিবার রাতে কে বা কারা ওই ৪ বিঘা জমির সমস্ত ভূট্টার গাছ কেটে বিনষ্ট করে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি লোক মারফত জানতে পারি ওই মাঠে চাষিদের সাথে প্রতিপক্ষ বলেছে ভুট্টা লাগিয়েছে লাগাক। ভুট্টা কিভাবে বাড়ি নিয়ে নিয়ে যায় দেখবো। আমার ধারণা ওই ভুট্টাগাছ শত্রুতাবশত ওরাই কেটে বিনষ্ট করেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষি ইদ্রিস আলী প্রতিপক্ষ দামুড়হুদা ফকিরপাড়ার মৃত ইউসুফ আলীর ৫ ছেলে লিয়াকত মাস্টার, গোলাম মাস্টার, বুদো, মিনা ও রসুলকে অভিযুক্ত করে দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে ওই মাঠের চাষি আ. গফুর বলেন, এতোবড় ক্ষতি সহ্য করা কঠিন। মানুষ হয়ে মানুষের এতোবড় ক্ষতি করতে পারে তা কল্পনা করা যায় না।

Leave a comment