ঝিনাইদহের বারোবাজারে রোমহর্ষক খুনের বিষয়ে আসামির স্বীকারোক্তি : মাত্র ২ শত টাকার জন্য যুবদল নেতা খুন হয়

ঝিনাইদহ/কালীগঞ্জ প্রতিনিধি: মাত্র ২০০ টাকা মূল্যের একটি বাটখারার জন্য খুন হতে হয়েছে ঝিনাইদহের বারোবাজার ইউনিয়ন যুবদল নেতা মিন্টু বিশ্বাসকে। গত ১৯ ডিসেম্বর দুপুরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। খুন মামলায় গ্রেফতারকৃত যশোরের আন্দোলপোতা গ্রামের সিফাতুল্লাহর ছেলে আকবার বিশ্বাসের স্বীকারোক্তিতে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তার দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টসূত্র বলেছে, জবানবন্দিতে আকবার বিশ্বাস জানিয়েছেন, মিন্টু সন্ত্রাসি ছিলো। ভাই আব্দুল মান্নানের মাধ্যমে তার জন্য কাফনের কাপড় কিনে রাখতে বলেছিলো। তাছাড়া আকবার বিশ্বাসের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদাও দাবি করে। তিনি ১৭/১৮ হাজার টাকা দেন। এরপরও খুশি ছিলো না মিন্টু। যে কারণে মিন্টুর প্রতি আকবার বিশ্বাসের আক্রোশ ছিলো। এরপর বাটখারা নিয়ে দ্বন্দ্বের পর বারোবাজার ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি অশোক মজুমদার যখন মিন্টুকে মেরে ফেলার কথা বলে তখন তিনি সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অংশ নেন।
তিনি আরও জানান, মাত্র ২ শ টাকা মুল্যের ৫ কেজি ওজনের একটি বাটখারা হারিয়ে ফেলেছিলো মিন্টু বিশ্বাস আর তার ভাই টিপু বিশ্বাস। এই বাটখারা ফেরত চাওয়া নিয়ে বচসা হয় খোকন ঘোষের সাথে। খোকন ঘোষ বিচার দেন অশোক মজুমদারের কাছে। অশোক মজুমদার এই কথা শুনে তাদের কয়েকজনকে ডেকে পাঠান। রাতে নিজ বাড়ির পাশে বৈঠক বসিয়ে সিদ্ধান্ত দেন মিন্টুকে মেরে ফেলতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ ডিসেম্বর দুপুরে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সুবর্ণস্বারা গ্রামের মাঠে নিজ পুকুরে মাছের খাবার দেয়ার সময় খুন হন একই গ্রামের মিন্টু বিশ্বাস। মিন্টু বিশ্বাস বারোবাজার ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এই ঘটনায় মিন্টুর ছোট ভাই টিপু বিশ্বাস বাদি হয়ে ঝিনাইদহ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যে মামলায় তিনি ১৮ জনকে আসামি করেন। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার জন্য কালীগঞ্জ থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে ভাই হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে মামলা করে বাড়ি ছেড়ে স্ব-পরিবারে বর্তমানে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ছোট ভাই টিপু বিশ্বাস। তিনি বলেন, হত্যার সাথে যারা জড়িত তারা এখন তাকেও মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। প্রায়ই মোবাইলফোনে হুমকি দেয়া হচ্ছে। যে কারণে এলাকায় যেতে পারছেন না। বাকি আসামীগুলো ধরা না পড়া পর্যন্ত তিনি স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারছেন না বলে জানান টিপু বিশ্বাস।
অন্যথায় তাকেও মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। টিপু বিশ্বাস আরো বলেন, অশোক মজুমদারের সাথে জমি কেনাবেচা নিয়ে তাদের একটা বিরোধ ছিলো। তিনি এই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারে।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, তারা এই হত্যার সাথে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করতে পেরেছেন। এখন চেষ্টা চলছে হত্যাকারিদের গ্রেফতারের। আশা করছেন আসামিরা গ্রেফতার হবে এবং হত্যার বিচার হবে।