মেহেরপুরের আলমসাধুচালক টুটুলকে চুয়াডাঙ্গায় জবাই : মৃতপ্রায় অবস্থায় উদ্ধার

উল্টো জবাইয়ে অনবরত রক্তক্ষরণ : রেফার করলেও অর্থাভাবে নিতে পারেনি পরিবার
স্টাফ রিপোর্টার: মেহেরপুর গাংনীর আলমসাধুচালক মনিরুজ্জামান টুটুলকে মৃতপ্রায় অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে তাকে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের বেগমপুর কেরুজ বাণিজ্যিক খামারমাঠ থেকে উদ্ধার করা হয়। তার ঘাড়ে কোপ মেরে উল্টো জবাই করা হলেও অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছে। তবে অবস্থা দৃষ্টে চিকিৎসক বলেছেন, অনবরত রক্তক্ষরণে মৃত্যু যেন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তার শরীরে তিন ব্যাগ রক্ত দেয়া হলেও সংজ্ঞা ফেরেনি। শারীরিক পরিস্থিতির ন্যুনতম উন্নতি পরিলক্ষিত হয়নি। বরং অবণতির কারণে চিকিৎসকরা দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। অর্থাভাবে গতরাতে তার পিতা-মাতা ঢাকায় নিতে পারেনি। ঘটনাস্থল থেকে তার আলমসাধুটি উদ্ধার করে বেগমপুর ফাঁড়ি পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানা গেলেও কেন তাকে খুন করতে চেয়েছে ছদ্মবেশি দুর্বৃত্ত? তা অবশ্য নিশ্চিত করে জানা সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, মেহেরপুর গাংনীর হেমায়েতপুর রাজাপাড়ার আব্দুল জলিলের ছেলে মনিরুজ্জামান টুটুল (২৫) বছর খানেক আগে একই উপজেলার ষোলোটাকা গ্রামে মুন্নাফ আলীর মেয়ের সাথে বিয়ে করে। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে থেকেই শ্যালোইঞ্জিনচালিত আলমসাধুর ভাড়া মারে। শাশুড়ি জবেদা খাতুন বলেছেন, প্রতিদিনই সকালে ভাড়া মারার জন্য আলমসাধু নিয়ে রাস্তায় বের হয়। গতকাল সোমবার আলমসাধুর ইঞ্জিনের মবিল বদলানোর জন্য বোয়ালিয়া বাজারের উদ্দেশে রওনা হয়। মবিল বদলে ভাড়া পায়। মনিরুজ্জামান টুটুল তার স্ত্রীকে মোবাইলফোনে জানায়, ভালো ভাড়া পেয়েছি। ভাড়া নিয়ে দূরে যাচ্ছি। এরপর আর যোগাযোগ হয়নি। মনিরুজ্জামান টুটুলের পিতা আব্দুল জলিল বলেন, বিকেল ৪টার দিকে ছেলে মোবাইলফোনে বলে, আমাকে চুয়াডাঙ্গার বেগমপুর মাঠে নিয়ে জবাই করেছে। এ কথা শুনে বেগমপুরের এক আত্মীয়কে ফোনে খবর দিই। আত্মীয়রা পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। আমরা গাংনী থেকে ছুটে আসি। পেছন থেকে হত্যার জন্যই জবাই করা হয়েছে। প্রথমে মনে হয়েছে আলমসাধু ছিনতাইয়ের জন্যই মেরেছে। কিন্তু আলমসাধু তো ওরা নেয়নি। সে কারণেই ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ব বিরোধের কারণে পরিকল্পিতভাবেই তাকে বোয়ালিয়া থেকে চুয়াডাঙ্গার বেগমপুরের নির্জন মাঠে নিয়ে পেছন থেকে নির্মমভাবে জবাই করা হয়েছে।

Leave a comment