বছর বিদায়ের দিনে স্মুতিমন্থনে ভুল শুধরে নিক সকলে

কালের গহ্বরে আজ আরও একটি বছর হারিয়ে যাচ্ছে। আজকের সূর্যাস্তের মধ্যদিয়ে দেয়াল থেকে সরে যাবে পুরোনো দিনপঞ্জি। শুরু হবে নতুন দিন গণনার পালা। দেয়ালে ঠাঁই পাবে নতুন দিনপঞ্জি।
কালে কালে নতুনকেই বরণ করেছে মানব জাতি। পুরোনোকে ভুলে নয়, ফেলে যাওয়া দিনগুলোর অভিজ্ঞতা আগামী দিনের সফলতার সোপান। বাঙালি জাতির রয়েছে নিজস্ব বর্ষপঞ্জি। এরপরও খ্রিস্টাব্দের প্রচলনই বেশি। প্রজন্মের সামনে বোশেখের চেয়ে ফাস্ট জানুয়ারি বরণে থার্টিফাস্টকে একটু উগ্রতার বশেই যেন আগলে রাখে। যদিও এটাকে ঠিক অপসংস্কৃতি বলা যায় কি-না তা নিয়ে বিতর্ক আছে বিস্তর।
আজকের সূর্যাস্তটা যেমন একটি বছরের বিদায় লগ্ন, তেমনই দিনটিও অধিকাংশের কাছে ফিরে দেখার গুরুত্ববহ। অবশ্য স্থান-কাল-পাত্র ভেদে পৃথক তো হতেই পারে। কারো কাছে ছিলো বছরটি বড্ড কষ্টের, হারানোর। আবার কারো কারো কাছে বড় প্রাপ্তির। সুখ স্মৃতি জাবরেও বড্ড তৃপ্তি। চুয়াডাঙ্গাবাসীর সামনে বছরটা ছিলো সুখ-দুঃখে ভরপুর। মেহেরপুরেও তাই। মাথাভাঙ্গার? পত্রিকা প্রতিষ্ঠার পর থেকে কেটেছে ২৫টি বসন্ত। বিদায়ী বছরের মতো অতোটা হামলা, হুমকির শিকার হতে হয়নি কখনো। অনবরত রক্তক্ষরণের হৃদয়ে প্রশ্ন- কষ্টের স্মৃতিমাখা বছরকে ঠিক কিভাবে বিদায় জানালে নতুন বছরটা সুখ স্মৃতির হয়? জবাবটা ঠিকঠাক জানা না থাকলেও এটা বলা যায়, পশ্চিমা সংস্কৃতির উগ্রতায় নিজেদেরকে গড্ডালিকায় ভাসানোটা সুস্থতা নয়। অপসংস্কৃতির অসুস্থতা যাতে আমাদের গ্রাস করতে না পারে সেদিকে বাড়তি নজর অনিবার্য। প্রজন্মকে সুপথে রাখতে পারার দায়টা সমাজের বড়দেরই, বিশেষ করে নেতৃত্ব দানকারীদের ওপরই বর্তায়।
চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ দেশের বহু গুণীজনকে বিদায়ী বছরে হারাতে হয়েছে প্রকৃতির নিয়মেই। বছর বিদায়ের দিনে সকল বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা। কাম্য সকলের স্বনির্ভরতা। হিংসা বিদ্বেষ দূর হয়ে নতুন বছর হোক প্রগতির, সম্প্রীতির। সকলের সকল ভুলত্রুটি সকলে শুধরে নতুন বছরকে বরণ করুক সুন্দর মনে। সুন্দরের সুবাস ছড়িয়ে পড়ুক সবখানে। প্রস্ফুটিত হোক ভালোবাসা।
বিদায়ী বছরে কবে কখন কী হয়েছে সে ফিরিস্তি অবশ্যই অনেক লম্বা। স্মৃতি মন্থনের বোতাম টিপে অভিজ্ঞতায়, অর্জনে ভুল শুধরে সামনের দিনগুলোকে প্রত্যাশিত করতে পারাটাই সঠিক পথে হাঁটা।