প্রশ্ন জাগতেই পারে, নদী কি কখনো কাঁদে? নদীমাতৃক এই জনপদের হৃদয়ে কান পাতলে নদীর কান্নার শব্দ যে শোনা যায় তা চুয়াডাঙ্গার সচেতনমহল নিশ্চয় অস্বীকার করবেন না। মাথাভাঙ্গা শুকিয়ে যাচ্ছে। দু পাড় বেদখল হচ্ছে হরদম।
শুধু মাথাভাঙ্গাই নয়, বহু নদী এখন মৃত্যুযন্ত্রণায়, অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার পথে। এক সময় খরস্রোতা এসব নদীকে কেন্দ্র করে মানুষের বসতি গড়ে ওঠে। চুয়াডাঙ্গার নামকরণের আড়ালেও পরিষ্কার ডাঙ্গা তথা নদীর তীরের বিষয়টি জড়িত রয়েছে। নদীর রূপালি শস্য মাছ আহরণ করে এক সময় যেমন পরিবারের আমিষের চাহিদা পূরণ করেছে, তেমনি নির্বাহ করেছে জীবিকা। অথচ আজ দখলে-দূষণে প্রায় সব নদীর প্রাণস্পন্দন থেমে যাওয়ার উপক্রম। কোথাও-বা তার অস্তিত্বই বিলীন হয়ে গেছে। নদীর এই মৃত্যু বা বিপন্নতা যদি স্বাভাবিক হতো তা হলে অবশ্যই উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু থাকতো না। বাস্তবতা হলো-নদী-জলাশয় দ্রুত বিলুপ্ত হওয়ার আড়ালে রয়েছে মানুষেরই আগ্রাসী মানসিকতার বহির্প্রকাশ। নগরায়ন, শিল্পায়ন ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ তো আছেই।
বলার অবকাশ রাখে না, পরিবেশগত ভারসাম্যে চিড় ধরেছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দ্রুত নেমে যাচ্ছে। বাড়ছে আর্সেনিক-জাতীয় দূষণ। সচেতন ও সংযত হতে হবে। অস্তিত্বের স্বার্থেই বাঁচাতে হবে নদনদী। সোচ্চার হতে হবে সকলকে।