কুষ্টিয়ায় পাঁচটি পৌরসভায় নৌকার গতিবেগ বেড়েছে

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার পাঁচটি পৌরসভায় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনা এখন তুঙ্গে। নেতা-কর্মীদের সমন্বিত প্রচারে নৌকার গতিবেগ বেড়েছে। আর সমন্বয়হীনতায় ধানের শীষ অনেকটা নুইয়ে পড়ছে। জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের তত্বাবধানে প্রতিদিন প্রতিটি ওয়ার্ডের আনাচে-কানাচে চষে বেড়াচ্ছে দলের কর্মী সমর্থকরা। নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে কর্মীরা। তবে প্রচার নিয়ে বিএনপিতে অনেকটা ‘হ-য-ব-র-ল’ অবস্থা। নেতা-কর্মীদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে প্রচারে গতি নেই বলে স্বীকার করেছেন বিএনপি নেতারা।
নির্বাচনের বাকি মাত্র ৫দিন। দলীয় প্রার্থীদের জয়ী করতে ঘুম হারাম দুই দলের নেতা-কর্মীদের। কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে মধ্য রাত পর্যন্ত মাঠে থাকছেন নেতা-কর্মীরা। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের আবারও মেয়র নির্বাচিত করতে সমন্বিত কৌশলে এগুচ্ছেন শীর্ষ নেতারা। জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের তত্বাবধানে ৫টি টিম মাঠে কাজ করছে। এর একটি টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মেয়র প্রার্থী আনোয়ার আলী নিজে। আর একটি টিমের দায়িত্বে আছেন দলের সাধারন সম্পাদক আজগর আলী। এছাড়া শহর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আতাউর রহমান আতাও একটি টিম নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এছাড়া শ্রমিকলীগ, যুবলীগ, মহিলালীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতারা আলাদা টিম নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা প্রতিদিন ৫টিম নিয়ে ২১টি ওয়ার্ডে আলাদা আলাদা প্রচারনার কাজ করছেন। এক দিনে এক একটি টিম ৪ টির বেশি ওয়ার্ডে প্রচার চালাচ্ছেন। এর বাইরে প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থানীয় টিম কাজ করছে। প্রচারনার সাথে যুক্ত এমন দুই নেতার সাথে কথা হলে জানান, প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থানীয়ভাবেও একাধিক টিম কাজ করছে। মহিলাদের নিয়ে আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়া প্রবীণ নেতারা আছেন টিমে। তরুণ নেতাদের রয়েছে আলাদা আরেকটি টিম। এসব টিমের কাজ হচ্ছে প্রতিদিন প্রতিটি বাড়িতে ভোটের জন্য যাওয়া। শহরের পুর্ব মজমপুর এলাকার বাসিন্দা এক ভোটার জানান, আনোয়ার আলীর পক্ষে ভোট চাইতে প্রতিদিন তিন থেকে ৪টি টিম আসছে। প্রতিটি বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে তারা। নৌকার প্রচারনায় মাথা ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে। বিএনপি সমর্থক এ মহিলার ক্ষোভ ধানের শীষের প্রার্থী একবারও তার বাড়িতে আসেনি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আজগর আলী বলেন, জেলা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সমন্বয়ে ৫টি টিম মাঠে কাজ করছে। এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থানীয় ভাবে আলাদা আলাদা টিম কাজ প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রচারনায় যথেষ্ট গতি রয়েছে। আশা করছি ফের আনোয়ার আলীই মেয়র নির্বাচিত হবে। এদিকে ঢিমেতালে প্রচার চলছে ধানের শীষের। কোন সমন্বয় নেই। শীর্ষ বেশ কয়েকজন নেতা অভিযোগ করে বলেন, প্রচার চালানোর সময় আমাদের ডাকা হয় না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুতুব উদ্দিনের পক্ষে জেলা বিএনপির দুটি টিম কাজ করছে। তবে ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রচার চালানোর মত নেতা-কর্মী নেই। পুলিশের ভয়ে অনেকেই মাঠে নামছে না। শীর্ষ নেতাদের মধ্যে গা ছাড়া ভাব। জেলা বিএনপির বেশির ভাগ নেতা প্রচারে নামেননি। যারা নামছেন তারা লোক দেখানো প্রচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক এসএম ওমর ফারুক জানান, প্রচার-প্রচারনায় মাঠে আছে বিএনপি নেতারা। তবে নানাভাবে হয়রানী করা হচ্ছে দলের নেতা-কর্মীদের।
বিএনপির শীর্ষ দুই নেতা সমন্বয়হীনতার কথা স্বীকার করে বলেন, নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন নেতা-কর্মীরা। তাই প্রচারে ভাটা পড়েছে। তেমন উৎসাহ নেই কারো মাঝে। কারণ নির্বাচিত হলেও মেয়র দায়িত্ব পালন করতে পারবেন কি-না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে সাধারন ভোটাররাও বিষয়টি জানে। তাই যেটুকু মাঠে না থাকলেই না সেটুকু থাকতে হচ্ছে।
এছাড়া ভেড়ামারা, কুমারখালী, খোকসা ও মিরপুর পৌরসভায় নৌকার গতিবেগ বেড়েছে।