ছেলের মরদেহ দেশে আনতে বিজিবির প্রতি রুহুলের মায়ের আকুতি

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার ঠাকুরপুর সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে নিহত রুহুলের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে রাখা হয়েছে ভারতের চাপড়া থানা হাসপাতালমর্গে। বিষয়টি লোক মারফত জানতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন রুহুলের পালিত পিতা সাজিবার রহমান। গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে নিহত রুহুলের পালিত পিতা মোবাইলফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিজিবির সহযোগিতা পেলে আজ রোববার রুহুলের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হতে পারে। এদিকে ছেলের মৃতদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে বিজিবির সহযোগিতা কামনা করে আকুতি জানিয়েছেন মা রাজিয়া খাতুন। ছেলের মৃত্যুশোকে মূহ্যমান মা রাজিয়া বলেন, ছেলের মুখটা শেষ বারের মতোও কি দেখা হবে না? তিনি বিজিবির প্রতি অনেকটা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দু দিন ধরে বিজিবি মিথ্যাচার করেছে। কারণ ডাকাতি করতে গেলে বিএসএফ সদস্যরা গুলি করবে কেন? গুলি করবে পুলিশ সদস্যরা। একজন মানুষ যতো খারাপই হোক বিজিবি তার লাশ দেশে আনতে বিরোধিতা করবে এটা আমি একজন মা হিসেবে মেনে নিতে পারি না। রুহুলের শিশুকন্যা নুরুন্নাহারকে তার পিতার লাশটি যদি শেষবারের মতো দেখাতে না পারি তবে তার কাছে কী জবাব দেবো?
উল্লেখ্য, দামুড়হুদার সুবলপুর গ্রামের বাবলুর রহমানের ছেলে রুহুল গত বৃহস্পতিবার রাতে এলাকার ৪/৫ জন গরুব্যবসায়ীর সাথে ঠাকুরপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে ভারতে প্রবেশ করে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে ভারতের ঢালীপাড়া সীমান্ত দিয়ে গরু পার করার সময় ভারতীয় মালুয়াপাড়া ক্যাম্পের ৮৯/৯১ মেন পিলারের কাছে বিএসএফ সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। রুহুলের সাথে থাকা অন্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও রুহুল ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। শুক্রবার সকালে ভারতের চাপড়া থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালমর্গে নেয়। ভারতে বসবাসরত নিহত রুহুলের ফুফু লাশ শনাক্ত করেন। বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ চাপড়া থানা হাসপাতালমর্গে রাখা আছে।
এ দিকে চুয়াডাঙ্গা-৬ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের পরিচালক এসএম মনিরুজ্জামান শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, বিএসএফ’র গুলিতে যে রুহুল নিহত হয়েছে সে ভারতীয় নাগরিক। তার পিতার নাম কাশিম মণ্ডল। ভারতে স্থানীয় একটি বাড়িতে ডাকাতি করার সময় রাতে মালুয়াপাড়া বিএসএফ’র সাথে সংঘর্ষে সে নিহত হয়। পরবর্তীতে বিএসএফ’র সাথে যোগাযোগ করে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আরো জানা যায়, উল্লেখিত ভারতীয় নাগরিকের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত শেষে তার ভাই আজিবুল মণ্ডল ও রবিউল মণ্ডল এবং স্ত্রী আছিয়া বেগম, গ্রাম-বড়ইগাতী, পোস্ট-লক্ষ্মীপুর, থানা-চাপড়া, জেলা-নদীয়ার নিকট দাফনের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে।