চুয়াডাঙ্গায় চাঁদাবাজচক্রের উৎপাত বৃদ্ধি : ছড়াচ্ছে

বাঘা বাঘা সন্ত্রাসীদের পতন হয়েছে। এরপরও খুন গুমের হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। তবে ধরন বদলেছে, বদলেছে অস্ত্রও। আগে ছিলো আগ্নেয়াস্ত্রের ঝনঝনানি। এখন? বর্তমানে চাঁদাবাজচক্রের মূল অস্ত্র মোবাইলফোন তথা সেলফোন। ফোনে পিলে চমকানোর মতো হুমকিই মূলত ওদের মূল পুঁজি। আর মাঝে মাঝে বাড়ির আশপাশে বোমা, বোমা সাদৃশ্য বস্তুসহ চিরকুট লিখে জানান দেয়া। অবশ্য কখনো কখনো কিছু ককটলে যে ফাঁটানো হচ্ছে না তাও নয়।
সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন, মোবাইলফোনে চাঁদাবাজি রোধে পুলিশি তৎপরতা আশাব্যঞ্জক নয় কেন? প্রযুক্তির বদৌলতে ঝোড়ে-জঙ্গলে বসে যেমন চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীরা খুনের হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করতে পারছে, তেমনই প্রযুক্তি সহজেই শনাক্ত করে দেয় যে মোবাইলফোন দিয়ে চাঁদা দাবি করা হয়েছে সেই সেলফোনের অবস্থান, গতিবিধি। তাহলে পুলিশ কেন চাঁদাবাজচক্রকে ধরছে না? কারো কারো সাথে যোগসাজস? অভিযোগ বেশ পুরোনো। জবাবদিহিতার তেমন তাগিদ পরিলক্ষিত হয় না। ফলে ছিচকে চাঁদাবাজ গ্যাং শুধু বেপরোয়াই হয়ে উঠছে না, তাদের পরিধিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোনো কোনো এলাকায় বাড়ছে গর্জন। তারই আঁচ চুয়াডাঙ্গায়। গতকাল দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় প্রকাশিত শীর্ষ প্রতিবেদনে চুয়াডাঙ্গা শহর ও শহরতলীর যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তা চমকে ওঠার মতোই। দ্রুত প্রতিকার প্রত্যাশী এলাকাবাসী। একজন নিরস্ত্র পরিবারের কর্তার কাছে যখন কেউ ফোন করে ভীতিকর কোনো চরমপন্থি দলের কথা বলে ভীতিকর কণ্ঠে কন্যা অপহরণ, বোমা মেরে খুন-গুমসহ নানা হুমকি-ধামকি দেয়া হয়, তখন পুলিশ যদি মুখ ফেরায়, তা হলে সাধারণ মানুষের অন্যায়ের সাথে আপস ছাড়া উপায় থাকে না। ফুটে ওঠে অসহায়ত্ব। আমজনতার মাঝে দানা বাধে ক্ষোভ। অবশ্য অন্যায় যখন অসহনীয় হয়ে দাঁড়ায় তখন আমজনতাও ঘুরে দাঁড়ায়। পরিণাম নিয়ে ক’জনই ভাবে? সেদিকে যাওয়ার আগেই দায়িত্বশীলদের কর্তব্যপরায়ণ করে তোলার মতো বাস্তবমুখি পদক্ষেপ এনে দিতে পারে স্বস্তি।
এক সময় চাঁদাবাজচক্রের হুমকির শিকার অনেকেই থানায় নালিশ করতেন না, এখন? নালিশ করতে গেলেও তেমন সহযোগিতা মেলে না। অবস্থাদৃষ্টে জনপ্রিয় গানটি একটু বদলে বলতেই হয়, ‘দিন বদলের খেলাতে, মন বদলের মেলাতে সত্যিই চেনা জানা চিত্রগুলোও কেমন যেন বদলে গেছে।’ সময়ের স্রোতে বদলানোই যখন দস্তুর, তখন সমাজের মন্দটার বদলে ভালোটাই কাম্য। এ জন্য দরকার পুলিশের দায়িত্বশীলতা, পুলিশকে কর্তব্যপরায়ণ করার মতো বলিষ্ঠ নেতৃত্ব।