মেহেরপুর অফিস: সরকারি নির্দেশ অমান্য করে বাল্যবিয়ে দেয়ার অপরাধে কনের চাচি ও বরের দু চাচাকে জেল-জরিমানা করেছেন মেহেরপুর ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেহেরপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহীনুজ্জামান ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে বর ও কনের পিতা-মাতা আত্মগোপন করেন।
জানা গেছে, গত শুক্রবার মেহেরপুর সদর উপজেলার আমদহ গ্রামের প্রবাসী শাখাওয়াত হোসেনের কন্যা মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী চাঁদনী খাতুনের একই উপজেলার ভবনন্দপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে সেনা সদস্য মঞ্জুরুল ইসলামের (২৪) বিয়ের দিন ধার্য হয়। খবর পেয়ে মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের নির্দেশে মেহেরপুর সদর থানা পুলিশের এএসআই অজিত চক্রবর্তী ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিয়ে ভেঙে দেন এবং ১৮ বছর বয়সের আগে চাঁদনী খাতুনের বিয়ে দেয়া হবে না বলে চাঁদনীর পরিবারের নিকট থেকে মুচলেকা নেন। এর পরও গোপনে চাঁদনী খাতুন ও সেনা সদস্য মঞ্জুরুল ইসলামের বাল্যবিয়ে সম্পন্ন হয়।
খবর পেয়ে মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মো. শফিকুল ইসলামের নির্দেশে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহীনুজ্জামান পুলিশ ফোর্স নিয়ে গতকাল বিকেলে আমদহ কনের বাড়ি ও ভবনন্দপুর গ্রামে বরের বাড়িতে হানা দিয়ে কনের চাচি বিউটি খাতুন (৪৮) ও বরের দু চাচা নজরুল ইসলাম (৪২) ও সিরাজুল ইসলামকে (৪৬) আটক করে মেহেরপুর জেলা প্রশাসন চত্বরে নেন। পরে কনের চাচি বিউটি খাতুনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং বরের চাচা নজরুল ইসলাম ও সিরাজুল ইসলামকে ১৫ দিন করে জেল দেয়া হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহীনুজ্জামান জানান, মুচলেকা অমান্য করে বাল্যদিয়ে দেয়ায় ১৯২৯ সালের বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনের ৬ ধারায় তাদের ওই সাজা দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে কনের পিতা-মাতা এবং বরের পিতা-মাতা এলাকা থেকে আত্মগোপন করেছেন।